ফেসবুকে ‘হাত বান্ধিবি’ গেয়ে ফিরেছিলেন, এবার খুনের মামলায় গ্রেপ্তার মমতাজ
Published: 13th, May 2025 GMT
দীর্ঘ নীরবতা ভেঙে ২০২৪ সালের ১৩ অক্টোবর রাতে নিজের ফেসবুক পেজে হঠাৎ একটি গান পোস্ট করেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম। ‘আমার হাত বান্ধিবি, পা বান্ধিবি, মন বান্ধিবি কেমনে’—এই কথার গানটি প্রকাশের পরই নেট–দুনিয়ায় আলোড়ন ওঠে। অনেকে ভেবেছিলেন, সংগীতে আবার সক্রিয় হচ্ছেন একসময়কার ‘ফোক কুইন’। কিন্তু কয়েক মাস না যেতেই এল ভিন্ন খবর—সোমবার ১২ মে রাত পৌনে ১২টায় মাসে খুনের মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর থেকেই ছিলেন আড়ালে। রাজনীতি তো বটেই, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকেও নিখোঁজ ছিলেন মমতাজ। ১৬ জুলাইয়ের পর তাঁর ফেসবুক পেজে আর কোনো পোস্ট ছিল না, যেখানে আগে প্রতিদিনই কিছু না কিছু দিতেন।
‘নিখোঁজ’ হওয়ার ঠিক ৮৮ দিন পর ১৩ অক্টোবর রাতে একটি গানের ভিডিও পোস্ট করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফিরে আসেন তিনি। ভিডিওটি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। অনেকে মন্তব্য করেন, ‘কোথায় ছিলেন?’, ‘আপনি কি বিদেশে?’ কেউ কেউ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তির্যক মন্তব্য করলেও বেশির ভাগই ছিলেন গায়িকা মমতাজকে ফিরে পাওয়ার আনন্দে আপ্লুত।
গানটির কথাগুলো নিয়েও শুরু হয় আলোচনা। ‘আমার চোখ বান্ধিবি, মুখ বান্ধিবি, পরান বান্ধিবি কেমনে’—এই লাইনগুলো অনেকেই ব্যাখ্যা করেন একটি ‘সাংকেতিক বার্তা’ হিসেবে। কেউ মনে করেন, এটি আত্মগোপন ভেঙে ফেরার ঘোষণা।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মমত জ
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনাকে কোনো অবস্থাতেই ফেরত পাঠাবে না ভারত: রাজনৈতিক বিশ্লেষ
২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার অপর আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের সাজা।
গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এরপর থেকে তিনি ভারত সরকারের আশ্রয়েই রয়েছেন। ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনার অনুপস্থিতি তার বিচার পরিচালনা করে। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে কেবল সাবেক পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়ান স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত। তিনি বলেন, “হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতের এই রায় প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না ভারত।”
আলজাজিরাকে দেওয়া মন্তব্যে দত্ত আরো বলেন, “কোনো অবস্থাতেই ভারত তাকে প্রত্যর্পণ করবে না। গত দেড় বছরে আমরা দেখেছি যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো অবস্থায় নেই এবং অনেক সময়ই ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।”
দত্ত বলেন, “হাসিনার মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশিত ছিল।”
তিনি বলেন, “সবাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখেছেন। সবাই আশা করেছিলেন যে হাসিনার বিচার হবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা একমত যে, বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম দেশের আইনি ব্যবস্থা অনুসরণ করেছে।”
দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, “নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে কারো সন্দেহ নেই। স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।”
দত্তের ভাষ্যমতে, “আওয়ামী লীগ এখন একটি পাল্টা ব্যাখ্যা তৈরির তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু বাংলাদেশিরা মূলত বিশ্বাস করেন যে- হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।”
ঢাকা/ফিরোজ