‘মব সন্ত্রাস’ নিয়ে বিবৃতি ঢাবির ৭১ শিক্ষকের
Published: 10th, July 2025 GMT
‘গত কয়েক মাসে সারাদেশে মব সন্ত্রাস আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে’ দাবি করে প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১ জন শিক্ষক। গতকাল বুধবার ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক’ নামে বিবৃতিটি পাঠানো হয়। তাদের অনেকেই আওয়ামী লীগপন্থি নীল দলের সঙ্গে যুক্ত।
এটি সমন্বয় করেন নীল দলের যুগ্ম আহ্বায়ক শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক রফিক শাহরিয়ার, নীল দলের সদস্য ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক বাহাউদ্দীন, সাবেক সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক আবদুল মুহিত, ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক ফিরোজ আহমেদ, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম মাহবুব হাসান প্রমুখ।
এ বিষয়ে অধ্যাপক রফিক শাহরিয়ার সমকালকে বলেন, ‘প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ নামে আমাদের একটি গ্রুপ আছে। কিছুদিন আগে শিক্ষকরা যখন বিপদে পড়েন, আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করি, তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করি। আমরা গ্রুপে নানা বিষয়ে আলোচনা করি। যাদের নাম উল্লেখ আছে, তাদের প্রত্যেকের সম্মতি নিয়ে বিবৃতিটি দিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, তারা নীল দলের পক্ষ থেকে বিবৃতি দেননি। সাধারণ শিক্ষক সমাজের ব্যানারে এটি দিয়েছেন।
এদিকে বিবৃতিতে নাম থাকা নীল দলের সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছার সমকালকে বলেন, ‘দলের তো (নীল দল) এখন অস্তিত্ব নেই। তবুও কয়েকজন উদ্যোগ নিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে। আমি সম্মতি দিয়েছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের তো দায় রয়েছে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, বিগত কয়েক মাস ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে মব সন্ত্রাসের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে। এতে শুধু মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতিই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। মুক্তবুদ্ধি চর্চার সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনের এসব ঘটনায় তারা খুবই উদ্বিগ্ন, ক্ষুব্ধ ও বেদনাহত। তারা বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও বাস্তবে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দৃশ্যমান নয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন ল দল র
এছাড়াও পড়ুন:
অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ
দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।
এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।
শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।
সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।
হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫