পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পর জেলাটি পরিদর্শনে গেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ সোমবার পরিদর্শনের প্রথম দিনে জেলার বহরমপুর এলাকা সফর করেন তিনি। এ সময় দাঙ্গার জন্য ‘কয়েকজন নেতাকে’ দায়ী করেন মুখ্যমন্ত্রী।

এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় পশ্চিমবঙ্গের তৃতীয় বৃহত্তম জেলা মুর্শিদাবাদে সম্প্রদায়িক দাঙ্গার ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত তিনজন নিহত হন। আগামীকাল মঙ্গলবার জেলার সুতি মহকুমায় যাবেন মমতা। সেখানেই দাঙ্গা হয়েছিল। সুতি মহকুমায় ব্লক উন্নয়ন কর্মকর্তার দপ্তরে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

আজ বহরমপুরে মমতা বলেন, ‘যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, যাঁদের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে, যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের পরিবারের সঙ্গে আমি দেখা করব। যাঁদের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে, সেখানেও যেতাম, কিন্তু বিজেপি দুজনকে সরিয়ে নিয়ে গেছে। বিজেপির বোঝা উচিত, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা যারা করে, তাদের আমরা অপরাধী বলে মনে করি এবং তাদের ধর্ম–বর্ণ–জাত হিসেবে আমরা বিচার করি না।’

বহরমপুরে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এই জেলায় আমি দেখছি বহিরাগত কিছু লোক এসে ধর্মের নামে বিধর্মী কথাবার্তা বলেছে…কয়েকজন ধর্মীয় নেতা সেজেছে, যারা পালে বাঘ না পড়লেও “বাঘ বাঘ” বলে চিৎকার করে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করে। তারাই কিন্তু দাঙ্গা ঘটিয়ে সবচেয়ে আগে পালিয়ে যায়। এরা জেলার শত্রু, বাংলার শত্রু। সবাই আমার মিত্র, কিন্তু দাঙ্গা যারা লাগায়, তাদের আমি মিত্র বলে মনে করি না।’

মমতা বলেন, ‘মাত্র দুটি ওয়ার্ডে গন্ডগোল হয়েছে। সেটাও কারা করিয়েছেন প্ল্যান করে, কী করে করিয়েছেন, কীভাবে করিয়েছেন, আমি একটা দিন ধরে অনেক ক্রসচেক (যাচাই–বাছাই) করিয়েছি। দুটো–তিনটে লোক আছে, যারা এই গন্ডগোল পাকাচ্ছে। তারা নাকি বিরাট বিরাট ধর্মনেতা, মানে বিধর্মী নেতা। অনেক বড় বড় কথা বলেন। আর আর্থিক উৎস বিজেপির নেতারাই বলে দেবেন।’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তিনি পুরো বিষয়টির ভেতরে ঢুকে খোঁজখবর নিচ্ছেন এবং তদন্ত করছেন। কীভাবে এপ্রিলের দাঙ্গা ঘটল বা ঘটানো হলো, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তাঁর হাতে এসেছে। কিন্তু এখনো কিছু তথ্য পাওয়া বাকি আছে। মমতা বলেন, ‘পুরো বিষয়টা আমার হাতে চলে এলে আমি তা দেশের সামনে তুলে ধরব।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বন দ য প ধ য কর য় ছ

এছাড়াও পড়ুন:

শুভ জন্মাষ্টমী আজ

অত্যাচারীর বিরুদ্ধে দুর্বলের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালন করতে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ—এই বিশ্বাস পোষণ করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। শ্রীকৃষ্ণের এই আবির্ভাব তিথি শুভ জন্মাষ্টমী হিসেবে উদ্‌যাপন করা হয়।

সনাতন ধর্মের মানুষ বিশ্বাস করেন, পাশবিক শক্তি যখন ন্যায়নীতি, সত্য ও সুন্দরকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল, তখন সেই শক্তিকে দমন করে মানবজাতির কল্যাণ এবং ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটেছিল। আজ শনিবার শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মতিথি।

জন্মাষ্টমী উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল শুক্রবার এক বাণীতে তিনি বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রাখতে বদ্ধপরিকর। সমাজে বিদ্যমান শৃঙ্খলা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে কেউ যেন নষ্ট করতে না পারে, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সমাজে সাম্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে শ্রীকৃষ্ণ আজীবন ন্যায়, মানবপ্রেম ও শান্তির বাণী প্রচার করেছেন। শ্রীকৃষ্ণ যেখানেই অন্যায়-অবিচার দেখেছেন, সেখানেই অপশক্তির হাত থেকে শুভশক্তিকে রক্ষার জন্য আবির্ভূত হয়েছেন।

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আবহমানকাল থেকে এ দেশের মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে নিজ নিজ ধর্ম পালন করছে। শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ ও শিক্ষা পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে ভরপুর বৈষম্যমুক্ত এক নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ ও মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি জানিয়েছে, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে আজ সকাল আটটায় দেশ-জাতির মঙ্গল কামনায় শ্রীশ্রী গীতাযজ্ঞ, বেলা তিনটায় ঐতিহাসিক কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী মিছিল ও রাতে শ্রীকৃষ্ণপূজা অনুষ্ঠিত হবে।

পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ ও মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি জানিয়েছে, রাজধানীর পলাশীর মোড়ে আজ বেলা তিনটায় কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী মিছিলের উদ্বোধন করবেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান, বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন ও নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মো. মঈন খান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ