কুমিল্লায় চাঁদা দাবি, সন্ত্রাসী হামলা, গুলিবর্ষণ, হত্যাচেষ্টাসহ বিভিন্ন অভিযোগে করা মামলায় সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ও কুমিল্লা-৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. তাজুল ইসলামসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত ৮-এর বিচারক ফারহানা সুলতানা এ আদেশ দেন। বিকেলে কুমিল্লা জেলা আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ও বাদীপক্ষের আইনজীবী কাইমুল হক বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

গত বছরের ২৭ আগস্ট ১৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞতানামা ৮০ থেকে ৯০ জনকে আসামি করে কুমিল্লার আদালতে মামলাটি করেন লাকসাম পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনির আহমেদ। মামলায় তাজুল ইসলামকে হুকুমের আসামি করা হয়েছিল।

আইনজীবী কাইমুল হক বলেন, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছিলেন। সম্প্রতি পুলিশ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ার কথা উল্লেখ করে। আজ মামলাটির শুনানির ধার্য তারিখ ছিল। পরে পুলিশের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আদালত তাজুল ইসলামসহ এজাহারভুক্ত ১৫ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

তাজুল ছাড়া পরোয়ানা জারি হওয়া উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন তাজুলের শ্যালক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহব্বত আলী, লাকসাম পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ উল্লাহ, ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খলিলুর রহমান, সাবেক পৌর মেয়র আবুল খায়ের, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নিজাম উদ্দিন, উপজেলার কান্দিরপাড় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ওমর ফারুক, মনোহরগঞ্জের বিপুলাসার ইউপির চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন, তাজুলের ভাতিজা ও মনোহরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, তাজুলের এপিএস হিসেবে পরিচিত মনোহরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কামাল হোসেন।

মামলার বাদী বিএনপি নেতা মনির আহমেদ বলেন, ২০২২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর মনোহরগঞ্জের বিপুলাসার এলাকায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহসহ নেতা-কর্মীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালায় তাজুলের বাহিনী। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা করেন। এর পর থেকে তাজুলের নির্দেশে সন্ত্রাসীরা তাঁকে নির্যাতন, মামলা-হামলা শুরু করেন। গত বছর আদালতে হাজিরা দিতে গেলে তাঁর ওপর আবার হামলা করেন। বিষয়টি তিনি আদালতকেও জানিয়েছেন। কোটা আন্দোলনের সময় ৩ আগস্ট সন্ত্রাসীরা তাঁর বাড়ির সামনে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। শেষ ১৮ আগস্ট মামলার তিন নম্বর আসামির নেতৃত্বে তাঁর বাড়িতে হামলা হয়। এ সময় গুলি করে তাঁকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। মনির আহমেদ বলেন, ‘তাজুল ইসলামের নির্দেশে আমার ওপর বারবার নির্যাতন চালানো হয়েছে। মামলাটির সঠিক তদন্ত হওয়ায় তদন্ত প্রতিবেদনে প্রকৃত সত্য উঠে এসেছে। আমি আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।’

৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামসহ মামলার আসামিরা আত্মগোপনে আছেন। তাঁদের মুঠোফোনও বন্ধ। এ জন্য তাঁদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত জ ল ইসল মসহ ত জ ল ইসল ম পর য় ন আগস ট উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

কুমিল্লায় সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

কুমিল্লায় চাঁদা দাবি, সন্ত্রাসী হামলা, গুলিবর্ষণ, হত্যাচেষ্টাসহ বিভিন্ন অভিযোগে করা মামলায় সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ও কুমিল্লা-৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. তাজুল ইসলামসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত ৮-এর বিচারক ফারহানা সুলতানা এ আদেশ দেন। বিকেলে কুমিল্লা জেলা আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ও বাদীপক্ষের আইনজীবী কাইমুল হক বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

গত বছরের ২৭ আগস্ট ১৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞতানামা ৮০ থেকে ৯০ জনকে আসামি করে কুমিল্লার আদালতে মামলাটি করেন লাকসাম পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনির আহমেদ। মামলায় তাজুল ইসলামকে হুকুমের আসামি করা হয়েছিল।

আইনজীবী কাইমুল হক বলেন, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছিলেন। সম্প্রতি পুলিশ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ার কথা উল্লেখ করে। আজ মামলাটির শুনানির ধার্য তারিখ ছিল। পরে পুলিশের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আদালত তাজুল ইসলামসহ এজাহারভুক্ত ১৫ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

তাজুল ছাড়া পরোয়ানা জারি হওয়া উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন তাজুলের শ্যালক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহব্বত আলী, লাকসাম পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ উল্লাহ, ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খলিলুর রহমান, সাবেক পৌর মেয়র আবুল খায়ের, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নিজাম উদ্দিন, উপজেলার কান্দিরপাড় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ওমর ফারুক, মনোহরগঞ্জের বিপুলাসার ইউপির চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন, তাজুলের ভাতিজা ও মনোহরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, তাজুলের এপিএস হিসেবে পরিচিত মনোহরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কামাল হোসেন।

মামলার বাদী বিএনপি নেতা মনির আহমেদ বলেন, ২০২২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর মনোহরগঞ্জের বিপুলাসার এলাকায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহসহ নেতা-কর্মীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালায় তাজুলের বাহিনী। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা করেন। এর পর থেকে তাজুলের নির্দেশে সন্ত্রাসীরা তাঁকে নির্যাতন, মামলা-হামলা শুরু করেন। গত বছর আদালতে হাজিরা দিতে গেলে তাঁর ওপর আবার হামলা করেন। বিষয়টি তিনি আদালতকেও জানিয়েছেন। কোটা আন্দোলনের সময় ৩ আগস্ট সন্ত্রাসীরা তাঁর বাড়ির সামনে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। শেষ ১৮ আগস্ট মামলার তিন নম্বর আসামির নেতৃত্বে তাঁর বাড়িতে হামলা হয়। এ সময় গুলি করে তাঁকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। মনির আহমেদ বলেন, ‘তাজুল ইসলামের নির্দেশে আমার ওপর বারবার নির্যাতন চালানো হয়েছে। মামলাটির সঠিক তদন্ত হওয়ায় তদন্ত প্রতিবেদনে প্রকৃত সত্য উঠে এসেছে। আমি আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।’

৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামসহ মামলার আসামিরা আত্মগোপনে আছেন। তাঁদের মুঠোফোনও বন্ধ। এ জন্য তাঁদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ