চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইনের দোহাজারী থেকে রামু পর্যন্ত উপজেলা পর্যায়ে ৮টি আধুনিক ও নান্দনিক রেলস্টেশন তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে চারটি হলো– সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া উপজেলার হারবাং ও ঈদগাঁওয়ের ইসলামাবাদ। এসব স্টেশনের আংশিক সুফলও পাচ্ছেন না যাত্রীরা। চারটি স্টেশনই তৈরি করা হয়েছে কিছুটা জনমানবহীন এলাকায়, বিলের মাঝে, যেখানে আসা-যাওয়ার ভালো কোনো রাস্তা নেই। যোগাযোগ ও নিরাপত্তাজনিত শঙ্কার কারণে যাত্রীরা ট্রেনে যাতায়াতে আগ্রহী নন। দুর্গম ও নিরিবিলি এলাকায় হওয়ায় অপরাধীদের আস্তানা হয়ে উঠছে এসব স্টেশন, ঘটছে ছোটখাটো অপরাধের ঘটনাও।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইনে ট্রেন চালুর দেড় বছর পার হলেও এসব স্টেশন এখনও পূর্ণাঙ্গ হয়নি। স্টেশনে নেই যাত্রীসুবিধা। বিশ্রামাগারে নেই আসবাব, শৌচাগার থাকে তালা মারা। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, স্টেশনে যাওয়া-আসার জন্য সড়ক তৈরি হয়নি। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ স্টেশন তৈরি করে দায় সেরেছে। তারা বলছে সড়ক নির্মাণের দায়িত্ব স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের। সড়ক নির্মাণেও দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ কেউ নিচ্ছে না।
এ ব্যাপারে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইনের সাবেক প্রকল্প পরিচালক (পিডি) আবুল কালাম আজাদ চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিটি রেলস্টেশনে সরকারের অধিগ্রহণকৃত জায়গায় সংযোগ সড়কের গড়ে ১০০ ফুট পাকা করে দেওয়া হয়েছে। এলজিইডি বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান যাত্রীদের সুবিধার জন্য সংযোগ সড়ক নির্মাণ করতে পারে। প্রকল্পের বাইরে কাজ করার সুযোগ আমাদের ছিল না।’
সাতকানিয়া রেলস্টেশনে সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য এলজিইডিকে চিঠি দিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এলজিইডি সড়ক নির্মাণে উদ্যোগ নেয়নি। এখন যাত্রীরা ধানক্ষেতের মাঝখান দিয়ে চলে যাওয়া আলপথে হেঁটে রেলস্টেশনে যান। আবার ফেরার সময় অর্ধ কিলোমিটার হেঁটে সাতকানিয়া-বাঁশখালী সড়কে গিয়ে গাড়িতে ওঠেন।
লোহাগাড়ায় হাজি রাস্তার মাথায়, যেখানে রেলস্টেশন করা হয়েছে সদর থেকে সেখানে যেতে ট্রেন ভাড়ার তিনগুণ সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া দিতে হয়। তার ওপর অর্ধনির্মিত কালভার্টের কারণে সড়ক বন্ধ। ওই অংশে হেঁটে স্টেশনে পৌঁছাতে হয়।
বড় হাতিয়া এলাকার ব্যবসায়ী আবদুল করিম বলেন, ‘সাতকানিয়া-লোহাগাড়া হলো ব্যবসায়ীদের এলাকা। রেলস্টেশনে সহজে যাতায়াত করা গেলে আমরা স্বল্প করেছে ট্রেনেই মালপত্র আনা-নেওয়া করতে পারতাম। তাতে ব্যবসায় লাভ বাড়ত। সেই সুযোগ আমরা পাচ্ছি না। অনেকটা দুর্গম এলাকায় কেন লোহাগাড়া স্টেশন তৈরি করা হয়েছে তা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়।’
সবচেয়ে নাজুক অবস্থা চকরিয়ার হারবাং স্টেশনের। এটি একটি বড় বিলের সঙ্গে লাগোয়া দুর্গম জায়গায় তৈরি করা হয়েছে, যেখানে আশপাশে ভালো কোনো সড়ক নেই। যে সড়কটি রেলস্টেশনের পাশা দিয়ে চলে গেছে সেটির প্রস্থ মাত্র ৫/৬ ফুট। কাঁচা এই সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা বা সিএনজিচালিত অটোরিকশাই কেবল চলতে পারে। তাও একটা আরেকটাকে পাশ কাটাতে গেলে ছোট গাড়ির জট লেগে যায়।
সাতকানিয়া আদর্শ মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রুহুল কাদের বলেন, ‘চকরিয়ায় তিনটি স্টেশন করা হয়েছে, তবুও মানুষ ট্রেনের সুবিধা পাচ্ছেন না–এটা দুঃখজনক। যদি হারবাং স্টেশনটি আরও এক কিলোমিটার দক্ষিণে বরইতলী একতাবাজার–পেকুয়া সড়কের পাশে করা হতো তাহলে শুধু চকরিয়া নয়, পেকুয়া, বাঁশখালী ও কুতুবদিয়ার মানুষও উপকৃত হতেন।’
ঈদগাঁওয়ের ইসলামাবাদ স্টেশনের সঙ্গে সদরের দূরত্ব প্রায় ৫ কিলোমিটার। এত দূরের স্টেশন থেকে উপজেলার বিভিন্ন গন্তব্যে আসা–যাওয়া করা দুষ্কর। সন্ধ্যা ও রাতে রয়েছে নিরাপত্তার শঙ্কা।
রেলওয়ে চট্টগ্রাম পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সড়ক ন র ম ণ ব যবস চকর য়
এছাড়াও পড়ুন:
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, নারী নিহত
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুরের রাজৈরে যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের খাদে পড়ে এক নারী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) মধ্যরাতে রাজৈর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হন তারা।
নিহত নিলুফা ইয়াসমিন নিলা (৩০) বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার রুনসী গ্রামের আবুল বাসারের স্ত্রী।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে ডাম্পট্রাকের ধাক্কায় অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত
অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কা, মা-মেয়ে নিহত
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুয়াকাটা থেকে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল চন্দ্রা পরিবহনের বাসটি। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের রাজৈর বাসস্ট্যান্ড পার হওয়ার পর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি সড়কের পাশের খাদে পড়ে যায়। পরে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে নিলার মরদেহ উদ্ধার করে। আহত হন অন্তত ২০ জন। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
মাদারীপুরের মস্তফাপুর হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, বাস খাদে পড়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করা হয়। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। একজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। নিহত নারীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা/বেলাল/মাসুদ