লা লিগায় আলভেসের বিপক্ষে ১০ জনের দল নিয়ে ১-০ গোলে জিতেছে রিয়াল মাদ্রিদ। ৩৪ মিনিটে বাঁ পায়ের দুর্দান্ত শটে গোল করেন এডওয়ার্ড কামাভিঙ্গা। ৩৮ মিনিটে বাজেভাবে ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন লস ব্লাঙ্কোস স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপ্পে। 

ম্যাচের শুরুতে বারবার ফাউলের শিকার হতে থাকেন ফ্রান্সম্যান। যে কারণে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে ইচ্ছাকৃত ফাউল করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যা প্রমাণ করা গেলে রিয়াল মাদ্রিদ তারকা দুই থেকে পাঁচ ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পেতে পারেন বলে দাবি করেছে সংবাদ মাধ্যম। 

সাবেক ফুটবলার ও ধারাভাষ্যকার ক্রেগ বার্লির দাবি, কিলিয়ান এমবাপ্পে ইগো থেকে ওই ফাউল করেছেন। সে নিজেকে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে মনে করে। অ্যান্তোনিও ব্লাঙ্কোর ভাগ্য ভালো যে, অ্যাম্বুলেন্সে উঠতে হয়নি। ভিডিওতে দেখে গেছে, ফাউল করার আগে পা তুলে ব্লাঙ্কোর গোড়ালি বরাবর ফাউল করেছেন এমবাপ্পে।  

পাঁচ ম্যাচের বড় নিষেধাজ্ঞা পেলে বার্সেলোনার বিপক্ষে ২৬ এপ্রিলের কোপা দেল রে’র ফাইনাল মিস করতে পারেন সাবেক পিএসজি তারকা। ১১ মে বার্সেলোনার বিপক্ষে লা লিগা ক্লাসিকোও খেলা হবে না তার। 

তবে সংবাদ মাধ্যম দিয়ারিও এএস দাবি করেছে, ওই ঘটনায় এমবাপ্পে আলাভেস ডিফেন্ডারের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। ম্যাচ শেষে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রিয়ালের সহকারী কোচ ডেভিড আনচেলত্তিও জানিয়েছেন, এমবাপ্পে তার ভুল স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। 

কার্লো আনচেলত্তির এই ছেলে ডেভিড আনচেলত্তি বলেন, ‘এমবাপ্পে সরি বলেছে। সে সংঘর্ষে জড়ানোর মতো ছেলে নয়। সে তার ভুল নিয়ে সতর্ক। এটা পরিষ্কার লাল কার্ড পাওয়ার মতো ট্যাকল ছিল। সেজন্য সে সাজাও পেয়েছে। তাকে প্রতিপক্ষ ছোট ছোট করে ফাউল করছিল, এটা তারই প্রতিক্রিয়া হতে পারে। আমি এই মন্তব্য দ্বারা ফাউলের সমর্থন করছি না।’ 

স্পেনের সংবাদ মাধ্যম কোপে দাবি করেছে- রেফারিও মনে করেন, এমবাপ্পে কোন প্রকার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ফাউল করেননি। বলের লড়াইয়ে গিয়ে ফাউল হয়ে গেছে। যে কারণে এমবাপ্পেকে বড় সাজা নাও দেওয়া হতে পারে। লাল কার্ডে এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা অবধারিত। এমবাপ্পেও এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় পার পেয়ে যেতে পারেন।  

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক ল য় ন এমব প প এমব প প কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’

ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।

হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।

আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’

গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’

আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ