কুমিল্লায় সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
Published: 6th, May 2025 GMT
কুমিল্লায় চাঁদা দাবি, সন্ত্রাসী হামলা, গুলিবর্ষণ, হত্যাচেষ্টাসহ বিভিন্ন অভিযোগে করা মামলায় সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ও কুমিল্লা-৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. তাজুল ইসলামসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত ৮-এর বিচারক ফারহানা সুলতানা এ আদেশ দেন। বিকেলে কুমিল্লা জেলা আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ও বাদীপক্ষের আইনজীবী কাইমুল হক বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
গত বছরের ২৭ আগস্ট ১৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞতানামা ৮০ থেকে ৯০ জনকে আসামি করে কুমিল্লার আদালতে মামলাটি করেন লাকসাম পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনির আহমেদ। মামলায় তাজুল ইসলামকে হুকুমের আসামি করা হয়েছিল।
আইনজীবী কাইমুল হক বলেন, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছিলেন। সম্প্রতি পুলিশ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ার কথা উল্লেখ করে। আজ মামলাটির শুনানির ধার্য তারিখ ছিল। পরে পুলিশের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আদালত তাজুল ইসলামসহ এজাহারভুক্ত ১৫ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
তাজুল ছাড়া পরোয়ানা জারি হওয়া উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন তাজুলের শ্যালক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহব্বত আলী, লাকসাম পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ উল্লাহ, ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খলিলুর রহমান, সাবেক পৌর মেয়র আবুল খায়ের, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নিজাম উদ্দিন, উপজেলার কান্দিরপাড় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ওমর ফারুক, মনোহরগঞ্জের বিপুলাসার ইউপির চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন, তাজুলের ভাতিজা ও মনোহরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, তাজুলের এপিএস হিসেবে পরিচিত মনোহরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কামাল হোসেন।
মামলার বাদী বিএনপি নেতা মনির আহমেদ বলেন, ২০২২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর মনোহরগঞ্জের বিপুলাসার এলাকায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহসহ নেতা-কর্মীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালায় তাজুলের বাহিনী। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা করেন। এর পর থেকে তাজুলের নির্দেশে সন্ত্রাসীরা তাঁকে নির্যাতন, মামলা-হামলা শুরু করেন। গত বছর আদালতে হাজিরা দিতে গেলে তাঁর ওপর আবার হামলা করেন। বিষয়টি তিনি আদালতকেও জানিয়েছেন। কোটা আন্দোলনের সময় ৩ আগস্ট সন্ত্রাসীরা তাঁর বাড়ির সামনে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। শেষ ১৮ আগস্ট মামলার তিন নম্বর আসামির নেতৃত্বে তাঁর বাড়িতে হামলা হয়। এ সময় গুলি করে তাঁকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। মনির আহমেদ বলেন, ‘তাজুল ইসলামের নির্দেশে আমার ওপর বারবার নির্যাতন চালানো হয়েছে। মামলাটির সঠিক তদন্ত হওয়ায় তদন্ত প্রতিবেদনে প্রকৃত সত্য উঠে এসেছে। আমি আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।’
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামসহ মামলার আসামিরা আত্মগোপনে আছেন। তাঁদের মুঠোফোনও বন্ধ। এ জন্য তাঁদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত জ ল ইসল মসহ ত জ ল ইসল ম পর য় ন আগস ট উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
সাত বছর আগে সাংবাদিক খাসোগি হত্যার পর প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন সৌদি যুবরাজ
যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। আগামীকাল মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে তিনি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকের লক্ষ্য তেল ও নিরাপত্তা খাতে দুদেশের বহু দশকের সহযোগিতার সম্পর্ক আরও গভীর করা। একই সঙ্গে বাণিজ্য, প্রযুক্তি এবং সম্ভাব্য পারমাণবিক জ্বালানি খাতে সম্পর্ক আরও বিস্তৃত করা।
২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলে সাংবাদিক এবং সৌদি রাজপরিবারের কট্টর সমালোচক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের পর এটাই যুবরাজ সালমানের প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর।
আরও পড়ুনসৌদি আরবের যুবরাজের সঙ্গে বৈঠক করলেন ট্রাম্প১৩ মে ২০২৫সৌদি আরবের গোয়েন্দারা ইস্তাম্বুলে সৌদি দূতাবাসের ভেতর খাসোগিকে হত্যা করেছিলেন বলে অভিযোগ। এ হত্যাকাণ্ড বিশ্বজুড়ে তুমুল আলোড়ন তুলেছিল। অনেকে অভিযোগ করেছিলেন, খাসোগি হত্যাকাণ্ডের পেছনে যুবরাজ সালমানের হাত রয়েছে।
পরে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিল, যুবরাজই খাসোগিকে অপহরণ বা হত্যার অনুমোদন দিয়েছিলেন।
যুবরাজ সালমান খাসোগিকে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে তিনি সৌদি আরব সরকারের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা হিসেবে এ হত্যার দায় স্বীকার করেছিলেন।
খাসোগি হত্যার পর সাত বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র এবং সবচেয়ে বেশি তেল উত্তোলনকারী দেশ সৌদি আরব নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক নতুন করে এগিয়ে নিতে চাইছে।
আরও পড়ুনসৌদি আরবের সঙ্গে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অস্ত্র বিক্রির চুক্তি’ যুক্তরাষ্ট্রের১৩ মে ২০২৫ট্রাম্প গত মে মাসে সৌদি আরবে তাঁর সফরের সময় দেওয়া ৬০ হাজার কোটি ডলারের সৌদি বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতির সুযোগ কাজে লাগাতে চাইছেন।
মে মাসের ওই সফরে ট্রাম্প সৌদি আরবে মানবাধিকার–সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা স্পষ্টভাবে এড়িয়ে গিয়েছিলেন। এবারও তিনি একই পথে হাঁটবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে যুবরাজ মোহাম্মদ আঞ্চলিক অস্থিরতার মধ্যে নিজ দেশের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চাইছেন। একই সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি (এআই) এবং বেসামরিক খাতে একটি পারমাণবিক প্রকল্প চুক্তির পথে অগ্রসর হতে চাইছেন।
আরও পড়ুনখাসোগি হত্যা সবচেয়ে জঘন্য ধামাচাপার ঘটনা: ট্রাম্প২৪ অক্টোবর ২০১৮যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব দীর্ঘদিন ধরেই এমন একটি সম্পর্ক বজায় রেখেছে, যেখানে সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তাদের পছন্দমতো দামে তেল বিক্রি করবে এবং যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবকে নিরাপত্তা দেবে।
আরও পড়ুনখাসোগিকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে: সৌদি আরব২৬ অক্টোবর ২০১৮