প্রতিরক্ষা সহযোগিতাবিষয়ক যৌথ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত
Published: 9th, May 2025 GMT
ঢাকা সেনানিবাসে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের (এএফডি) সার্বিক তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতাবিষয়ক প্রথম যৌথ কমিটির তিন দিনব্যাপী সভা বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে। এ সভা দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সামরিক সম্পর্ক জোরদার ও পারস্পরিক প্রতিরক্ষা লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হবে। বৃহস্পতিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সভায় সৌদি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন মেজর জেনারেল হামেদ রাফি আল-আমরি এবং বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন এএফডির প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান। বৈঠকে দুই দেশের প্রতিনিধিদল ভ্রাতৃত্ব, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহযোগিতার চেতনায় আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন এবং ভবিষ্যৎ কার্যক্রমের রূপরেখা চূড়ান্ত করেন।
সৌদি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে থাকা মেজর জেনারেল হামেদ রাফি আল-আমরি সমাপনী বক্তব্যে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী তথা বাংলাদেশের জনগণকে উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। মুসলিম ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ বাংলাদেশ ও সৌদি আরব ভবিষ্যতেও সামরিকসহ সব ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেন।
সমাপনী বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে থাকা লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান এই বৈঠককে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে অভিহিত করেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষ থেকে সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ এবং যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান আল সৌদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি উভয় দেশের পারস্পরিক শ্রদ্ধা, ভ্রাতৃত্ব ও শান্তির অঙ্গীকার তুলে ধরেন এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। উভয় দেশের জনগণের মঙ্গল ও সমৃদ্ধি কামনা এবং ভবিষ্যতে সৌদি প্রতিনিধিদলকে পুনরায় বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে তিনি তাঁর বক্তব্য শেষ করেন।
শেষে বাংলাদেশ-সৌদি আরব প্রতিরক্ষা সহযোগিতাবিষয়ক যৌথ কমিটির দ্বিতীয় সভা ২০২৬ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ছাড়া উভয় দেশের প্রতিনিধিরা একটি অফিশিয়াল ফটোসেশনে অংশ নেন। সৌদি আরবের প্রতিনিধিদলের সম্মানে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের উদ্যোগে সন্ধ্যায় নৈশভোজের আয়োজন করা হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সশস ত র ব হ ন সহয গ ত
এছাড়াও পড়ুন:
আড়াইহাজারে মামলা তুলে নিতে হামলা, প্রাণনাশের হুমকি
আড়াইহাজারে মামলা তুলে নিতে বাদীর পরিবারের উপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা করা প্রাণনাশের হুমকি প্রদানের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আহত জোহর মিয়ার ভাই হায়াদুজ্জামান বাদী হয়ে গত ২২ জুন রাতে ২৮ জনের নাম উল্লেখ করে আড়াইহাজার থানায় একটি মামলা (যার নং-২৮) দায়ের করেন। এর আগে, গত ১৯ জুন রাতে উপজেলার কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের খালিয়ারচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্তরা হলেন, জহির মোল্লা (৪৫), ইসমাইল (৩৫), নুর ইসলাম (২২), রাফি হাসান (২০), সালাউদ্দিন, জামাল হোসেন (৪০), খাইরুদ্দিন (৪৫), আলামিন (২৬), ইয়ামিন (২২), নুজুর (৫৫), দলু (৪৮), বিল্লাল (৩৫), আরিফ (২২), মজি, স্বপন (৫০), কালাই (৪৫), আওলাদ (২২), অহিদ (৫২), জুনায়েদ (৩৩), আউয়াল (৫২), নাগর (৫৭), জনি (৩৩)।
অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, অভিযুক্তরা স্থানীয় এলাকার সন্ত্রাস, ত্রাস সৃষ্টিকারী, দাঁঙ্গাবাজ এবং অত্যন্ত গোয়ার প্রকৃতির লোক বটে। তারা আইন অমান্যকারী হয়ে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদী করে এলাকার জনসাধারণে ভীতি সঞ্চার করে আসছে।
অভিযুক্তরা সন্ত্রাসী টাইপের লোক হয়ে বিভিন্ন সময় চাঁদাবাজী করে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে থাকা মামলা উক্ত মামলা উঠিয়ে নিতে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে আসছে।
গত ১৯জুন রাতে বিবাদীগণরা সন্ত্রাসী কায়দায় দেশীয় লাঠিসোটা, লোহার রড, জিআই পাইপ, হকিস্টিক, ধারালো অস্ত্র, দা, ছোরা, রাম দা, চাইনিজ কুড়ালে সজ্জিত হয়ে তিনটি বসত ঘর কুপিয়ে ও ভাংচুর করে এবং বাহিরে থাকা বিভিন্ন স্যানেটারী লাইনসহ পানি ট্যাঙ্ক ভাংচুর করে প্রায় ২ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করেন।
এসময় তার ভাই ও ভাবিরা বসতঘর থেকে বেরিয়ে প্রতিহত করার চেষ্টা করলে ২৫নং বিবাদীর হুকুমে ০১নং বিবাদীর হাতে থাকা ধারালো রাম দা দ্বারা হত্যার উদ্দেশ্যে আমার সেজো ভাই জোহর মিয়া (৫০) এর মাথায় কোপ মেরে মাঝ বরারর খুলিতে গুরুতরভাবে কাটা রক্তাক্ত জখম করেন।
২নং বিবাদী থেকে ৭নং বিবাদীগণের হাতে থাকা লাঠিসোটা, লোহার রড, জিআই পাইপ, হকিষ্টিক মারপিট করে নীলাফুলা জখম করে। তার ভাইকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসলে ৮নং থেকে ১২নং বিবাদীগণের হাতে থাকা লাঠি ও হকিষ্টিক দ্বারা এলোপাতারি মারপিট করে ভাবির শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা জখম করে এবং শরীরের পড়িহিত জামা-কাপড় টেনেছিড়ে শ্লীলতাহানি করে এবং ১৩নং বিবাদী ভাবির গলায় থাকা একটি স্বর্নের চেইন ছিনিয়ে নিয়ে নেয়।
বিবাদীগণ এমন মারমুখী অবস্থায় হামলা করাতে বাড়ির অন্যান্য লোকজন আতঙ্কে ও ভয়ে নিজ প্রাণ রক্ষার্থে বাড়ী থেকে পালিয়ে চলে গেলে অপর বিবাদীগণ ১নং ও ৫নং বিবাদীদ্বয়ের হুকুমে তার ৩ ভাইয়ের বসতঘরে প্রবেশ করে বসত ঘরের সমস্ত মালামাল ভাংচুর করে ক্ষতিসাধনসহ ১২ লাখ টাকা ও একই স্থানে থাকা ৫ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার ২নং, ৬নং ও ৭নং বিবাদীগন লুট করে নেয়।
এসময় বিবাদীগন বাড়ীঘরে তান্ডব চালিয়ে তার ভগ্নিপতি হাজী কামাল হোসেনের বাড়িতে গিয়ে হামলা চালিয়ে মারপিটসহ বাড়ীঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে ৪নং ও ৭নং বিবাদীদ্বয় ভগ্নিপতি কামালকে মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খালিয়ারচর গ্রাম মুলত আওয়ামী লীগ অধ্যুষিত এলাকা। এই গ্রামে দীর্ঘদিন যাবত বিএনপির নেতা হিসাবে পরিচিত কবির হোসেন, পিয়ার আলী, আমজাদ হোসেন, ইদ্রিস আলী, আব্দুল আজিজ তারা একটি গ্রুপ।
অপর গ্রুপে আছেন কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি ফকির জহির। সম্প্রতি বিগত ২ মাস আগে থেকে গ্রামে বিএনপি দুটি ভাগে ভাগ হয়।
একটি গ্রুপ যুবদলের জহির এলাকার আওয়ামী লীগ নিয়ে। বিএনপির অন্য আরেকটি গ্রুপ কবির হোসেন ও অন্যান্যদের গ্রামে কোনঠাসা করে রাখা হচ্ছে।
গত ২৫ এপ্রিল বিএনপির পার্টি অফিস ভাঙা ও গুরুতর জগম ও লুটপাটের কারণে জহির ও তার ভাতিজাসহ খালিয়ারচরের আওয়ামী লীগের অনেকের বিরুদ্ধে আড়াইহাজার থানায় দুটি মামলা হয়েছিল (মামলা নং-১৩ ও ১৪)।
কিন্তু তখন পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। বরং খালিয়ারচরের গ্রামের আওয়ামী লীগ সংঘটিত হয়ে বিএনপিকে এলাকা থেকে বিতাড়িত করে রাখছে।
পূর্ব শত্রুতার জের ধরে গত ১৯ জুন কোন কারণ ছাড়াই জহির তার আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনীর লোকজনদের সঙ্গে নিয়ে প্রথমে আমজাদ হোসেনের পিতা হাজী কামাল হোসেনকে এলোপাথারি মারধর করে আহত করে বাড়িতে হামলা করে বাড়ি ঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে।
পরবর্তীতে, কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পিয়ার আলীর বাড়িতে হামলা করে তার বড় ভাই জোহরকে এলোপাথারি মারধর ও কুপিয়ে রক্তাক্ত যখম করে পরবর্তীতে আসপাশের লোকজন জর হয়ে তাকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী একটি সরকারি মেডিকেলে ভর্তি করেন।
বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসারত আছেন এবং তাদের বসত বাড়িতে ৪টি ঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে।
৫ আগস্ট সংঘটিত হওয়ার পর থেকে এখনো অব্দি এমন অসংখ্য ঘটনা ঘটিয়েছে জহির ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। এলাকাবাসীর কাছে একটি আতংকের নাম হয়ে উঠেছে ফকির জহির। কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন এর খালিয়ারচর গ্রামের মানুষ এখন আতংকে থাকে প্রতি নিয়ত, চুরি ডাকাতি য্নে খালিয়ারচরের মানুষের পিছুই ছাড়ে না।
জানা গেছে এই সমস্ত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড জহির ফকির নিজে পরিচালনা করে থাকেন। খালিয়ারচর গ্রামটা জেন অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে।