ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে বেশ কিছু সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে পাকিস্তান থেকে ‘ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র’ নিক্ষেপ করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় বলছে, পাকিস্তানের ছোড়া এসব ‘ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র’ নিষ্ক্রিয় করেছে তারা। খবর বিবিসির

গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার পর ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম দিয়ে পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মীরের বিভিন্ন স্থাপনায় এই হামলা চালায় ভারত। ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও গুলিবর্ষণে নিহত হন ৩১ জন। এতে আহত হয়েছেন আরও ৫৭ জন। অন্যদিকে ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতেই নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে (এলওসি) পাকিস্তানি সেনারা গোলাবর্ষণ করেছে। এতে ১৫ ভারতীয় নাগরিক নিহত হয়েছেন।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তান ৭ ও ৮ মে রাতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের অনেকগুলো সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করতে চায়। এসব ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের সব কটিই ইন্টিগ্রেটেড কাউন্টার ইউএএস গ্রিড এবং এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম (আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা) নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, কাশ্মীরের অবন্তিপুরা, শ্রীনগর, জম্মু, পাঠানকোট, অমৃতসর, কাপুরথালা, জলান্ধর, লুধিয়ানা, আদমপুর, ভাতিন্ডা, চণ্ডীগড়, নাল, ফালোদি, উত্তরলাই, ভুজসহ ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে সামরিক বাহিনীর অনেকগুলো স্থাপনা লক্ষ্য করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল পাকিস্তান। সেগুলোর ধ্বংসাবশেষ এখন সংগ্রহ করা হচ্ছে।

এদিকে ভারতের হামলার পর পাকিস্তানের পক্ষ থেকে পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করা হয়েছে। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র জানান, এর মধ্যে তিনটি ফ্রান্সের তৈরি রাফাল, একটি রাশিয়ার তৈরি সু-৩০ ও অন্যটি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান। সু-৩০ ও মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান সোভিয়েত আমলে তৈরি।

পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, সশস্ত্র বাহিনী এখন পর্যন্ত ২৫টি ড্রোন ধ্বংস করেছে এবং বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের ধ্বংসাবশেষ সংগ্রহ করা হচ্ছে। আইএসপিআর মুখপাত্র বলেন, ভারতীয় ড্রোনগুলো পাকিস্তানের লাহোর, গুজরানওয়ালা, চকওয়াল, অ্যাটক, রাওয়ালপিন্ডি, বাহাওয়ালপুর, মিয়ানওয়ালি, ছোড় এবং করাচির দিকে পাঠানো হয়েছিল।

গত ২২ এপ্রিল ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানির পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। এখন তা পাল্টাপাল্টি হামলায় রূপ নিয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: লক ষ য

এছাড়াও পড়ুন:

নদীভাঙন রোধে পাটুরিয়ায় ৩ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ

মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরি ও লঞ্চঘাট এবং আশপাশে এলাকা নদীভাঙন থেকে রক্ষা করার দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছে এলাকাবাসী। এ সময় তারা বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে।

রবিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে তারা পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় এ সব কর্মসূচি পালন করেন।

আন্দোলনকারী আজিবার রহমান জানান, পদ্মা নদীতে প্রবল স্রোতের কারণে দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে পাটুরিয়া ফেরি, লঞ্চঘাট, ঘাটসংলগ্ন ধুতরাবাড়ী ও তেগুরি গ্রামে নদীভাঙন শুরু হয়েছে। গ্রাম দুটিতে কয়েকটি বসতবাড়ি এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে চলে গেছে। এরই মধ্যে লঞ্চঘাট নদীতে বিলীন হয়েছে। নদীভাঙনে ফেরিঘাটও মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। 

আরো পড়ুন:

নেত্রকোনায় বিকাশকর্মী হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি

রংপুরে শ্বশুর-জামাই হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে মানববন্ধন

তিনি আরো জানান, উপজেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তাদের ভাঙনের বিষয়টি অবহিত করা হয়। তবে ভাঙনরোধে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এর প্রেক্ষিতে আজ রবিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে পাটুরিয়া ঘাটসংলগ্ন শহীদ রফিক চত্বরে উথলী-পাটুরিয়া সড়কে তিন ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে এলাকাবাসী।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পাটুরিয়া ৫ নম্বর ফেরিঘাট থেকে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল বের করে। বেলা ১২টার দিকে মিছিলটি পাটুরিয়া ঘাটের অদূরে শহীদ রফিক চত্বর এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে উথলী-পাটুরিয়া সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। বিভিন্ন যানবাহন আটকা পড়ে যাত্রী ও পরিবহন-শ্রমিকেরা ভোগান্তিতে পড়ে। খবর পেয়ে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাবাসীকে সড়ক থেকে সরে যেতে অনুরোধ করে। তবে আন্দোলনকারীরা অবরোধ কর্মসূচি পালন করতে থাকে। প্রায় তিন ঘণ্টা পর বেলা ৩টার দিকে সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরোধ তুলে নেয়ার অনুরোধ করলে তারা সড়ক থেকে সরে যায়। 

অবরোধ চলাকালে নদীভাঙন প্রতিকারের দাবিতে ভুক্তভোগী বেশ কয়েকজন এলাকাবাসী বক্তব্য দেন। তাদের মধ্যে ছিলেন স্থানীয় ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন খান (পান্নু), ব্যবসায়ী নূর ইসলাম, স্থানীয় আরুয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য তাপস খান, স্থানীয় বাসিন্দা কবির হোসেন, উত্তম পাল, আরিফ হোসেন ও রানা শিকদার।

বক্তারা বলেন, ‘‘দেশের গুরুত্বপূর্ণ পাটুরিয়া ফেরিঘাট নদীভাঙনে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ইতিমধ্যে ঘাট এলাকা ও আশপাশের কয়েকটি গ্রামে অর্ধশতাধিক বসতবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। জীবনের শেষ আশ্রয়স্থল হারিয়ে অনেকে পথে বসেছে। অথচ ভাঙনরোধে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের জানালেও তারা কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না।’’ 

নদীভাঙন প্রতিরোধে বক্তারা দাসকান্দি থেকে নয়াকান্দি এলাকা পর্যন্ত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মানিকগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান জানান, ঘাট সংলগ্ন দুই কিলোমিটার এলাকা বিআইডব্লিউটিএর আওতাধীন। এরপরও সরেজমিন পরিদর্শন করে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পাটুরিয়া ঘাট ও আশপাশে নদীভাঙনরোধে ব্যবস্থা নিতে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে সিদ্ধান্ত নেয়ার পর ভাঙনরোধে কাজ শুরু করা হবে। তবে ইতোমধ্যে পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় ভাঙনরোধে বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে।

ঢাকা/চন্দন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ