বন্দর উপজেলা বিএনপি সভাপতির মামলা বাণিজ্যের অডিও রেকর্ড ফাঁস
Published: 8th, May 2025 GMT
বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণের বিরুদ্ধে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবির একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরালের ঘটনায় বনাদরে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৮ মে) সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই অডিওটি ভাইরাল হয়।
অডিওতে শোনা গেছে, বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম (ভূইয়া) হিরণকে বলতে শোনা যায়, তোমরা কি আমারে পাগল মনে করছো, নাকি আমি ছাগল, নাকি কচুরী? যেদিকেই ভাটা যায় সেদিকেই তোমরা আমাকে পাগলের লাগান বেচা কিনা করবা? তোমারে আমি আজ সকালে ১ লাখ টাকা নিয়ে আসার কথা বলছি।
কিন্তু তুমি আসলা না, বললা তোমার কাছে টাকা নাই। আমার কিন্তু মাথা গরম হইলে তোর বাবারে বেড় কইরা টাকা নিমু। তোর কাছ থেকে আর টাকা নিতাম না। তুই আমারে কেন বলছিস ১ লাখ টাকা দিবি? তুই সকালে বেশি কথা না বইলা টাকা নিয়া আয়। না হইলে তোর গাড়ি আমার কাছে বন্ধক রাখ। আমার বেশি কথা বলতে ইচ্ছা করতাছে না। তুই সকালে সুন্দর মতো টাকা নিয়া আয়।
পরে তোর বাবার থেকে বেড় কইরা পরে টাকা নিমু। তুই ম্যানেজ কইরা ১ লাখ নিয়া আয়। তোর হিসাব শেষ পরে তোর বাবার থেকে আমি টাকা নিমু।' পরে হিরণের কাছ ফোন নিয়ে আরেকজনকে বলেন, তুই কালকে ১ লাখ টাকা নিয়া আয়। বাকিটা ভাইয়ে দেখতাছে। তোরে তো আল্লাহ কম দেয় নাই। সকাল ৮টা বা ৯টার দিকে টাকা রেডি রাখিস আমি আইসা নিয়া যামুনে।
এভাবেই অডিও রেকর্ডিংয়ে বন্দর উপজেলার ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ড মেম্বার সফুরউদ্দিনের ছেলেকে হুঙ্কার ও ভয়ভীতি দেখিয়ে লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। সফুরউদ্দিন মেম্বার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র হত্যার আসামি। তিনি দীর্ঘদিন ধরে জেল হাজতে রয়েছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আওয়ামীলীগ নেতা সফুরউদ্দিনের পরিবারের কাছ থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে। এবং আসামিকে জামিনে বের করে আনবে।
এছাড়াও হিরন মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়া, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ব্যবসা ও ঘর বাড়িতে আগুন দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া, উপজেলার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ইট-ভাটা নিয়ন্ত্রণ ।
মদনপুর বাস স্ট্যান্ড, ফুটপাত, বাস কাউন্টার, গার্মেন্টসের ঝুট, বিভিন্ন সমবায় সমিতি, রাস্তাসহ বিভিন্ন টেন্ডার, জমি দখলসহ বহু অভিযোগ ইতিমধ্যে তার বিরুদ্ধে থাকলে ও মহানগর বিএনপির তার বিরুদ্ধে দলীয় কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষুদ্ধ বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীরা।
তবে টাকা চাওয়ার অডিও রেকর্ডটির বিষয়ে বন্দর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম হিরণ জানান, আমি কিসের টাকা চাইছি, আমি কোন টাকা চাইনি।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ উপজ ল ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
যশোরে ৪ আইনজীবীকে বহিষ্কার
যশোরে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চার আইনজীবীকে জেলা আইনজীবী সমিতি থেকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম.এ. গফুর।
অভিযুক্ত আইনজীবীরা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবীর হোসেন জনি, রফিকুল ইসলাম এবং তরফদার আব্দুল মুকিত।
জেলা আইনজীবী সমিতি সূত্র জানায়, ওই চার আইনজীবীর মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক এক এনজিওর ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ করেন। ওই টাকা ফেরত দিতে তিনি অঙ্গীকার করে ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। কিন্তু পরবর্তীতে ওই চেক ডিজ অনার হয় এবং একই সাথে তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এ ঘটনায় মক্কেল আইনজীবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ দেন।
অন্যদিকে, সৈয়দ কবীর হোসেন জনি একটি জমি ক্রয় করেন। কিন্তু ওই জমির মালিককে পূর্ণাঙ্গ টাকা না দিয়ে তালবাহানা করেন। শেষমেষ আট লাখ টাকা না দেওয়ায় জমির মালিক আইনজীবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ দেন।
এছাড়া, রফিকুল ইসলাম নিজে আইনজীবী হয়েও আরেক আইনজীবী নুরুল ইসলামকে নির্বাহী আদালতে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনায় নুরুল ইসলাম অভিযোগ দেন। অন্যদিকে, তরফদার আব্দুল মুকিত এক মক্কেলের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কাজ করেননি। এছাড়া তিনি ওই মক্কেলের কাগজপত্র আটকে রেখে জিম্মি করে রাখেন। বাধ্য হয়ে তিনি মুকিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন সমিতিতে।
এসব অভিযোগ জেলা আইনজীবী সমিতি পৃথকভাবে তদন্ত করে। একই সাথে চার আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম.এ. গফুর।
তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার লিখিতভাবে তাদেরকে নোটিশ দিয়ে অবগত করা হবে।”
ঢাকা/রিটন/এস