ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) নতুন দুটি বিভাগ চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। থিওলজি অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদের অধীনে কম্পারেটিভ তাফসির এবং আস-সিরাহ আন-নববিয়্যাহ নামে এ দুটি নতুন বিভাগ চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
গত ২৬ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩০তম একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত ৩১ মে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্তটি চূড়ান্ত হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে থিওলজি অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড.
তিনি জানান, বিভাগগুলোর কার্যক্রম ভালোভাবে শুরু করতে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম চলছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কঠোর অবস্থানের বিকল্প নেই
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর আমরা একটি নতুন, ভালো বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম। সেই স্বপ্নের অংশ ছিল মানুষের চলাচলের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশের অধিকার। কিন্তু আজকের বাস্তবতায় এসে প্রশ্ন উঠছে, এই অধিকার কি রাস্তাঘাট বন্ধ করে দাবি আদায়ের?
সড়ক দখল করে কোনোভাবেই সমাবেশ করার সুযোগ থাকা উচিত নয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিশেষ করে পুলিশ—এই অনিয়ন্ত্রিত সমাবেশগুলোর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারেনি। সমাবেশ কোথায় হবে, কীভাবে হবে—সেই নির্দেশিকা বা শৃঙ্খলাটা গড়ে ওঠেনি। এর পেছনে দায়ী সরকারের সহনশীলতা (সরকার সহ্য করেছে)। সড়কে দাঁড়ালেই দাবি আদায় হয়, এমন ধারণাই বিশৃঙ্খলার সূচনা করেছে।
রাজনৈতিক দলগুলো প্রায়ই সড়ক বন্ধ করে সমাবেশ করছে। অনেক সময় হয়তো অনুমতি ছাড়াই করছে। এ ক্ষেত্রে সরকারের উচিত ছিল সবার জন্য সমান নীতিমালা করা। কোনো দলকে বাড়তি সুবিধা, আর কাউকে প্রতিহত করার চেষ্টা—এ ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ সমাবেশের শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
আরও পড়ুন৯০ দিনের ৩৬ দিনই রাস্তা আটকা ২০ মিনিট আগেএকটা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বলি। সম্প্রতি একটি রাজনৈতিক দলের সমাবেশে পুরো রাস্তা বন্ধ ছিল। সেগুনবাগিচায় সেদিন আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন এক নারী, সঙ্গে তাঁর ছোট সন্তান। তিনি অসহায়ের মতো বলছিলেন, ‘ক্ষমতার জন্য পলিটিক্যাল পার্টিগুলো আমাদের জিম্মি করছে।’ এই কথার ভেতরেই আসলে বহু মানুষের যন্ত্রণা লুকিয়ে আছে।
খুব সাধারণ দাবিতেও এখন সড়ক আটকে দেওয়া হচ্ছে। কারণ, সড়কে দাঁড়ালেই সরকার দাবি মেনেছে। তখন থেকেই একটা ভুল বার্তা চলে গেছে যে দাবি মানাতে হলে সড়ক বন্ধ করতে হবে। আবার সরকার বলেছিল, লিখিতভাবে জানালে দাবি বিবেচনা করা হবে। তবে বাস্তবে দেখা গেছে, লিখিত দাবি অনেক সময় গুরুত্বই পায়নি। এর অর্থ সরকারের পক্ষ থেকে দাবি আদায়ের কোনো নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া এখনো নির্ধারিত নয়। এই অনিশ্চয়তা পরিবেশকে আরও অনিয়ন্ত্রিত করে তুলছে।
অধিকার মানে এই নয় যে যেখানে খুশি সেখানে দাঁড়িয়ে সমাবেশ করা যাবে। সমাবেশ নির্দিষ্ট স্থানে হবে, রাস্তায় মানুষের চলাচলের ওপর হস্তক্ষেপ না করে। এ জন্য বিকল্প জায়গার প্রয়োজন আছে।
ঢাকায় নির্ধারিত কিছু জায়গা থাকলেও তা খুব সীমিত। তাই এলাকাভিত্তিক কিছু নতুন স্থান চিহ্নিত করা দরকার, যেমন খোলা প্রাঙ্গণ, মাঠ এবং মাইনর (অগুরুত্বপূর্ণ) রাস্তা, যেগুলো বন্ধ করলেও বড় প্রভাব পড়ে না। এসব জায়গা নির্ধারণে অবশ্যই একটা সমন্বয় থাকতে হবে। মূল শর্ত হলো, রাষ্ট্রকে না জানিয়ে, যেখানে খুশি, যখন খুশি রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়ার সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। এর জন্য সরকারের কঠোর অবস্থান ছাড়া বিকল্প নেই।
সমাবেশের অধিকার সংবিধান স্বীকৃত, কিন্তু সেটা যেন অন্যের অধিকার হরণ না করে। রাষ্ট্রের উচিত আইনের শাসনের নীতি অনুযায়ী একদিকে বিকল্প ব্যবস্থা তৈরি করা, অন্যদিকে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া।
আদিল মুহাম্মদ খান: সভাপতি, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি)