অনন্য স্বাদ ও গন্ধের কারণে ইলিশের খ্যাতি সর্বজনবিদিত। সাগরের লোনাপানির চেয়ে মিঠাপানির ইলিশের স্বাদ ও গন্ধ আলাদা। নদীভেদে ইলিশের স্বাদের ভিন্নতা নিয়ে নানা জনশ্রুতি আছে। তবে স্বাদের ভিন্নতার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নিয়ে তেমন তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যায় না।

সম্প্রতি একটি গবেষণার মাধ্যমে সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছেন গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ফিশারিজ ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক দীনেশ চন্দ্র সাহা ও তাঁর গবেষক দল। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে পরিচালিত গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, মেঘনা নদীর ইলিশের চেয়ে স্বাদে তেঁতুলিয়া নদীর ইলিশ উন্নত। স্বাদের ভিন্নতার পেছনে নানা কারণও খুঁজে বের করেছেন গবেষকেরা।

অধ্যাপক দীনেশ চন্দ্র সাহা প্রথম আলোকে বলেন, এক বছরের গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাঁরা তথ্য পেয়েছেন, দেশের নদ–নদীর ইলিশের স্বাদে ভিন্নতার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি রয়েছে। শুধু তা–ই নয়, কী কারণে ভিন্নতা তা-ও জানা গেছে।

খাবারের কারণে স্বাদে ভিন্নতা

দেশে ইলিশের পুষ্টিগত ভিন্নতা নিয়ে গবেষণা হলেও স্বাদের ভিন্নতার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নিয়ে আগে কোনো গবেষণা হয়নি। এবারের গবেষণার মৌলিকত্ব হলো গবেষকেরা তিনটি বিষয় আলাদাভাবে নিবিড় পর্যবেক্ষণের পর তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। পানিতে মাছের খাবারের মান, মাছের পেটে পাওয়া খাবার ও মাছের মাংস পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর গবেষকেরা নিশ্চিত হন, পানিতে থাকা খাবারের কারণে ইলিশের স্বাদ ভিন্নতর হয়।

গবেষণাটি তেঁতুলিয়া ও মেঘনা নদীর ইলিশ নিয়ে পরিচালিত হয়েছে। অধ্যাপক দীনেশ চন্দ্র ও তাঁর দল দুই নদীর পানির গুণাগুণ, প্ল্যাঙ্কটনের (বিভিন্ন ধরনের জীব) উপস্থিতি ও মাছের শরীরের পুষ্টি উপাদান বিশ্লেষণের মাধ্যমে ভিন্নতার কারণ খুঁজে বের করেন। মেঘনার চেয়ে তেঁতুলিয়ার ইলিশে মাইরিস্টিক, অলিক ও লরিক ফ্যাটি অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি। তা ছাড়া তেঁতুলিয়ার ইলিশে গ্লুটামিক, গ্লাইসিন ও অ্যালানিনের মতো অ্যামিনো অ্যাসিডও বেশি পাওয়া যায়। ফ্যাটি অ্যাসিড ও অ্যামিনো অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি থাকায় স্বাদে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে।

ইলিশ মাছ.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ব দ র ভ ন নত ভ ন নত র

এছাড়াও পড়ুন:

২২ অনাথ কাশ্মীরি শিশুর পড়াশোনার দায়িত্ব নিলেন রাহুল গান্ধী

অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন পাকিস্তানি গোলায় ভারত–নিয়ন্ত্রিত জম্মু–কাশ্মীরে যাঁরা নিহত হয়েছিলেন, তাঁদের পরিবারের ২২ অনাথ শিশুর লেখাপড়ার পুরো দায়িত্ব নিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ওই শিশুরা পুঞ্চ জেলার সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দা।

স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে উঠে স্নাতক হওয়া পর্যন্ত ওই শিশুদের পড়াশোনার সব খরচ রাহুল গান্ধী বহন করবেন। সেই খরচের প্রথম কিস্তির টাকা বুধবার ওই পড়ুয়াদের স্কুলে পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন জম্মু–কাশ্মীরের কংগ্রেস সভাপতি তারিক হামিদ কাররা।

পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল পর্যটকদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছিল কয়েকজন জঙ্গি। সেই হামলায় নিহত হয়েছিলেন মোট ২৬ জন পর্যটক। প্রত্যাঘাতের জন্য ভারত শুরু করে অপারেশন সিঁদুর। চার দিনের সেই লড়াইয়ের সময় জম্মুর সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রবল গোলাবর্ষণ করে পাকিস্তান। সেই হামলায় মারা গিয়েছিলেন ২৭ জন গ্রামবাসী। আহত হয়েছিলেন ৭০ জনের বেশি। যাঁরা নিহত হয়েছিলেন, ওই ২২ শিশু ওইসব পরিবারেরই সন্তান। তাদের কেউ বাবা, কেউ মা, কেউ–বা দুজনকেই হারিয়েছে। কারও পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

রাহুল গত মে মাসে ওইসব এলাকায় গিয়েছিলেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। অনাথ শিশুদের স্কুলেও গিয়েছিলেন। ওই সময় তিনি দলীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন অনাথ শিশুদের তালিকা তৈরি করতে। সরকারি নথির সঙ্গে সেই নাম মিলিয়ে ২২ জনের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত হয়। পুঞ্চ জেলা সফরের সময় রাহুল তাঁর ইচ্ছার কথা জানিয়ে বলেছিলেন, ওই শিশুদের স্নাতক স্তর পর্যন্ত পড়াশোনার সব খরচ তিনি দেবেন।

পাকিস্তানের গোলার আঘাতে মারা গিয়েছিলেন ১২ বছরের দুই যমজ ভাই–বোন জাইন আলি ও উরবা ফতিমা। রাহুল তাঁদের স্কুলে গিয়েছিলেন। সেই স্কুলের পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তাঁদের বলেছিলেন, তোমরা তোমাদের বন্ধুদের হারিয়েছ। সে জন্য তোমাদের মন খারাপ। ওই মৃত্যু আমাকেও দুঃখ দিয়েছে। তোমাদের দুঃখ আমি বুঝি। কিন্তু তোমাদের জন্য আমি গর্বিত। তোমরা ভয়কে জয় করেছ। রাহুল ওই শিশুদের বলেছিলেন, ভয়কে জয় করতে হবে। সুদিন আসবে। সব আবার স্বাভাবিক হবে।

ওই ২২ জনের জন্য বছরে কত খরচ হবে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব তা জানাননি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ