সুনামগঞ্জে টানা কয়েক দিনের রোদের কারণে হাওরের কৃষকেরা ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে গতি পেয়েছেন। গতকাল শনিবার ও আজ রোববার দিনের শুরু থেকে রোদ থাকায় বৃষ্টির আশঙ্কা কিছুটা কেটেছে, যা স্বস্তি দিচ্ছে কৃষকদের।

এর আগে জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ১৫ থেকে ২১ এপ্রিল সুনামগঞ্জে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি এবং আগাম বন্যার শঙ্কার কথা জানিয়ে দ্রুত ধান কাটার নির্দেশ দেয়। সেই ঘোষণার পর হাওরের কৃষকদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়। অনেকে আতঙ্কে আধা পাকা ধানও কেটে ফেলেছেন।

তবে বাস্তবতা হলো, ঘোষণার পর থেকে এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৃষ্টি হয়নি। বরং গতকাল ও আজ সুনামগঞ্জে প্রচণ্ড রোদ পড়েছে, যা ধান কাটার জন্য উপযোগী পরিবেশ তৈরি করেছে। কৃষকেরা মাঠে ধান কাটা, মাড়াই ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

সুনামগঞ্জে চলতি মৌসুমে ২ লাখ ২৩ হাজার ৫০২ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে, যার লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ১৩ লাখ ৯৫ হাজার মেট্রিক টন। এর বাজারমূল্য আনুমানিক ৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত প্রায় ৪৯ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে।

বিশ্বম্ভরপুরের কৃষক আবদুল গণি জানান, তাঁর ২৬ বিঘার মধ্যে ১৪ বিঘার ধান কাটা শেষ হলেও বাকি জমির ধান পুরোপুরি পাকেনি। কৃষক ইসমাইল আলী বলেন, ‘ধান পাকছে না, কাটতে বলতেছে। আমরা সব বুঝি, তারা নিজের স্বার্থের জন্য কয়।’

‘হাওর বাঁচাও আন্দোলন’-এর ওবায়দুল হক বলেন, এখানে দুটি বিষয় আছে, একটা হলো হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ, অন্যটি হারভেস্টর ব্যবসা। বৃষ্টি হলে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, উজানের ঢল নামবে, তাই যত দ্রুত সম্ভব পাকা, আধা পাকা ধান কাটানোর চেষ্টায় পরিকল্পিতভাবে এই প্রচারণা চালানো হয়েছে। আরেকটি হচ্ছে, বৃষ্টি হলে জমিতে কিছু কাদাপানি জমে, এতে হারভেস্টর চালাতে সমস্যা হয়, তাই জমি শুকনা থাকতেই ধান কাটানোর ফন্দি আছে তাদেরও।

ওবায়দুল হক বলেন, ‘আমরা কৃষকদের তখন বার্তা দিয়েছি, বলেছি এসব প্রচারে আতঙ্কিত ও বিভ্রান্ত হয়ে কোনো অবস্থাতেই যেন কাঁচা ধান না কাটেন। তবুও কিছু কিছু কৃষক ভয়ে আধা পাকা ধান কেটেছেন। এটা এবার নতুন নয়, এর আগেও হয়েছে।’

হাওরের কৃষকেরা জানিয়েছেন, এবার এখন পর্যন্ত অন্য বছরের তুলনায় হাওরের পরিস্থিতি ও আবহাওয়া ভালো আছে। আর ১৫ দিন পাওয়া গেলে হাওরে সব ধান গোলায় তুলতে পারবেন তাঁরা। এখন হাওরের নিচু অংশে ধান কাটা চলছে। পরে কাটা হবে ওপরের অংশে। ওপরের অংশের ধান তুলনামূলক কম ঝুঁকিতে থাকে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, এবার সুনামগঞ্জে অকাল বন্যা ও পাহাড়ি ঢলের কবল থেকে বোরো ফসল রক্ষায় জেলার ৫০টি হাওরে ৬৮৭টি প্রকল্পে ৫৯৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সংস্কার ও নির্মাণ করা হয়েছে। এতে প্রাক্কলন ছিল ১২৭ কোটি টাকা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোস্তফা ইকবাল আজাদ বলেন, হাওরের পরিস্থিতি এখনো ভালো, কৃষকেরা নির্বিঘ্নে ধান কাটা, মাড়াই ও গোলায় তোলার কাজ করছেন। আগামী ৫ মে পর্যন্ত হাওরে ধান কাটা চলবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ন মগঞ জ হ ওর র

এছাড়াও পড়ুন:

শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত

নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।

দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।

ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্‌যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।

৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।

ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট

সম্পর্কিত নিবন্ধ