রাবিতে একই খাতের নামে একাধিকবার অর্থ আদায় বন্ধের দাবি
Published: 22nd, April 2025 GMT
একই খাতের নামে একাধিকবার অর্থ আদায় বন্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে সোচ্চার স্টুডেন্টস নেটওয়ার্ক।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বেলা ১১টায় সংগঠনটির রাবি চ্যাপ্টারের পক্ষ থেকে এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
স্মারকলিপিতে তারা বলেন, মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আগামী ২৮ এপ্রিল হলের শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ খাবারের আয়োজন করেছে। নিঃসন্দেহে এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। তবে দুঃখজনক হলেও লক্ষ্যণীয়, এতে শুধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের এর বাইরে রাখা হয়েছে, যা স্পষ্টভাবে অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ।
আরো পড়ুন:
রাবি প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহিন, সম্পাদক মিশন
আ.
আমাদের স্পষ্ট দাবি, যেহেতু আবাসিক এবং অনাবাসিক উভয়ের কাছেই দিবস পালনের জন্য সমপরিমাণ অর্থ নেওয়া হয়, সেহেতু দিবস কেন্দ্রীক যেকোনো আয়োজনে আবাসিকের পাশাপাশি অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের সমানভাবে অগ্রাধিকার দিতে হবে। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যমান আবাসিক সংকট নিরসনে দ্রুত কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার পর থেকেই আবাসিকতার সুযোগ পায়।
তারা আরো বলেন, একজন শিক্ষার্থী কোনো বর্ষে ভর্তি হলে তার কাছ থেকে একই খাতের নামে একাধিকবার অর্থ সংগ্রহ করা হয়। যেমন- ছাত্র-ছাত্রী কল্যাণ তহবিল, সংসদ ফি, খেলাধুলা ফি ইত্যাদি। এটি অত্যন্ত অনভিপ্রেত এবং নিন্দনীয়। আমরা প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি, এই অনিয়ম দ্রুত পর্যালোচনা করে অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে এবং ইয়ার এডমিশনের অর্থের পরিমাণ যৌক্তিকভাবে কমিয়ে আনতে হবে।
সোচ্চার স্টুডেন্টস নেটওয়ার্ক রাবি চ্যাপ্টারের সভাপতি সালমান সাব্বির বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চলতি বছরের মধ্যেই নির্মাণাধীন দুইটি হলের কাজ সম্পন্ন করার উদ্যোগ নিয়েছে। এটি নিঃসন্দেহে একটি প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। তবে উদ্যোগের চেয়ে বাস্তবায়নই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া, প্রতি বর্ষে ভর্তি সময় একই খাতের নামে একাধিকবার যে অর্থ নেওয়া হচ্ছে, যা অনভিপ্রেত ও নিন্দনীয় কাজ। আমরা আজ এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে একটি স্মারকলিপি পেশ করেছি। আশা করি, তারা এ ব্যাপারে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেবেন।”
তবে উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, “আমি হলের বিষয়ে কথা বলতে তেমন পছন্দ করি না। হলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে প্রাধ্যক্ষ পরিষদ। এ বিষয়ে তাদের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। প্রাধ্যক্ষ পরিষদ থেকে আমাকে যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল, আমি প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাসাধ্য ভর্তুকি দেওয়ার চেষ্টা করেছি।”
তিনি বলেন, “এক প্রকার তলা কুড়িয়ে আমাকে দিতে হয়েছে বিধায় হয়তো বেশি দেওয়া সম্ভব হয়নি। কারণ হলে দেওয়ার মত এখন তেমন কোনো ফান্ড নাই। হল প্রাধ্যক্ষরা যদি এই টাকায় অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের খাবারের ব্যবস্থা করতে পারলে উনারা আয়োজন করুক; এটি তাদের সিদ্ধান্তের বিষয়।”
সোচ্চার-টর্চার ওয়াচডগ বাংলাদেশ একটি যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন। সংস্থাটি আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে যাত্রা শুরু করে। তাদের প্রধান উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নির্যাতন বন্ধ করা এবং শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অন ব স ক শ ক ষ র থ দ র একই খ ত র ন ম স ম রকল প র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
সুন্দরবনের মধুসহ ২৪ পণ্য পেল জিআই সনদ
মণিপুরি শাড়ি, গামছা, লিচু, আম, মধুসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ২৪টি পণ্যকে জিআই (ভৌগোলিক নির্দেশক) নিবন্ধন সনদ দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সভায় এই সনদ দেওয়া হয়। শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সভায় শিল্প সচিব ওবায়দুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচক ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। মেধাসম্পদ দিবসের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শিল্পী, অভিনেত্রী ও সংগীত পরিচালক আরমিন মুসা।
সভায় শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, দেশের প্রথম পণ্য হিসেবে জিআই স্বীকৃতি পেয়েছে জামদানি শাড়ি। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫৫টি পণ্য জিআই স্বীকৃতি পেল। জিআই পণ্য দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে লালন করে। এই পণ্যের বাজারজাতকারীদের ন্যায্য স্বীকৃতি এবং পারিশ্রমিক নিশ্চিত করতে হবে। ফলে স্থানীয় উদ্যোক্তা বা উৎপাদনকারীদের ক্ষমতায়ন হবে।
এ সময় তিনি জিআই পণ্যের তালিকা সমৃদ্ধ করার পর সেগুলো বাণিজ্যিকভাবে বিকশিত করার আহ্বান জানান।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক উৎসব গান। এ দেশের মানুষ গানের মাধ্যমে ভাব প্রকাশ করে, যা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে আছে। সংগীত নিয়ে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় বড় প্রকল্পের কাজ করছে। দেশের মানুষ কিছু দিনের মধ্যে তা দেখতে পাবে। সংগীতের কপিরাইট নিশ্চিত করতে হবে।
নিবন্ধন সনদপ্রাপ্ত ২৪টি ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হলো– নরসিংদীর লটকন, মধুপুরের আনারস, ভোলার মহিষের দুধের কাঁচা দই, মাগুরার হাজরাপুরী লিচু, সিরাজগঞ্জের গামছা, সিলেটের মণিপুরি শাড়ি, মিরপুরের কাতান শাড়ি, ঢাকাই ফুটি কার্পাস তুলা, কুমিল্লার খাদি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখী মিষ্টি, গোপালগঞ্জের ব্রোঞ্জের গয়না, সুন্দরবনের মধু, শেরপুরের ছানার পায়েস, সিরাজগঞ্জের লুঙ্গি, গাজীপুরের কাঁঠাল, কিশোরগঞ্জের রাতাবোরো ধান, অষ্টগ্রামের পনির, বরিশালের আমড়া, কুমারখালীর বেডশিট, দিনাজপুরের বেদানা লিচু, মুন্সীগঞ্জের পাতক্ষীর, নওগাঁর নাকফজলি আম, টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের জামুর্কির সন্দেশ এবং ঢাকাই ফুটিকার্পাস তুলার বীজ ও গাছ।
সভায় এসব জিআই সনদ বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড, সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক ও নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার নাকফজলি আমচাষি সমবায় সমিতির কাছে হস্তান্তর করা হয়।