শিরোপা থেকে ১ জয়ের দূরত্বে লিভারপুল, ফিরেই নায়ক আলেকজান্ডার–আরনল্ড
Published: 20th, April 2025 GMT
লিভারপুল কবে চ্যাম্পিয়ন হবে, মাস দুয়েক ধরেই এই প্রশ্নটা ভাসছে ফুটবল দুনিয়ায়। আজ কিং পাওয়ার স্টেডিয়ামে স্বাগতিক লেস্টার সিটিকে ১-০ গোলে হারিয়ে সেই প্রশ্নের বিকল্প উত্তরের সংখ্যা আরও কমিয়ে এনেছে অল রেডরা। গোলের পর গোল মিস করা লিভারপুল আজ উদ্ধার পেয়েছে ৭৬ মিনিটে করা ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আরনল্ডের গোলে। এই জয়ে নিশ্চিত হয়েছে আর একটি ম্যাচ জিতলেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে লিভারপুল, ছুঁয়ে ফেলবে ইংল্যান্ডের শীর্ষ ফুটবল লিগে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ২০ শিরোপার রেকর্ড।
প্রিমিয়ার লিগে লিভারপুলের পরের ম্যাচটি আগামী রোববার টটেনহাম হটস্পারের বিপক্ষে। অত দিন অবশ্য অপেক্ষা নাও করতে হতে পারে আর্নে স্লটের দলকে। এই বুধবার রাতে নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী আর্সেনাল ক্রিস্টাল প্যালেসের কাছে হেরে গেলেই অ্যানফিল্ডে চ্যাম্পিয়ন হিসেবেই টটেনহামের বিপক্ষে খেলতে নামবে লিভারপুল।
লিভারপুলের সর্বশেষ জয়ে অবনমিত হয়ে গেছে সাবেক চ্যাম্পিয়ন লেস্টার। আগামী মৌসুমে ২০১৬ সালের চ্যাম্পিয়নরা খেলবে চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে। গত ডিসেম্বর থেকে কিং পাওয়ার স্টেডিয়ামে টানা ৯ ম্যাচ হারা লেস্টার এই কয় ম্যাচে একটি গোলও পায়নি ঘরের মাঠে। ৩৩তম ম্যাচে ২৩ হারের স্বাদ পাওয়া লেস্টারের পয়েন্ট ১৮। অবনমনে সাউদাম্পটনের সঙ্গী হলো লেস্টার। তৃতীয় দল হিসেবে অবনমিত হওয়া প্রায় নিশ্চিত ইপসউইচ টাউনের। ৩৩ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে ১৮ নম্বরে দলটির। সমান ম্যাচে ৩৬ পয়েন্ট ১৭ নম্বরে থাকা ওয়েস্ট হামের।
আরও পড়ুনজীবনের ঝুঁকি নিয়ে পালাতে হয়েছিল—দাবি হাথুরুসিংহের১ ঘণ্টা আগেলিভারপুল এগিয়ে যেতে পারত ম্যাচ শুরুর দুই মিনিটের মধ্যেই, মোহাম্মদ সালাহর শট পোস্টে লাগায় সেটি হয়নি। এরপর সালাহ ও দিয়োগো জোতা খুব কাছ থেকেও শুধু পোস্টে বল লাগাতে পারেন। শেষ পর্যন্ত লিভারপুলের উদ্ধারকর্তা হয়ে আসেন চোটে কাটিয়ে পাঁচ সপ্তাহ পর মাঠে নামা আলেকজান্ডার-আরনল্ড।
৭১ মিনিটে কনর ব্র্যাডলির বদলি হিসেবে মাঠে নামার ৫ মিনিটের মধ্যেই গোল বাঁ পায়ের শটে গোল পেয়ে যান লিভারপুল ডিফেন্ডার। গোলের পর বুনো উদ্যাপনে মেতে শার্ট খুলে হলুদ কার্ডও দেখেছেন আলেকজান্ডার-আরনল্ড।
আরও পড়ুন৫০ সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের প্রথম এনামুল হক৭ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘বাইরের’ অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখলেন স্থানীয় চালকেরা, ধস্তাধস্তির মধ্যেই নবজাতকের মৃত্যু
শরীয়তপুরে একটি রোগী বহন করা অ্যাম্বুলেন্স ঢাকা যাওয়ার পথে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন চালকের বিরুদ্ধে। এ কারণে চিকিৎসা না পেয়ে অ্যাম্বুলেন্সে থাকা এক নবজাতক মারা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে একটি ক্লিনিকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া নবজাতক ডামুড্যা উপজেলার কনেশ্বর এলাকার নূর হোসেন সরদার ও রুমা বেগম দম্পতির সন্তান। গতকাল দুপুরে শহরের একটি ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শিশুটির জন্ম হয়। জন্মের পরই শ্বাসকষ্টসহ শারীরিক জটিলতা দেখা দিলে চিকিৎসক তাকে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন।
শিশুর স্বজনেরা জানান, গতকাল রাত আটটার দিকে তাঁরা ঢাকাগামী একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে রওনা হন। কিন্তু পথিমধ্যে চৌরঙ্গী মোড়ে স্থানীয় অ্যাম্বুলেন্সচালক সবুজ দেওয়ান তাঁদের অ্যাম্বুলেন্স আটকে দেন। স্থানীয় অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার না করার কারণ দেখিয়ে তিনি চালককে মারধর করেন ও চাবি নিয়ে নেন। আরও কয়েকজন স্থানীয় চালক এ ঘটনায় অংশ নেন। দীর্ঘক্ষণ তর্কাতর্কি ও ধস্তাধস্তির মধ্যে চিকিৎসা না পেয়ে নবজাতক মারা যায়।
শিশুটির নানি সেফালী বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। অল্প খরচে ঢাকায় যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করি। কিন্তু স্থানীয় আরেক চালক বাধা দেয়। তারা দাবি করে, বেশি টাকা ভাড়া দিয়ে তাদের অ্যাম্বুলেন্সে যেতে হবে। আমার নাতি চিকিৎসা পায়নি, মারা গেছে। সন্তান জন্মের পর আমার মেয়ে অচেতন হয়ে আছে। তার জ্ঞান ফিরলে কীভাবে খবরটি দেব?’
ঢাকাগামী অ্যাম্বুলেন্সের চালক মোশারফ মিয়া বলেন, ‘আমি ঢাকা থেকে রোগী নিয়ে শরীয়তপুরে এসেছিলাম। ফেরার পথে হাসপাতালের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম। শিশুর স্বজনেরা আমার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করেন। রওনা হওয়ার পর সবুজ বাধা দেয়, আমাকে মারধর করে চাবি নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স আটকে দেয়।’
ঘটনার পর সবুজ দেওয়ান ও তাঁর সহযোগীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। তাঁর মুঠোফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি। শরীয়তপুর অ্যাম্বুলেন্স মালিক ও চালক সমিতির সভাপতি আবদুল হাই বলেন, ‘চৌরঙ্গীতে অ্যাম্বুলেন্স আটকে দেওয়ার কথা শুনে তাদের বলেছিলাম রোগীসহ ছেড়ে দিতে। কিন্তু তারা শোনেনি। এই কাজটি সঠিক হয়নি।’
শিশু বিশেষজ্ঞ খাজা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিকেলে যখন নবজাতককে দেখেছিলাম, তখনই বেশ কিছু সমস্যা ধরা পড়ে। ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলাম। অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অপরাধ।’
জানতে চাইলে সদরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জেনেছি। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’