জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলাসহ অন্তত ১৪ মামলার আসামি সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজন (৪৫) কারাবন্দি অবস্থায় মারা গেছেন। রোববার সকালে ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।

সাইদুর রহমান সুজনের মৃত্যুর বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ মো.

ফারুক।

কারা মহাপরিদর্শক সৈয়দ মোতাহের হোসেন জানান, সাইদুর রহমান সুজন সূর্যমুখী ভবনের একটি কক্ষে আরও দুই বন্দির সঙ্গে ছিলেন। রোববার সকালে সুজন নাস্তাও করেছেন। এরপর একজনের হাজিরা থাকায় আদালতে যায় এবং আরেকজন ঘুমাচ্ছিলেন। এই সুযোগে সুজন নিজের ব্যবহৃত গামছা দিয়ে জানালার সঙ্গে গলায় ফাঁস দেন। পরে আমরা দ্রুততম সময়েই তাকে উদ্ধার করে কারা হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তাকে বাঁচানো যায়নি।

গত ২০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ঢাকার উত্তরা থেকে সুজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। সেদিন রাতেই তাকে সাভার থানায় হস্তান্তর করা হয়। বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সুজন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর সাভারের রাজপথে গুলি চালানোর একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সেই ভিডিওতে সাইদুর রহমান সুজনের হাতে থাকা পিস্তল দিয়ে গুলি করতে দেখা যায়। পটপরিবর্তনের পর তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে সাভার থানায় অন্তত ১৪টি মামলা করা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও বিচার চলতে থাকা সুজন তখন থেকে কারাবন্দি ছিলেন।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সেই আছিয়ার পরিবারকে গরু ও ঘর দিল জামায়াত

মাগুরায় যৌন নিপীড়নের শিকার হয়ে মারা যাওয়া আলোচিত শিশু আছিয়ার পরিবারকে দুটি গরু ও একটি গোয়ালঘর উপহার দেওয়া হয়েছে। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের পক্ষ থেকে আছিয়ার পরিবারকে এ উপহার দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামে আছিয়ার বাড়িতে উপস্থিত হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে উপহার হস্তান্তর করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এবং কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসাইন।

এ সময় জেলা জামায়াতের আমির এম বি বাকের, সাবেক আমির ও কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আব্দুল মতিনসহ স্থানীয় এবং জেলা কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

শিশু ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা 

অপারেশনের পর শিশুর মৃত্যু: তদন্ত কমিটি গঠন, থানায় মামলা

গত ১৫ মার্চ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান আছিয়ার বাড়িতে যান। তিনি শিশুটির মৃত্যুর ঘটনায় দ্রুত বিচার চান। সে সময় আছিয়ার পরিবারকে স্বাবলম্বী করতে একটি গোয়াল ঘর এবং দুটি গরু দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন জামায়াতের আমির। 

আট বয়সী আছিয়া মাগুরার নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয় বলে পরিবারের তরফ থেকে অভিযোগ ওঠে। গত ৬ মার্চ অচেতন অবস্থায় মাগুরার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। অবস্থার অবনতি হলে মাগুরা হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে শিশুটিকে নেওয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে থেকে সেদিন সন্ধ্যায় উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে ঢাকায় নেওয়া হয় এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করা হয়। দুই দিন পর ৮ মার্চ তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়। ১৩ মার্চ বৃহস্পতিবার সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় আছিয়ার।

ঢাকা/শাহীন/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ