মাইক্রোবাসে রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছিলেন স্বজনেরা, ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত ৩
Published: 7th, May 2025 GMT
মেহেরপুরের গাংনীতে ট্রাক ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার শুকুরকান্দি এলাকায় ওই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয়েছেন আরও চারজন।
হতাহত ব্যক্তিরা মাইক্রোবাসের আরোহী। তাঁরা রোগী নিয়ে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। নিহত তিনজন হলেন মাইক্রোবাসের চালক গাংনী উপজেলার পশ্চিম মালসাদহ গ্রামের জামাল উদ্দীন, গাংনীর গাড়াডোব গ্রামের শাহীন হোসেন ও তাঁর ফুফু লাল বুড়ি।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আলতাফ হোসেন (৪৮), তাঁর স্ত্রী উলফা খাতুন (৩৫) এবং গোলাপী খাতুন (৩৫) ও ফজিলা খাতুন (৬৫) কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বানি ইসরাইল এসব হতাহতের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজ বুধবার সকালে বলেন, মরদেহগুলো কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। দুর্ঘটনার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শাহীন হোসেনের দাদি ফজিলা খাতুন অসুস্থ ছিলেন। গতকাল রাতে মাইক্রোবাসে করে তাঁকে নিয়ে পরিবারের লোকজন কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন। রাত ১০টার দিকে গাংনী উপজেলার শুকুরকান্দি গ্রামে সরু পাকা সড়ক হয়ে মাইক্রোবাসটি কুষ্টিয়া-মেহেরপুর সড়কে ওঠে। এ সময় একটি ট্রাকের সঙ্গে মাইক্রোবাসের সংঘর্ষ হয়। এতে মাইক্রোবাসচালকসহ ছয়জন যাত্রী গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
হাসপাতালে পৌঁছানোর পর শাহীনের ফুফু লাল বুড়িকে (৪৫) মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে মাইক্রোবাসচালক শাহীন দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। মুমূর্ষু অবস্থায় শাহীনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে আজ ভোর পাঁচটার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘হারানো দিন’ থেকে ‘আম্মাজান’—শবনমের পূর্ণতার যাত্রা
মাত্র ১৫ বছর বয়সে অভিনয় শুরু শবনমের। বাংলাদেশ ও পাকিস্তান মিলিয়ে টানা চার দশকের অভিনয়জীবন তাঁর। ২৬ বছর ধরে অভিনয়ে নেই তিনি। এরপরও চলচ্চিত্রের বিভিন্ন আড্ডায় প্রাসঙ্গিক। আজ তাঁর জন্মদিন। শবনমকে নিয়ে লিখেছেন মনজুর কাদের
‘হারানো দিন’ সিনেমা দিয়েই শবনম সাড়া ফেলেন। এ সিনেমার ‘আমি রূপনগরের রাজকন্যা রূপের জাদু এনেছি, ইরান-তুরান পার হয়ে আজ তোমার দেশে এসেছি’ গানটি আজও যেন দর্শকের মুখে মুখে। গানটিতে পর্দায় ঠোঁট মিলিয়েছিলেন শবনম। অভিষেক সিনেমাই সুপারহিট। এরপর শুধুই এগিয়ে যাওয়া। মুস্তাফিজ পরিচালিত সিনেমাটি ১৯৬১ সালে মুক্তি পায়।
ষাট থেকে নব্বই দশক পর্যন্ত বাংলাদেশ আর পাকিস্তান মিলিয়ে প্রায় ১৮৫টি সিনেমায় অভিনয় করেন শবনম। তিনিই একমাত্র অভিনেত্রী, যিনি পাকিস্তানি সিনেমার সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘নিগার অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করেন মোট ১৬ বার। তাঁর এ রেকর্ড কেউ ভাঙতে পারেনি। এক বছর আগে পাকিস্তান সরকার দেশটির তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার সিতারা-ই-ইমতিয়াজ দেন শবনমকে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ও পাকিস্তান মিলিয়ে বহু সম্মাননায় সমৃদ্ধ হয় তাঁর অর্জনের ঝুলি।
বরেণ্য অভিনয়শিল্পী শবনমের আসল নাম ঝর্ণা বসাক। ১৯৪৬ সালের ১৭ আগস্ট ঢাকার নবাবপুরে জন্ম। পরিচালক এহতেশামের ‘চান্দা’ সিনেমায় ১৯৬২ সালে অভিনয় করেন তিনি। এই নির্মাতা ‘হারানো দিন’ সিনেমায় তাঁকে শবনম নামটি দেন। ১৯৬৮ সালে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের করাচিতে স্থায়ীভাবে বাস করতে থাকেন শবনম।
সত্তর দশকের শুরুতে শবনম পাকিস্তানের ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়িকা হিসেবে নিজের স্থান পাকাপোক্ত করেন। ১৯৮৮ সালে শবনম ঢাকা ও লাহোরের সিনেমায় একসঙ্গে অভিনয় করতে থাকেন। নব্বই দশকের শেষভাগে ঢাকায় এসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। সর্বশেষ তিনি অভিনয় করেন ‘আম্মাজান’ সিনেমায়। এ সিনেমায় নাম ভূমিকায় অভিনয় করে সব বয়সী দর্শকের কাছে ‘আম্মাজান’ হিসেবে নতুন করে পরিচিতি পান।
শবনম বলেন, ‘ভাগ্য আমার এতটাই ভালো, আমার অভিনীত প্রথম ও শেষ সিনেমা ছিল আমার ক্যারিয়ারের সেরা ও হিট সিনেমা।’
শবনম