নতুন কালুরঘাট রেল কাম সড়ক সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ১৪ মে
Published: 13th, May 2025 GMT
অবশেষে বোয়ালখালী ও পটিয়া উপজেলাসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের লাখো মানুষের বহুল প্রতীক্ষিত নতুন কালুরঘাট রেল কাম সড়ক সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হতে যাচ্ছে। আগামী ১৪ মে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চট্টগ্রাম সফরকালে অতি গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন।
আর এ ভিত্তি স্থাপনে যে প্রস্তর উন্মুক্ত করা হবে সেখানে স্থাপক বা উন্মোচনকারীর নাম রাখা হয়নি। কারণ, ভিত্তিপ্রস্তর ফলকে নিজের নাম দিতে চাননি প্রধান উপদেষ্টা। ফলে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকারীর নাম ছাড়াই ফলক তৈরি করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
এ তথ্য জানালেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) প্রকৌশলী মো.
১৯৩১ সালে কর্ণফুলী নদীর উপর প্রথম নির্মিত হয়েছিলো কালুরঘাট রেলসেতু। এই সেতুর উপর দিয়েই প্রায় ৯৪ বছর ধরে একই সাথে রেল ও বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করে আসছে। সর্বশেষ ২০২৩ সালে এই সেতুর উপর দিয়ে ভারি ট্রেন চলাচলের জন্য সংস্কার করা হয়। জীর্ণ এই সেতুর পরিবর্তে একটি রেল কাম সড়ক সেতু নির্মাণ এ অঞ্চলের মানুষের কয়েকদশকের দাবি। কিন্তু এই অঞ্চল থেকে একাধিক এমপি-মন্ত্রী সংসদে ও সংসদের বাইরে এ নিয়ে জোর দাবি তুললেও তা পূরণ হয়নি। তবে এবার এই অঞ্চলের লাখো মানুষের দীর্ঘদিনের এ দাবিটি পূরণ হতে যাচ্ছে।
রেলওয়ে জানায়, সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে কালুরঘাট রেল কাম সড়ক সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে দোহাজারী-কক্সবাজার রেল লাইন প্রকল্পের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মুহম্মদ আবুল কালাম চৌধুরীকে।
প্রকল্পের ১১ হাজার ৫৬০ কোটি ৭৭ লাখ টাকার মধ্যে ৭ হাজার ১২৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা দিচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতা তহবিল (ইডিসিএফ) এবং ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট প্রমোশন ফ্যাসিলিটি (ইডিপিএফ)। অবশিষ্ট ৪ হাজার ৪৩৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা বাংলাদেশ সরকারের। ভূমি অধিগ্রহণ সরকারি অর্থায়নে হবে বলে জানা গেছে। ২০৩০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে আশা করছে রেলওয়ে।
এর আগে কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর ওপর দিয়ে রেল কাম সড়ক সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি গত বছরের ৭ অক্টোবর একনেক সভায় অনুমোদন দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপার্সন প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
ঢাকা/রেজাউল/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ল ক ম সড়ক স ত প রকল প র এই স ত র র লওয়
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনাকে কোনো অবস্থাতেই ফেরত পাঠাবে না ভারত: রাজনৈতিক বিশ্লেষ
২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার অপর আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের সাজা।
গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এরপর থেকে তিনি ভারত সরকারের আশ্রয়েই রয়েছেন। ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনার অনুপস্থিতি তার বিচার পরিচালনা করে। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে কেবল সাবেক পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়ান স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত। তিনি বলেন, “হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতের এই রায় প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না ভারত।”
আলজাজিরাকে দেওয়া মন্তব্যে দত্ত আরো বলেন, “কোনো অবস্থাতেই ভারত তাকে প্রত্যর্পণ করবে না। গত দেড় বছরে আমরা দেখেছি যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো অবস্থায় নেই এবং অনেক সময়ই ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।”
দত্ত বলেন, “হাসিনার মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশিত ছিল।”
তিনি বলেন, “সবাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখেছেন। সবাই আশা করেছিলেন যে হাসিনার বিচার হবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা একমত যে, বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম দেশের আইনি ব্যবস্থা অনুসরণ করেছে।”
দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, “নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে কারো সন্দেহ নেই। স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।”
দত্তের ভাষ্যমতে, “আওয়ামী লীগ এখন একটি পাল্টা ব্যাখ্যা তৈরির তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু বাংলাদেশিরা মূলত বিশ্বাস করেন যে- হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।”
ঢাকা/ফিরোজ