জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে কোনো গণহত্যা হয়নি: চিফ প্রসিকিউটর
Published: 13th, May 2025 GMT
গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে গত বছরের জুলাই-আগস্টে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গুলি করে হত্যাসহ সহিংসতায় সহস্রাধিক মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) প্রসিকিউশনের কাছে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে প্রতিবেদন দাখিল করেছে তদন্ত সংস্থা। তবে এসব ঘটনায় যেসব অপরাধ হয়েছে, সেগুলো গণহত্যার সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে না বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম।
জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ এনেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। তিনি ‘মাস্টারমাইন্ড, হুকুমদাতা ও সুপিরিয়র কমান্ডার’ হিসেবে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করেছেন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এই প্রথম কোনো মামলায় তদন্ত শেষ হলো।
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে এই মামলায় শেখ হাসিনার সঙ্গে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়েছে।
তাজুল ইসলাম জানান, তদন্ত প্রতিবেদনে আসা তথ্য ও অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত করার পর আনুষ্ঠানিকভাবে তা দাখিল করা হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। এর পরে শুরু হবে আনুষ্ঠানিক বিচার কার্যক্রম।
সর্বোচ্চ দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হবে বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর।
জুলাই-অগাস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গণহত্যার কোনো অভিযোগ আনা হয়নি বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, গণহত্যার কোনো চার্জ বা অভিযোগ নেই। আন্তর্জাতিকভাবে যে সংজ্ঞা রয়েছে, সেই সংজ্ঞা অনুযায়ী বাংলাদেশে যেসব অপরাধ হয়েছে, সেগুলো ক্রাইমস এগেইনস্ট হিউম্যানিটি বা মানবতাবিরোধী অপরাধ! গণহত্যা নয়। বাংলাদেশে যে ধরনের অপরাধ হয়েছে, সেটি ম্যাস কিলিং বা ম্যাসাকার হয়েছে; জেনোসাইড নয়।
দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার করা হবে কি না—এমন প্রশ্নে তাজুল জানান, ভবিষ্যতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, গত রাতেই মাত্র সংশোধনী এ আইনে এসেছে। এখন প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী তদন্ত সংস্থা মনে করলে দলটি মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে কি না, সে বিষয়ে তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আইন অনুযায়ী তদন্তের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ত জ ল ইসল ম গণহত য জ ল ই গণঅভ য ত থ ন ম নবত ব র গণহত য তদন ত অপর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণ: এবি পার্টির ৩৬ দিনের কর্মসূচি
অনুপ্রেরণা, আত্মপর্যালোচনা ও প্রত্যয়দীপ্ত অঙ্গীকারে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ৩৬ দিন উদযাপনের ঘোষণা দিয়েছে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)।
শুক্রবার (২৭ জুন) রাজধানীর বিজয় নগরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা করেন দলের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু।
তিনি বলেন, “রাষ্ট্র ক্ষমতা পরিবর্তনের মাধ্যম হচ্ছে নির্বাচন। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা সবসময় নির্বাচন ছাড়া জোর করে তাদের ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে চেয়েছে। পাকিস্তানি সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ৭০ এর নির্বাচন আদায় করা সম্ভব হয়েছিল কিন্তু তারা গণহত্যা চালিয়ে সে নির্বাচনের ফল বাস্তবায়ন করতে দেয়নি।ফলে অনিবার্য হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ। যা দেশের মানচিত্র, পতাকা ও ভূখণ্ড নতুন করে নির্ধারণ করেছিল।”
আরো পড়ুন:
ছাত্রশিবির ছাত্রলীগের পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে: রাকিব
নাটোরে পরীক্ষা কেন্দ্রে ছাত্রদল নেতা, সচিবকে শোকজ
“৯০ এর গণআন্দোলনের পর ৯১-এ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়েছিল যা সংবিধানে নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করতে হয়েছে। নব্বইয়ে তিন জোটের রূপরেখা ঘোষণা করে রাষ্ট্র পরিচালনার অঙ্গীকার করা হয়েছিল।”
শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসন তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিলসহ সব কিছু ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার পতন হয়নি মন্তব্য করে মঞ্জু বলেন, “হাজার হাজার মানুষের রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাকে সিংহাসন ছেড়ে পালাতে হয়েছে। সুতরাং শুধু একটা নির্বাচন করে ক্ষমতায় নতুন সরকার বসলেই গণঅভ্যুত্থানের অঙ্গীকার পূর্ণ হবে না, বরং একাত্তর, নব্বই ও চব্বিশের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে সকলে ঐকমত্যে পৌঁছার মাধ্যমে একটা সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রকে নতুন মাত্রায় উপনীত করতে হবে।”
তিনি সবাইকে সেই অঙ্গীকার বাস্তবায়নে ঐকমত্যে পৌঁছার আহ্বান জানান। কর্মসূচি বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম ৩৬ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
সময়: ১ জুলাই ২০২৫, শনিবার, সকাল ১১ টা। স্থান: জাতীয় প্রেসক্লাব।
‘কোটা না মেধা: এক রক্তস্নাত অধিকারের সংগ্রাম' শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনী। ২ জুলাই ২০২৫ হতে ১৩ জুলাই। স্থান: বিজয়-৭১ চত্ত্বর।
স্মৃতিতে স্মরণে-১৪ জুলাই: প্রতিকী মিছিল
"আমি কে তুমি কে রাজাকার রাজাকার, কে বলেছে কে বলেছে স্বৈরাচার স্বৈরাচার; শেখ হাসিনা পালায় না, গুষ্টিশুদ্ধ পালায়’।
১৪ জুলাই ২০২৫, সোমবার, বিকাল ৪ টা। স্থান: বিজয় ৭১ চত্ত্বর।
ছাত্রলীগকে আন্তর্জাতিকভাবে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ বাংলাদেশ মিশনে স্মারকলিপি।
১৫ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার।
রংপুরে শহীদ আবু সাঈদের কবরে দোয়া ও দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ এবং ফেনীতে ছাত্রলীগ ও পুলিশের যৌথ হামলার নৃশংসতা স্মরণে কালো পতাকা মিছিল।
১৬ জুলাই ২০২৫, বুধবার
দুস্থদের খাবার বিতরণ-রংপুর
কালো পতাকা মিছিল-ফেনী ও ঢাকা
‘ইন্টারনেট বন্ধ করে আন্দোলন ও গণহত্যা ব্ল্যাকআউট' স্মরণে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সংহতি জ্ঞাপন। ঢাকার প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ক্যম্পাস গুলোতে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ।
১৭ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার।
কফিনবাহী প্রতীকী রোড মার্চ ও পথসভা: যাত্রাবাড়ী-ঢাবি-রামপুরা-মোহাম্মদপুর-উত্তরা
১৮ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার।
হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে নির্বিচারে মানুষ হত্যার বীভৎসতা স্মরণে মৌন মিছিল।
১৯ জুলাই ২০২৫, শনিবার।
প্রবাসীদের রেমিট্যান্স শাট ডাউন কর্মসূচি স্মরণে আলোচনা সভা।
লন্ডন, দুবাই, মালোয়েশিয়া শাখা সংগঠন এটা পালন করবে।
২০ জুলাই ২০২৫, রবিবার।
গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী আলেম-ওলামাদের প্রতীকী সম্মাননা প্রদান ও সংবর্ধনা।
২১ জুলাই ২০২৫, সোমবার। স্থান: বিজয় ৭১ চত্বর।
চট্টগ্রামে শহীদদের স্মরণে সমাবেশ ও মিছিল।
২২ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার। স্থান: চট্টগ্রাম
দায়িত্ব: চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা কমিটি।
গণহত্যকারী দল আওয়ামী লীগকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণার দাবিতে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা
ও মিশনে চিঠি প্রেরণ।
২৩ জুলাই ২০২৫, বুধবার-
গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী নারীদের প্রতীকী সম্মাননা প্রদান ও সম্বর্ধনা।
২৪ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার, সকাল ১১টা। স্থান: জাতীয় প্রেস ক্লাব।
গণঅভ্যুত্থানে শ্রমিকদের অন্তর্ভুক্তি ও অনুপ্রেরণা স্মরণে শ্রমিক সমাবেশ
২৫ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার। স্থান: গাজীপুর।
রায়েরবাজার গণকবরে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন ও দোয়া ২৬ জুলাই ২০২৫, শনিবার, সকাল ১১টা। স্থান: রায়েরবাজার।
গণঅভ্যুত্থানে নিবেদিত আইনজীবীদের সাথে মতবিনিময় ও সংবর্ধনা ২৭ জুলাই ২০২৫, রবিবার
গণঅভ্যুত্থানে আহতদের সেবা দানকারী চিকিৎসকদের সংবর্ধনা
২৮ জুলাই ২০২৫, সোমবার।
আহত-পঙ্গুদের সাথে মতবিনিময় ও সংবর্ধনা।
৩০ জুলাই ২০২৫, বুধবার।
গণঅভ্যুত্থানে নিবেদিত শিল্পী, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যম কর্মীদের সম্মানে চা-চক্র ৩১ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার।
কারারুদ্ধ নেতৃবৃন্দের সংবর্ধনা।
১ আগস্ট ২০২৫, শুক্রবার।
গণঅভ্যুত্থানে অবদান রাখা সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময়
২ আগস্ট ২০২৫, শনিবার।
শহীদ মিনারে কর্মসূচি ঘোষণা দিবসকে স্মরণ করে প্রেস ব্রিফিং ও পদযাত্রা
৩ আগস্ট ২০২৫, রবিবার।
গণপ্রতিরোধ স্মরণে জাতীয় পতাকা মিছিল
৪ আগস্ট ২০২৫, সোমবার, বিকাল ৪ টা, বিজয়-৭১ চত্বর।
গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে সংহতি সমাবেশ, ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী ও শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় জেয়াফত।
৫ আগস্ট ২০২৫, মঙ্গলবার, সকাল ১১ টা। স্থান: বিজয়-৭১ চত্ত্বর।
উপস্থিত ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, আনোয়ার সাদাত টুটুল, ব্যারিস্টার নাসরিন সুলতানা মিলি, এবিএম খালিদ হাসান ও ছাত্রপক্ষের আহবায়ক মোহাম্মদ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল বাসেত মারজান, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক শাহ আব্দুর রহমান, নারী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ফারাহ নাজ সত্তার, কেন্দ্রীয় সহকারী দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট শরণ চৌধুরী, আব্দুল হালিম নান্নু, মশিউর রহমান মিলু, সহকারী প্রচার সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ, রিপন মাহমুদ, সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান ব্যাপারী, সহকারী স্বেচ্ছা সেবা বিষয়ক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন রমিজ, কেফায়েত হোসেন তানভীর, মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্য সচিব আহমাদ বারকাজ নাসি প্রমুখ।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ