যাত্রী সংখ্যায় ২০১৯ সালকে ছাড়াল বিমান পরিবহন খাত, করোনার পর এই প্রথম
Published: 16th, April 2025 GMT
অবশেষে মহামারির প্রভাব কাটিয়ে উঠেছে বিশ্বের বিমান পরিবহন খাত। ২০২৪ সালে বিমানে চলাচল করা যাত্রীর সংখ্যা ২০১৯ সালের স্তর অতিক্রম করেছে।
এয়ারপোর্ট কাউন্সিল ইন্টারন্যাশনাল (এসিআই) ওয়ার্ল্ডের প্রকাশিত প্রাথমিক তথ্যানুসারে, গত বছর প্রায় ৯৫০ কোটি যাত্রী উড়োজাহাজে ভ্রমণ করেছে। ২০১৯ সালের কোভিড-১৯ মহামারি সময়ের তুলনায় যা ৩ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। ২০২৩ সালের তুলনায় যা ৯ শতাংশ বেশি। খবর সিএনএন।
প্রতিবেদনে ২০২৪ সালের বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ত ১০ বিমানবন্দরের তথ্যও তুলে ধরা হয়েছে। সেই তালিকায় এবারও শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে হার্টসফিল্ড-জ্যাকসন আটলান্টা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য জর্জিয়ার রাজধানী আটলান্টায় অবস্থিত ডেলটা এয়ারলাইনস হাবটি ২৭ বছরের মধ্যে ২৬ বার শীর্ষস্থান দখল করেছে। গত বছরের মতো এবারও দ্বিতীয় স্থানে আছে আরব আমিরাতের দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। তৃতীয় স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাস ফোর্ট ওয়ার্থ।
চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে আছে যথাক্রমে জাপানের রাজধানী টোকিওর হানেদা ও যুক্তরাজ্যের লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর। যুক্তরাষ্ট্রের ডেনভার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আছে ষষ্ঠ স্থানে।
সপ্তম ও অষ্টম স্থানে আছে যথাক্রমে তুরস্কের ইস্তানবুল ও যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো ও’হেয়ার বিমানবন্দর। নবম স্থানে আছে ভারতের নয়াদিল্লি বিমানবন্দর। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উড়োজাহাজ বহরের সম্প্রসারণ, অবকাঠামোর উন্নয়ন ও বৈশ্বিক সংযোগ বৃদ্ধির কারণে ইস্তানবুল ও নয়াদিল্লি বিমানবন্দরের দ্রুত সম্প্রসারণ হচ্ছে।
বিমানবন্দরগুলোর প্রবৃদ্ধির বিষয়ে এসিআই ওয়ার্ল্ডের মহাপরিচালক জাস্টিন এরবাচি বলেন, ‘ভবিষ্যতে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হবে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে; ভারত, চীন, লাতিন আমেরিকা ও কিছুটা আফ্রিকায়। উন্নত দেশগুলোয় (উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপ) প্রবৃদ্ধির গতি কিছুটা কমবে। শিল্পটি এখনো অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা, উড়োজাহাজ কোম্পানিগুলোর উৎপাদন বিলম্বের মতো কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। বিশ্বব্যাপী উড়োজাহাজ চলাচল ২০৪৫ সালের মধ্যে দ্বিগুণ হবে বলে প্রত্যাশা এসিআই ওয়ার্ল্ডের।
নজরে পড়ার মতো অগ্রগতি হয়েছে ১০ম স্থানে থাকা চীনের সাংহাই পুডং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের। ২০২৩ সালে ২১তম স্থান থেকে ৪১ শতাংশ যাত্রী বৃদ্ধির মাধ্যমে একলাফে ১০ম স্থানে উঠে এসেছে এই বিমানবন্দর।
২০২৪ সালে বিমানের যাত্রী বাড়লেও এসিআই বলছে, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ভূরাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, বিমান কোম্পানিগুলোর উৎপাদনে বিলম্বসহ আরও কিছু কারণে এই খাত গত বছর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। চলতি বছর যেভাবে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়ছে, তাতে এবার কী পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, তা দেখার অপেক্ষায় আছে এই খাত।
করোনা মহামারির সময় মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে সবচেয়ে আক্রান্ত হয় বিমান চলাচল খাত। ২০২০ সালে এই খাতের ক্ষতি হয় ১৭৫ বিলিয়ন বা ১৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। এরপর ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে এই খাত। টিকাদান ও পরবর্তী পর্যায়ে কোভিড-১৯ আর বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে বিবেচিত না হওয়ায় বিমান চলাচল বেড়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এই খ ত
এছাড়াও পড়ুন:
রাশিয়ার প্রয়াত বিরোধী নেতা নাভালনির শরীরে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল: স্ত্রীর দাবি
রাশিয়ার প্রয়াত বিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়া বলেছেন, দুটি বিদেশি পরীক্ষাগারে তাঁর স্বামীর শরীর থেকে সংগৃহীত জৈবিক নমুনা পরীক্ষা করে প্রমাণ পাওয়া গেছে, তাঁর শরীরে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল।
রাশিয়ায় ভ্লাদিমির পুতিনবিরোধী নেতা নাভালনি ৪৭ বছর বয়সে ২০২৪ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি আর্কটিক সার্কেলে একটি কারাগারে আকস্মিকভাবে মারা যান।
নাভালনির স্ত্রী নাভালনায়া বারবার তাঁর স্বামীকে হত্যার জন্য পুতিন সরকারকে অভিযুক্ত করেছেন। অবশ্য ক্রেমলিন এই অভিযোগকে ‘আজগুবি’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, নাভালনির মৃত্যুর আগে পশ্চিমাদের সঙ্গে বন্দিবিনিময়ের অংশ হিসেবে তাঁকে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল।
নাভালনায়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন, যেখানে তিনি বলেছেন, ২০২৪ সালে নাভালনির শরীর থেকে গোপনে জৈবিক নমুনা বিদেশে পাচার করা হয়েছিল। দুটি পরীক্ষাগার সেই নমুনা পরীক্ষা করেছে। এতে প্রমাণ পাওয়া গেছে, নাভালনিকে হত্যা করা হয়েছিল।
নাভালনায়া বলেন, দুটি ভিন্ন দেশের পরীক্ষাগারগুলো একই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে, অ্যালেক্সিকে হত্যা করা হয়েছে। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, তাঁকে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল।
নাভালনায়া পরীক্ষাগারগুলোকে এই ‘অস্বস্তিকর সত্য’ সম্পর্কে তাদের বিস্তারিত ফলাফল প্রকাশের দাবি জানান। তবে নাভালনির শরীরে কী ধরনের বিষ পাওয়া গেছে, সেটা তিনি নির্দিষ্ট করে বলেননি।
নাভালনায়া বলেন, ‘এসব ফলাফল জনগুরুত্বপূর্ণ এবং অবশ্যই প্রকাশ করা উচিত। আমাদের সবার সত্যিটা জানার অধিকার আছে।’
নাভালনায়ার এই মন্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘আমি তাঁর এসব মন্তব্য সম্পর্কে কিছুই জানি না। এ বিষয়ে কিছু বলতেও পারব না।’
অ্যালেক্সি নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়া