পেসার নায়ুচির লেন্থ বলে আত্মঘাতি শট খেলে স্লিপে ক্যাচ দিলেন সাদমান ইসলাম। বেনেট সামনে ঝাঁপিয়ে বল তালুবন্দি করলেন অতি সহজে।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টেস্টের নবম ওভার চলছিল। বলের উজ্জ্বলতা একটুও হারায়নি। উইকেট থেকে জিম্বাবুয়ের দুই পেসার তেমন কোনো সাহায্যও পাচ্ছিলেন না। হালকা সিমের মুভমেন্ট ছিল যেটা নতুন বলে স্বাভাবিকভাবেই থাকে। উইকেটের জন্য ব্যাটসম্যানদের ‘ভুলের’ অপেক্ষায় অতিথিরা।
সাদমান নিজের উইকেট ছুঁড়ে অতিথিদের মুখে ফুটিয়েছেন হাসি। সামদানের (১২) আউটে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। এক ওভার পর সঙ্গী মাহমুদুল হাসান জয়ও পথ হারালেন। একই পেসারের বলে ক্যাচ দিলেন উইকেটের পেছনে আলগা শটে। তার রান ১৪। ৩২ রানে বাংলাদেশের দুই ওপেনার সাজঘরে।
আরো পড়ুন:
ক্যাচ প্র্যাকটিস করে আউট শান্ত
নাহিদকে নিয়ে উইলিয়ামসের মন্তব্যে শান্তর ‘খোঁচা’
শুরুর লড়াইয়ে আবার ব্যাকফুটে বাংলাদেশ। ইনিংস মেরামতের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে মুমিনুল ও শান্ত ৬৬ রান যোগ করেন। কিন্তু বাংলাদেশের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ইনিংসের শুরুতে রান না পাওয়া। যেই ‘জট’ খুলছেই না।
টেস্ট ক্রিকেটে জুটির বিকল্প নেই। ভালো রান, বড় রান করতে হলে জুটি গড়তেই হবে। সাদা পোশাকে সঙ্গ দিয়ে ব্যাটিং করতে না পারলে, দলের হাল ধরতে না পারলে লড়াই করা যায় না। তাতে পিছিয়ে পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় অধিংকাশ সময়ই। একক নৈপূণ্যে এই ফরম্যাটে লড়াই অধরাই থাকে। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। ২৫ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরও টেস্ট সংস্কৃতি গড়ে তোলার কথা ফুটে উঠে।
অথচ মাঠে নেমেই শুরুতে বিপর্যয়ে পড়তে হয়। নতুন বলে উইকেট হারানো নিত্য নৈমত্তিক ঘটনা। এই টেস্টে মাঠে নামার আগে ৩১ ইনিংসে ওপেনিংয়ে কোনো সেঞ্চুরির জুটি ছিল না। সিলেটে প্রথম ইনিংসে সংখ্যাটি আরো বেড়েছে। ২০২২ সালে ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে নাজমুল হোসেন শান্ত ও জাকির হাসান ১২৪ রানের জুটি গড়েছিলেন। এরপর পাঁচটি জুটি ইনিংস উদ্বোধনে মাঠে নেমেছিল। কিন্তু কোনো জুটিই দলের রান তিন অঙ্কে নিয়ে যেতে পারেননি। ভাবনার সবচেয়ে বড় জায়গা হলো, ৩১ ইনিংসের ১১টিতেই দুই অঙ্কে যেতে পারেনি। ফিফটি রানের জুটি কেবল ২টি। নতুন বলে পেসারদের বিপক্ষে ওপেনারদের যে দূর্বলতা তা ফুটে উঠেছে এসব হতশ্রী পরিসংখ্যানেই।
অবশ্য ওপেনিং জুটি বাংলাদেশের জন্য সব সময়ই মাথা ব্যথার কারণ ছিল। ১৫১ টেস্ট খেলা বাংলাদেশের ওপেনিং জুটিতে সেঞ্চুরি এসেছে কেবল নয়টি। যেখানে দেশের সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল ছিলেন সাতটিতে। তার সঙ্গে ইমরুল কায়েস চারটিতে, সৌম্য, মাহমুদুল হাসান জয় ও জুনায়েদ সিদ্দিকী একটি করে জুটিতে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন। এছাড়া জাভেদ ওমর ও নাফিস ইকবাল এবং নাজমুল হোসেন শান্ত ও জাকির হাসান জুটি একটি করে সেঞ্চুরির জুটি পেয়েছেন।
টেস্ট সংস্কৃতি গড়ে তোলার যে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন অধিনায়ক শান্ত সেজন্য লড়াই শুরু হবে ইনিংসের শুরু থেকে। অথচ ওপেনাররা এখনো পায়ের নিচের মাটি শক্ত করতে পারছেন না। পারফরম্যান্সে নেই জোর। নিবেদনে প্রবল ঘাটতি। তাতে ভুগছে দলও। জাকির, সামদান, মাহমুদুল ঘুরিয়ে ফিরিয়ে টেস্টে ওপেনিং করছেন। আশানুরূপ পারফরম্যান্স নেই তাদের ব্যাটে।
মাহমুদুল ১৭ টেস্টে ৩২ ইনিংসে ৭২৮ রান করেছেন ২২.
সিলেট/ইয়াসিন/নাভিদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর ছ ন র ন কর উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
মানুষের ‘দ্বিতীয় ঘুম’এর যুগ সম্পর্কে কতটা জানেন
তেলের বাতি, গ্যাসের বাতি এবং বৈদ্যুতিক বাতি ক্রমে সভ্যতায় যোগ হয়েছে। এর আগে মানুষ প্রাকৃতিক আলোর সঙ্গে মানিয়ে জীবন যাপন করতো। প্রাক-শিল্প যুগের সমাজে ‘দ্বিতীয় ঘুম’-এর অভ্যাস ছিলো মানুষের।
দ্বিতীয় ঘুম বলতে ঐতিহাসিকভাবে প্রচলিত এমন এক ধরনের ঘুমের ধরণকে বোঝায়, যেখানে মানুষ রাতে একটানা আট ঘণ্টা না ঘুমিয়ে ঘুমকে দুটি ভাগে ভাগ করে নিত। একে দ্বি-পর্যায়ের ঘুম বা খণ্ডিত ঘুম বলা হয়। দেখা যেত যে— সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর মানুষজন বিছানায় যেত এবং প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত।
আরো পড়ুন:
রক্তস্বল্পতা দূর করতে এই শাক খেতে পারেন
টানা ৬ মাস রাতের খাবার দেরিতে খেলে যা হয়
প্রথম ঘুমের পর তারা প্রায় এক ঘণ্টা জেগে থাকত। এই সময়ে বাড়ির হালকা কাজ করা, প্রার্থনা করা, পড়াশোনা করা, প্রতিবেশীদের সাথে গল্প করা বা অন্তরঙ্গ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার মতো কাজগুলো করতো।
তারা আবার বিছানায় ফিরে যেত এবং ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত আরও ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত, যাকে ‘দ্বিতীয় ঘুম’ বা ‘ভোরের ঘুম’ বলা হত।
গত দুই শতাব্দী ধরে সামাজিক জীবনে আসা পরিবর্তনের কারণে মানুষের দ্বিতীয় ঘুমের অদৃশ্য হয়ে গেছে। যেসব কারণে মানুষ দ্বিতীয় ঘুমের অভ্যাস হারিয়ে ফেলেছে, তার একটি হলো ‘কৃত্রিম আলো ব্যবহার।’
১৭০০ এবং ১৮০০ এর দশকে, প্রথমে তেলের বাতি, তারপর গ্যাসের আলো এবং অবশেষে বৈদ্যুতিক আলো রাতকে আরও ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছে। ফলে রাতও মানুষের কাছে জাগ্রত সময়ে পরিণত হতে শুরু করে।
সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পরে ঘুমাতে যাওয়ার পরিবর্তে, মানুষ প্রদীপের আলোতে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেগে থাকতে শুরু করে। জৈবিকভাবে, রাতে উজ্জ্বল আলো আমাদের অভ্যন্তরীণ ঘড়িগুলোকে (আমাদের সার্কাডিয়ান ছন্দ) পরিবর্তন করে এবং কয়েক ঘণ্টা ঘুমের পরে আমাদের শরীরকে জাগ্রত করার প্রবণতা কমিয়ে দেয়।
ঘুমানোর আগে সাধারণ ‘ঘরের’ আলো মেলাটোনিনকে দমন করে এবং বিলম্বিত করে। শিল্প বিপ্লব কেবল মানুষের কাজ করার পদ্ধতিই নয় বরং তারা কীভাবে ঘুমায় তাও বদলে দিয়েছে।
২০১৭ সালে বিদ্যুৎবিহীন মাদাগাস্কান কৃষি সম্প্রদায়ের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে লোকেরা এখনও বেশিরভাগ সময় দুই ভাগে ঘুমায়, প্রায় মধ্যরাতে ঘুম থেকে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস অবলম্বনে
ঢাকা/লিপি