ঐশী। তারকা কণ্ঠশিল্পী। সম্প্রতি সৌদি আরবের জেদ্দায় স্টেজ শো এবং নতুন গানের আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। বর্তমান ব্যস্ততা ও অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন বোরহান আজাদ

জেদ্দা সফরের অভিজ্ঞতা নিয়ে বলুন...

সৌদি সরকারের আমন্ত্রণে গিয়ে বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করতে পারা অনেক সম্মানের। আমি যে ইভেন্টটিতে গিয়েছি তার নাম ‘পাসপোর্ট টু দ্য ওয়ার্ল্ড’। এটি একটি আন্তর্জাতিক ইভেন্ট, যেখানে বিশ্বের প্রতিটি দেশ থেকে সেরা শিল্পীরা পারফর্ম করছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হচ্ছে শোটি। সেখানে বাংলাদেশ থেকে আমি প্রতিনিধিত্ব করলাম। এটি আমার জন্য অনেক বড় অভিজ্ঞতা ও অর্জন। স্টেজে পারফর্ম করার সময় অনুভব করলাম, এ তো অসাধারণ স্টেজ। এত বড় আয়োজন! সেখানে আমি বাংলা গান গাচ্ছি। বাংলাদেশ, ভারত, সৌদি আরব, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশের দর্শকদের সামনে পারফর্ম করতে পেরে অসাধারণ লেগেছে।  সব মিলিয়ে শো’র প্রতিটি মুহূর্ত ম্যাজিক্যাল ছিল। 

২৭ তারিখ কাতার যাচ্ছেন শুনলাম?

না। ২৭ মে কাতার নয়, যাচ্ছি ব্রিটেনে। আমি ২৫ মে ইউকে রওনা দেব। লম্বা একটা ট্যুর শেষ করে আসব। সেখানে দুটি শো আছে। আমি এবং আমার টিম ঐশী এক্সপ্রেস আশা করছি সেখান  থেকেও অসাধারণ অভিজ্ঞতা নিয়ে আসব। 

জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী আপনি, তবুও প্লেব্যাকে নিয়মিত নন, এটি কি কোনো সিন্ডিকেটের কারণে?

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি। এটি আমার জীবনের একটি অন্যরকম সম্মান; যা আসলে না চাইতেই পাওয়া। কারণ আমি তো কাজটি করেছি ভালোবেসে। পুরস্কার পাওয়ার উদ্দেশ্যে নয়। এটি রাষ্ট্রীয় সম্মান। এটি যেকোনো শিল্পীর জীবনের স্বপ্ন থাকে। আমার এবং আমার পরিবারের এই স্বপ্নপূরণ– এটি আমার জীবনের সেরা অর্জন। অন্যরকম একটি দায়িত্ব– ভালোভাবে কাজ করতে হবে। প্লেব্যাকে আমি নিয়মিত নই– এর কারণটা যদি বলতে হয়– এক নাম্বার কারণ, সবাই তাদের পছন্দের আশপাশের মানুষদের নিয়ে শুধু কাজ করছেন। নিজের লোককে প্রায়োরিটি দিতে হবে– এটি খারাপ কিছু না। খুব স্বাভাবিক। আমি নেটওয়ার্কিংয়ে দুর্বল। আমি বিশ্বাস করি কাজ মানুষকে কাজ দেয়, নেটওয়ার্কিং না। নেটওয়ার্কিং দিয়ে কাজ বেশি হলে এমনটাই হয়। এখানে মন খারাপ করারও কিছু নেই। প্লেব্যাকে আমার কাছে অনেক গানের প্রস্তাব এসেছে। আমার কণ্ঠের সঙ্গে মানানসই গান পাইনি বলে করা হয়নি। সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া সিনেমাগুলো দেখলে বুঝবেন আমার ভয়েসের সঙ্গে মানানসই একটি গান আছে কিনা। যে গান শুনে মনে হয়েছে এটি ঐশী গাইলে ভালো হতো। এমন গান কি শুনেছেন? 

তবে একদমই করিনি তা নয়। রায়হান রাফীর একটি কাজ করলাম ‘আমলনামা’তে। ‘লোভী পাংখা’ গানটি অসাধারণ একটা গান। শুনে ভালো লেগেছে। তাই গেয়েছি। আমি গানপাগল মানুষ। ভালো গানের পিয়াসী। আমি গান গাওয়ার আগে শুনতে চাই। গান শুনে ভালো লাগলে ভালোবেসেই গানটি করি। আরেকটা গান এসেছে সিএমভি থেকে। ‘রজকিনী’ শিরোনামের গানটি লিখেছেন মেহেদী ভাই, সুর করেছেন এহসান রাহি, সংগীতায়োজন করেছেন সেতু চৌধুরী।

আপনার কণ্ঠে শ্রোতারা মেলোডি বেশি পছন্দ করে। বর্তমানে আপনার মেলোডি গান কম কেন?

মেলোডি গান আসলে কম না। আমার অনেক গানই মেলোডি। আরও কিছু গান রেডি। বিভিন্ন কারণে এগুলো প্রকাশ করছি না। ‘রজকিনী’ গানটিও ফোক রক মেলোডি। আশা করি, গানটি মানুষের ভালো লাগবে। ইউটিউবে সার্চ করলে দেখবেন আমার কয়েকশ গান আসবে, যেখানে আমার মেলোডি, ফোক, রক, আইটেম সং বিভিন্ন ধরনের। তবে এখনকার দর্শক-শ্রোতা আমার মনে হয় একটু বেশি ‘ঝাকানাকা’ গান পছন্দ করে। দুষ্টু পোলাপাইনের রিচ দেখলেই বোঝা যায়, দর্শক কী চাইছে। আমরা স্টেজে যখন পারফর্ম করতে যাই, তখনও মানুষ ‘হিট সং’, ‘হট সং’ শুনতে চায়। 

একের পর এক দেশ ঘুরছেন। সবচেয়ে সেরা কনসার্ট কোনটি আপনার কাছে? 

কালকের কনসার্টটিই আমার জীবনের সেরা কনসার্ট। আমি আসলে বলে বোঝাতে পারব না। এটি আসলে অনেক বড় আয়োজন ছিল। অনেক আনন্দ পেয়েছি।

সংসার এবং ডাক্তারি কেমন চলছে?

আমি এমপিএইচ করছি। সংসার চলছে হাসিখুশি আনন্দময়। লাইফ ইজ বিউটিফুল।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জ বন র আম র জ

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনাকে কোনো অবস্থাতেই ফেরত পাঠাবে না ভারত: রাজনৈতিক বিশ্লেষ

২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার অপর আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের সাজা।

গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এরপর থেকে তিনি ভারত সরকারের আশ্রয়েই রয়েছেন। ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনার অনুপস্থিতি তার বিচার পরিচালনা করে। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে কেবল সাবেক পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়ান স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত। তিনি বলেন, “হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতের এই রায় প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না ভারত।” 

আলজাজিরাকে দেওয়া মন্তব্যে দত্ত আরো বলেন, “কোনো অবস্থাতেই ভারত তাকে প্রত্যর্পণ করবে না। গত দেড় বছরে আমরা দেখেছি যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো অবস্থায় নেই এবং অনেক সময়ই ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।”

দত্ত বলেন, “হাসিনার মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশিত ছিল।”

তিনি বলেন, “সবাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখেছেন। সবাই আশা করেছিলেন যে হাসিনার বিচার হবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা একমত যে, বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম দেশের আইনি ব্যবস্থা অনুসরণ করেছে।”

দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, “নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে কারো সন্দেহ নেই। স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।”

দত্তের ভাষ্যমতে, “আওয়ামী লীগ এখন একটি পাল্টা ব্যাখ্যা তৈরির তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু বাংলাদেশিরা মূলত বিশ্বাস করেন যে- হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।”

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ