খুলনায় আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিলের ঘটনায় খুলনা মহানগরের তিনটি থানায় আওয়ামী লীগ ও দলটির সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হয়েছে। আজ সোমবার পুলিশ বাদী হয়ে নগরের হরিণটানা, খালিশপুর ও আড়ংঘাটা থানায় মামলা তিনটি দায়ের করেছে। মামলায় নাশকতার অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলা তিনটিতে ৩৯ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

গতকাল রোববার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগপত্র প্রদানের প্রতিবাদ ও মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে খুলনার অন্তত চারটি স্থানে ঝটিকা মিছিল করে মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ। সকালে জিরো পয়েন্ট এলাকায় ঝটিকা মিছিল থেকে ওই কর্মসূচি শুরু হয়। পরে দুপুরের মধ্যে খালিশপুর ও আড়ংঘাটা থানা এলাকায় ঝটিকা মিছিল করেছে মহানগর আওয়ামী লীগ। জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপিও দেওয়ার দাবি করেছেন মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা।

আওয়ামী লীগের মিছিলের পর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে রোববার রাত ৯টার মধ্যে ২৫ জনকে আটক করে পুলিশ। আজ সকালের মধ্যে আরও ১৪ জনকে আটক করা হয়। তাঁদের সবাইকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে হরিণটানা থানার মামলায় ২২ জন, খালিশপুর থানার মামলায় ৭ জন ও আড়ংঘাটা থানার মামলায় ১০ জন। পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তার সবাই আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মী। তাঁদের সবাইকে আজ সোমবার দুপুরের দিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

খুলনা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) আহসান হাবিব বলেন, দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি ও নাশকতা করার উদ্দেশ্যে বিক্ষোভ মিছিল করে আওয়ামী লীগ। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে তিনটি থানায় নাশকতার মামলা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে দেখে মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন শকত আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

বিজিবিতে চাকরি পেলেন ফেলানীর ছোট ভাই

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে নিহত ফেলানী খাতুনের ছোট ভাই আরফান হোসেন (২১) বিজিবির সিপাহি পদে চাকরি পেয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লালমনিরহাটে ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম তার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। এ সময় আরফান হোসেনের বাবা মো. নুরুল ইসলামও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর

কক্সবাজারে ৮০ শতাংশ মাদক আসে সাগরপথে: বিজিবি 

এর আগে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৫ বিজিবি আয়োজিত সিপাহি নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হন আরফান হোসেন।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম বলেন, ‘‘বিজিবি সর্বদা ফেলানীর পরিবারের পাশে আছে। ফেলানীর ছোট ভাই বিজিবি নিয়োগ পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণকেন্দ্রে গিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ শুরু করবেন। আমরা আশা করি, প্রশিক্ষণ শেষ করে তিনি একজন যোগ্য বিজিবি সদস্য হিসেবে দেশমাতৃকার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবেন।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘সীমান্তে ফেলানী হত্যার মতো নৃশংস ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে আর না ঘটে, সে বিষয়ে বিজিবি সর্বদা সীমান্তে অত্যন্ত সতর্ক ও সচেষ্ট রয়েছে।’’

আরফান হোসেন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনটারী গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা নুর ইসলাম দিনমজুর ও মা জাহানারা বেগম গৃহিণী। পরিবারের অন্য দুই ভাইয়ের মধ্যে জাহান উদ্দিন স্নাতক পড়ছেন এবং আক্কাস আলী পড়ছেন এইচএসসিতে। দুই বোন মালেকা খাতুন ও কাজলী আক্তারের বিয়ে হয়েছে।

আরফান হোসেন বলেন, ‘‘ফেলানী হত্যার পর সারা দেশের মানুষ যেভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছিল, তখন থেকে ইচ্ছে ছিল; বিজিবিতে চাকরি করব। আজ সেই স্বপ্ন পূর্ণ হলো। আমি দেশের মানুষের জন্য কাজ করব।’’

ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, ‘‘ভারত থেকে ফেরার পথে আমার নাবালিকা মেয়েকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রাখে বিএসএফ। সেই দৃশ্য আজও ভুলতে পারিনি। তবে, দেশবাসী আর বিজিবি সব সময় আমাদের পাশে ছিল। আজ আমার ছেলে মেধা ও যোগ্যতায় বিজিবিতে সুযোগ পেয়েছে। এটা আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি।’’

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া পার হওয়ার সময় বিএসএফের গুলিতে নিহত হয় কিশোরী ফেলানী। তার নিথর দেহ কাঁটাতারের বেড়ায় দীর্ঘ সাড়ে চার ঘণ্টা ঝুলে ছিল। সেই ছবি ছড়িয়ে পড়লে দেশ-বিদেশে নিন্দার ঝড় উঠে।

ঢাকা/সৈকত/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ