১৬ বছর পর তেঁতুলিয়ায় বিএনপির সম্মেলন, সভাপতি শাহাদৎ, সম্পাদক রেজাউল
Published: 10th, May 2025 GMT
প্রায় ১৬ বছর পর পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা বিএনপির সম্মেলন হয়েছে। এতে সভাপতি পদে শাহাদৎ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক পদে রেজাউল করিম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলা শহরের তেঁতুলিয়া অডিটরিয়ামে কাম কমিউনিটি সেন্টার চত্বরে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এর দ্বিতীয় অধিবেশনে কমিটির নাম ঘোষণা করেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির পল্লি উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক ও পঞ্চগড় জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ফরহাদ হোসেন।
সম্মেলনে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আবু সাঈদ মিয়া ও আবু বক্কর সিদ্দিক (কাবুল) নির্বাচিত হয়েছেন। চার সদস্যের এ কমিটিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে।
সম্মেলনে নির্বাচনের জন্য সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের দুটি পদের বিপরীতে মোট চারজন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে জমা দেন। তবে এই চার পদের বিপরীতে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় ডেলিগেট, কাউন্সিলরদের উপস্থিতিতে তাঁদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়।
গতকাল বিকেলে তেঁতুলিয়া অডিটরিয়ামে কাম কমিউনিটি সেন্টার চত্বরে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। সেখানে জাতীয় সংগীত ও দলীয় সংগীত পরিবেশনের সঙ্গে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এর আগে তেঁতুলিয়া উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন থেকে নেতা-কর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে অডিটরিয়াম চত্বরে জড়ো হন।
তেঁতুলিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদৎ হোসেনের সভাপতিত্বে প্রথম অধিবেশনের সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক সম্পাদক নওশাদ জমির। প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির পল্লি উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক ও পঞ্চগড় জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ফরহাদ হোসেন। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম উদ্বোধক ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক এবং আমিনুল ইসলাম বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
২০০৯ সালে তেঁতুলিয়া উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে মহসিন প্রধান সভাপতি ও রেজাউল করিম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৯ সালে আগের কমিটি ভেঙে দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়। শাহাদৎ হোসেন এ কমিটিতে আহ্বায়ক ও রেজাউল করিম সদস্যসচিব ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র কম ট র র জ উল গঠন ক সদস য উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামানের চেক দিয়ে ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা উত্তোলন, প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আটক
বিদেশে পলাতক সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের নামে ইস্যু করা ১১টি চেক ব্যবহার করে চারটি ব্যাংক থেকে ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আটক ব্যক্তির নাম জাহাঙ্গীর আলম। আটক ব্যক্তি সাইফুজ্জামানের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান আরামিট পিএলসির সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম)। আজ বুধবার চট্টগ্রামে তাঁকে আটক করা হয়।
দুদকের আইনজীবী মোকাররম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সই করা চেকগুলোর আসল কপিসহ (মুড়ি) জাহাঙ্গীর আলমকে আটক করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের মালিকের অনুপস্থিতিতে অনুমতি ছাড়া টাকা উত্তোলনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুদক সূত্র জানায়, গত এক সপ্তাহের মধ্যে ইসলামী ব্যাংকের কয়েকটি শাখা থেকে ১ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংক থেকে ৩০ লাখ, সোনালী ব্যাংক থেকে ৩৬ লাখ এবং মেঘনা ব্যাংক থেকে ১০ লাখ টাকা তোলা হয়। এর আগে অর্থ পাচার মামলায় দুদকের হাতে গ্রেপ্তার ব্যাংকের দুই কর্মকর্তার আইনি লড়াইয়ের খরচ বহনের জন্য এ টাকা তোলা হয়েছে বলে দাবি করেছেন জাহাঙ্গীর আলম। ওই দুই কর্মকর্তা হলেন আরামিট পিএলসির দুই এজিএম মো. আবদুল আজিজ ও উৎপল পাল। ১৭ সেপ্টেম্বর অর্থ পাচারের মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তবে দুদক মনে করছে, নতুন করে ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা উত্তোলনের সঙ্গেও আত্মসাৎ বা পাচারের যোগসূত্র রয়েছে।
গত ২৪ জুলাই সাইফুজ্জামান, তাঁর পরিবারের কয়েকজন সদস্য ও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ২৫ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে মামলা করে দুদক। দুদকের উপপরিচালক মো. মশিউর রহমান বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ে এই মামলা করেন। মামলায় জাবেদ, তাঁর স্ত্রী রুকমীলা জামান, ভাই-বোন এবং প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ৩১ জনকে আসামি করা হয়। গ্রেপ্তার আবদুল আজিজ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। তদন্তে অপরাধের প্রমাণ পাওয়ার পর কর্মকর্তা উৎপল পালের নামও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
১৭ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হওয়া সাইফুজ্জামানের প্রতিষ্ঠানের দুই কর্মকর্তা মো. আবদুল আজিজ এবং উৎপল পাল দুদকের কাছে অর্থ পাচারের বিষয়টি স্বীকার করেন। তাঁরা জানান, সাইফুজ্জামানের নির্দেশে যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে ২৫ কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে।
তদন্তে জানা গেছে, সাইফুজ্জামানের মালিকানাধীন ইউসিবিএল ব্যাংক থেকে ২৫ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর হওয়ার পর সেই টাকা একই ব্যাংকের চারটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের হিসাব নম্বরে স্থানান্তর করা হয়। পরে এসব টাকা বিদেশে পাচার করা হয়। দুদক বলছে, জালিয়াতি ও আত্মসাতের এই ঘটনা ঘটে ২০১৯-২০ সালে। তখন জাবেদ ভূমিমন্ত্রী ছিলেন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর আদালত জাবেদ ও তাঁর স্ত্রীকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন। এরপরও তাঁরা বিদেশে পালিয়ে যান। দুদকের তথ্য অনুযায়ী, জাবেদের নয়টি দেশে বিপুল সম্পদ রয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যে ৩৪৩টি, দুবাইতে ২২৮টি, আমেরিকায় ১০টি বাড়ি রয়েছে। এ ছাড়া থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ভারত, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়ায় একাধিক সম্পদ রয়েছে।
দুদকের কর্মকর্তাদের মতে, দেশের ভেতর থেকে ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করেছেন জাবেদ ও তাঁর পরিবার। এভাবে বহু দেশে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন তাঁরা।