নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার সীমান্ত এলাকায় ভারত থেকে আসা বুনো হাতির পাল ঢুকে পড়েছে। গতকাল সোমবার রাত নয়টার দিকে উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের জাগিরপাড়া এলাকায় ৩০ থেকে ৩৫টি হাতি প্রবেশ করে। হাতির পায়ের নিচে পড়ে কাঁচা–পাকা বোরো ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কৃষকেরা জানিয়েছেন, প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী হাতির তাণ্ডবে জাগিরপাড়া এলাকা ছাড়াও পাশের হাতিবেড়, চন্দ্রডিঙ্গা, বেতগড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা ঢাক–ঢোল পিটিয়ে আগুন জ্বালিয়ে লোকালয়ে হাতির প্রবেশ ঠেকান।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভারতের মেঘালয় রাজ্যের গারো পাহাড় থেকে কয়েক বছর ধরে আমন ও বোরো ধানের মৌসুমে খাদ্যের সন্ধানে বুনো হাতির পাল কলমাকান্দা ও দুর্গাপুর সীমান্ত এলাকায় ঢুকে পড়ে। এসব হাতি ঘরবাড়ি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করে। দুই বছর আগে হাতির আঘাতে কলমাকান্দার রংছাতির বেতগড়া এলাকায় কৃষক মো.

নূরুল ইসলাম এবং দুর্গাপুরের বিজয়পুরে বুনেশ রিছিলসহ তিনজন মারা যান। এ ছাড়া ওই সময়ের মধ্যে আহত হন অন্তত ১২ জন। গতকাল রাত নয়টার দিকে জাগিরপাড়ায় হাতির পাল প্রবেশ করে খেতের ধান নষ্ট করে ফেলে।

জাগিরপাড়া গ্রামের কৃষক আবুল মিয়া জানান, ‘৮টি বাচ্চাসহ প্রায় ৩৫টি হাতি হঠাৎ করে পাহাড় থেকে নেমে আমাদের খেতে ঢুকে ফসলে তাণ্ডব চালায়। এতে আশপাশের গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে আমরা সবাই মিলে বাঁশি, ঢাক–ঢোল, টর্চলাইট, লাঠিসোঁটা ও আগুনের মশাল জ্বেলে প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টার পর হাতির পালটিকে তাড়াতে সক্ষম হই।’

কৃষক তরিকুল মিয়া বলেন, ‘আমার প্রায় ২০০ শতক জমির ধান নষ্ট করে ফেলেছে। আমরা ফসল নিয়ে আতঙ্কে আছি। কারণ, দিনের বেলায় হাতি পাহাড়ের টিলায় অবস্থান করলেও রাতে দল বেঁধে লোকালয়ে নেমে এসে তাণ্ডব চালায়।’

ওই এলাকার কৃষক সুদীপ্ত হাজং বলেন, ‘গতকাল রাতের আঁধারে একদল ভারতীয় হাতি সীমান্ত অতিক্রম করে আমাদের এলাকায় নেমে আসে। মানুষ ও ঘরবাড়ির কোনো ক্ষতি না করলেও বোরোর ফসলি খেত নষ্ট করেছে। এসব হাতি একবার যে খেত লক্ষ্য করে, তা বিনষ্ট করবেই। হাতির আক্রমণ থেকে বাঁচতে আমরা সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

রংছাতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান খান পাঠান বলেন, সীমান্ত এলাকায় সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে হাতির আক্রমণ। হাতির তাণ্ডবে এই এলাকার মানুষ দিশেহারা। দিনের বেলায় টিলায় থাকলেও রাত হলেই লোকালয়ে নেমে আসে। সীমান্তে হাতি সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। তবে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কলম ক ন দ এল ক য় আতঙ ক

এছাড়াও পড়ুন:

তিন সাংবাদিকের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় ডিআরইউ’র উদ্বেগ

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সদস্য সাংবাদিক রফিকুল বাসার, মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন সংবাদকর্মীর চাকরিচ্যুতির ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে ডিআরইউ।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষে সভাপতি আবু সালেহ আকন ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল সংবাদকর্মীদের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় এ উদ্বেগ জানান।

উল্লেখ্য, চ্যানেল আই’র সাংবাদিক রফিকুল বাসার, এটিএন বাংলার মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও দীপ্ত টিভির সাংবাদিক মিজানুর রহমানকে মঙ্গলবার কোনো রকম পূর্ব নোটিশ ছাড়াই চাকরিচ্যুত করে কর্তৃপক্ষ।

ডিআরইউ নেতৃবৃন্দ তিন সাংবাদিককে চাকরিচ্যুতির কারণ ব্যাখ্যা করার দাবি জানিয়েছেন।

এএএম//

সম্পর্কিত নিবন্ধ