ঢাকা শহরে পথচারী পারাপারের জন্য যতগুলো জেব্রা ক্রসিং আছে, পর্যায়ক্রমে সেগুলোতে সংকেতবাতি (সিগন্যাল লাইট) সিস্টেম চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিকের অতিরিক্ত কমিশনার মো. সরওয়ার।

বৃহস্পতিবার মিরপুর-২ নম্বরে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের বিপরীতে মিরপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সামনে অবস্থিত ঢাকা রোড ট্রাফিক সেফটি প্রজেক্টের (ডিআরএসপি) আওতায় নিরাপদ পথচারী পারাপারে পাইলট প্রকল্প পরিদর্শন শেষে মো.

সরওয়ার এ কথা বলেন। এই প্রকল্পের আওতায় মিরপুর কলেজ এলাকায় নিরাপদে পথচারী পারাপারের জন্য জেব্রা ক্রসিংয়ে পরীক্ষামূলকভাবে সিগন্যাল লাইট স্থাপন করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মো. সরওয়ার বলেছেন, ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সহযোগিতায় পরিচালিত এই পাইলট কার্যক্রম মিরপুরের ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল এবং মিরপুর কলেজের সামনে অবস্থিত পথচারী ক্রসিংয়ে ৮ মে পর্যন্ত প্রতিদিন (ছুটির দিন ব্যতীত) সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলবে। ঢাকা মহানগরের ট্রাফিক ব্যবস্থা অধিকতর নিরাপদ করতে জাইকা ও ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ একত্রে কাজ করছে। পরীক্ষামূলক সংকেতবাতি ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদে পথচারী পারাপার ও যানজট হ্রাসকল্পে এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। পরীক্ষামূলক এই প্রকল্পের সফলতা পাওয়া গেলে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ সব ক্রসিং আধুনিক সংকেতবাতির আওতায় আনা হবে, যার ফলে ট্রাফিক ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে ট্রাফিক পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার গৌতম কুমার বিশ্বাসসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও জাইকার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রকল প ন র পদ ড এমপ পথচ র

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ