সুলভ মূল্যে হাওরে ধান কাটতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন তিনজন কম্বাইন্ড হারভেস্টার মালিক। যার কারণে আতঙ্কে আছেন বাকিরাও।
শনিবার গভীর রাতে ভাটি তাহিরপুর গ্রামের আতিকুর রহমান, সেনু মিয়া ও ইকরামুল হকের কম্বাইন্ড হারভেস্টারের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ কেটে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। যে কারণে রোববার সকালে তারা হাওরে ধান কাটতে পারেননি।
ভাটি তাহিরপুর গ্রামের কম্বাইন্ড হারভেস্টারের মালিক আতিকুর রহমান জানান, তিনি কম্বাইন্ড হারভেস্টার কেনার পর থেকেই প্রতি কিয়ার জমির ধান (৩০ শতকে এক কিয়ার) ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে কেটে দিতেন। এ বছরও আগের নির্ধারিত খরচেই নিয়ম অনুসারেই দূরত্বভেদে হাওরে ধান কাটার সিদ্ধান্ত ছিল। কম্বাইন্ড হারভেস্টারটি দুর্বৃত্তরা বিকল করে দেওয়ায় এটি সংস্কার ও মেরামতে তাঁর ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। যে কারণে রোববার দুপুর থেকে হাওরে ধান কাটতে শুরু করতে হয়েছে। 
শনির হাওরপারের ভাটি তাহিরপুর গ্রামের কৃষক জামাল মিয়া বলেন, তিনি তাঁর জমির ধান শনিবার আতিকুর রহমানের কম্বাইন্ড হারভেস্টার দিয়ে প্রতি কিয়ার ১ হাজার ৩০০ টাকায় কাটিয়েছেন। ঠাকুরহাটি গ্রামের কৃষক চয়ন পুরকায়স্থ জানান, তিনি আতিকুর রহমানের কম্বাইন্ড হারভেস্টার দিয়ে ৬ কিয়ার জমির ধান কেটেছেন। প্রতি কিয়ারে তিনি ১ হাজার ৩০০ টাকা ধরে কাটিয়েছেন।
কম্বাইন্ড হারভেস্টারের মালিক ইকরামুল হক জানান, শনিবার রাতে তাঁর কম্বাইন্ড হারভেস্টারের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ কে বা কারা খুলে নিয়ে গেছে, যা মেরামত করতে তাঁর ব্যয় হয়েছে ১৬ হাজার টাকা। এখনও ধান কাটা শুরু করেননি। তবে পাশের অন্যান্য জমিতে যে দরে ধান কাটা হচ্ছে, আমিও একই রেটে করব।
ভাটি তাহিরপুর গ্রামের আমিনুল ইসলাম জানান, হাওরে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হলে দৈনিক ৪০ থেকে ৫০ কিয়ার ধান কাটা যায়। শনিবার রাতে তাঁর কম্বাইন্ড হারভেস্টারটি দুর্বৃত্তরা বিকল করে দিয়েছে। তাই তিনি ধান কাটতে পারছেন না। হারভেস্টারটি মেরামত করতে হলে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হবে।
তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা  শরিফুল ইসলাম বলেন, সরকারিভাবে প্রতি কিয়ার কর্তনের জন্য ১৮ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। সে ক্ষেত্রে কৃষকদের কাছ থেকে বেশি নেওয়া যাবে না। তবে কেউ এর কমে কাটলে আপত্তি নেই।  ব্যবসায়ীদের মধ্যে একটি প্রতিযোগিতা থাকতেই পারে। সে ক্ষেত্রে একে অন্যের ক্ষতি করতে পারে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ধ নক ষ ত

এছাড়াও পড়ুন:

আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য

এশিয়া কাপে আজকের রাত যেন এক নাটকীয় অধ্যায়। ‘বি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে আবুধাবির মাঠে মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হওয়া এই লড়াই কেবল দুই দলের নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের ভাগ্যও। কোটি টাইগার সমর্থক তাই আজ তাকিয়ে থাকবে টিভি পর্দায়। কারণ, এই ম্যাচেই নির্ধারিত হবে, বাংলাদেশ কি সুপার ফোরে উড়াল দেবে, নাকি গ্রুপ পর্বেই শেষ হবে স্বপ্নযাত্রা।

গ্রুপের সমীকরণ এখন টানটান নাটকের মতো। তিন ম্যাচে পূর্ণ ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে শ্রীলঙ্কা। সমান ৪ পয়েন্ট থাকলেও রান রেটে পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের ঝুলিতে আছে ২ পয়েন্ট; এক জয় ও এক হারের ফল। হংকং অবশ্য তিন ম্যাচেই হেরে অনেক আগেই বিদায় নিয়েছে।

আরো পড়ুন:

আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

আরব আমিরাতকে ১৪৭ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান

এখন হিসাবটা এমন—
আফগানিস্তান হেরে গেলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই সুপার ফোরে।
আফগানিস্তান জিতলে সমীকরণ জটিল হবে। তখন শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের পয়েন্ট সমান ৪ হলেও নেট রান রেটে স্পষ্ট এগিয়ে থাকবে আফগানরা (২.১৫০)। শ্রীলঙ্কার রান রেট ১.৫৪৬, আর বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে -০.২৭০-তে।

অর্থাৎ আফগানিস্তান যদি জেতে, তবে বাংলাদেশকে তাকিয়ে থাকতে হবে এক অসম্ভব সমীকরণের দিকে। সেটা হলো- লঙ্কানদের অন্তত ৭০ রানের ব্যবধানে হারতে হবে এবং তা করতে হবে ৫০ বল হাতে রেখে। অন্যথায় রান রেটের খেলায় পিছিয়েই থাকতে হবে টাইগারদের। তবে বৃষ্টি যদি হানা দেয় কিংবা ম্যাচ কোনো কারণে পরিত্যক্ত হয়, তাহলে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা দু’দলই নিশ্চিতভাবেই চলে যাবে সুপার ফোরে।

ম্যাচকে ঘিরে দুই শিবিরেই চাপ-উত্তেজনার আবহ। আফগানিস্তানের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার গুলবাদিন নাইব মনে করেন, চাপটা আসলে শ্রীলঙ্কার ওপরই বেশি, “আমরা এসব টুর্নামেন্ট খেলতে অভ্যস্ত, আমাদের কোনো চাপ নেই। শ্রীলঙ্কা ভালো দল ঠিকই, তবে তারাও চাপে থাকবে। আমার মনে হয় দারুণ একটা ম্যাচ হবে।”

অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার অলরাউন্ডার দাসুন শানাকা বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “প্রতিটি ম্যাচই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। হ্যাঁ, বাংলাদেশের সমর্থকরা আমাদের জয়ের জন্য অপেক্ষা করছে। আমরাও জয়ের লক্ষ্যেই মাঠে নামব।”

হংকংয়ের বিপক্ষে জিতলেও শ্রীলঙ্কাকে ঘাম ঝরাতে হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা বলছে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়টা সহজ হবে না তাদের জন্যও। শেষ পর্যন্ত কারা হাসবে জয়ের হাসিতে, আর কোন সমীকরণে দাঁড়াবে বাংলাদেশের ভাগ্য; এই প্রশ্নের উত্তরই দেবে আজকের আবুধাবির রাত।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ