বিদেশি বিমান সংস্থাগুলোর স্থানীয় প্রতিনিধিদের সংগঠন জিএসএ ফোরামের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু
Published: 26th, May 2025 GMT
বিদেশি এয়ারলাইনস বা বিমান সংস্থাগুলোর স্থানীয় বিক্রয় প্রতিনিধিদের (জিএসএ) নিয়ে গঠিত এয়ারলাইনস জিএসএ ফোরাম অব বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে।
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর বনানীতে এক হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সংগঠনটির লোগো উন্মোচন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো.
এয়ারলাইনস ব্যবসায় জিএসএ বা বিক্রয় প্রতিনিধি বলতে এমন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিকে বোঝানো হয়, যাকে কোনো নির্দিষ্ট দেশ বা অঞ্চলে কোনো বিমান সংস্থার পক্ষ থেকে বিক্রয় ও বিপণনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই জিএসএরা বিমানের টিকিট বিক্রি, গ্রাহকসেবা, প্রচার, বিপণন ও ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য কাজ করে।
অন্যদিকে বিমান সংস্থাগুলোও কোনো দেশ বা অঞ্চলে সরাসরি নিজস্ব অফিস না খুলে জিএসএ নিয়োগ করে। এতে তাদের খরচ কমে, পূর্ণাঙ্গ কার্যালয় চালানোর প্রয়োজন হয় না।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশে বর্তমানে ৭০টির বেশি বিদেশি বিমান সংস্থা স্থানীয় জিএসএদের মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করছে। প্রাথমিকভাবে ফোরামের সদস্য হয়েছে ২৮টি জিএসএ কোম্পানি, যারা ৫০টির বেশি বিদেশি বিমান সংস্থার প্রতিনিধিত্ব করছে। এয়ারলাইনস জিএসএ ফোরাম অব বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা আশা প্রকাশ করছেন, অন্যান্য স্থানীয় জিএসএ কোম্পানিও দ্রুত সংগঠনটির সদস্য হবে।
স্বাগত বক্তব্যে জিএসএ ফোরামের আহ্বায়ক আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ বলেন, বিভিন্ন বিদেশি বিমান সংস্থাগুলোকে বাংলাদেশে ব্যবসা সম্প্রসারণে উৎসাহী ও উদ্যোগী করতে স্থানীয় জিএসএ প্রতিষ্ঠানদের অগ্রণী ভূমিকা আছে। বাংলাদেশের বিমান পরিবহন খাত এগিয়ে নিতে ও বাংলাদেশকে বিমান চলাচলের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে এই ফোরাম সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত।
অনুষ্ঠানে বিমান পরিবহন খাত নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টিএএস গ্রুপের পরিচালক মুজাক্কের হক। তিনি জানান, বিমান সংস্থাগুলো বাংলাদেশ থেকে ৩০টি আন্তর্জাতিক গন্তব্যে সরাসরি উড়ান পরিচালনা করছে। এতে কোম্পানিগুলো বছরে কমপক্ষে ১ কোটি ২০ লাখ যাত্রীকে বিমান সেবা দেয় এবং ন্যূনতম আড়াই লাখ টন কার্গো পরিবহন করে। বিমান পরিষেবা ব্যবসার সঙ্গে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় পাঁচ হাজার উদ্যোক্তা জড়িত। এ খাতে কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় সোয়া লাখ মানুষের।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে কাজ করা জিএসএ কোম্পানিগুলো বিমান পরিবহন শিল্পের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে। প্রশিক্ষণ, সেমিনার ও কর্মশালার মাধ্যমে জিএসএ ও বিমান পরিবহন খাতের পেশাজীবীদের জ্ঞান ও পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানে জিএসএ ফোরামের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খালেদ ইউসুফ ফারাজী, আরিফ রহমান, মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ ডন, সোহাগ হোসেন, এম এ লতিফ শাহরিয়ার জাহেদী, মিজানুর রহমান, মুজাক্কের হক, মাহবুবুল আনাম, রাজীবুল হক চৌধুরী, শাদাত হোসেন, ইয়ামি এম সালেহ, আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ ও তৌফিক উদ্দিন আহমেদ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ম ন পর বহন জ এসএ ফ র ম অন ষ ঠ ন য় জ এসএ ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
ড. ফরিদ আহমদ সোবহানীকে সংবর্ধনা দিল গ্রীন এইচ আর প্রফেশনালস
ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর (ভিসি) হিসেবে অধ্যাপক ড. ফরিদ আহমদ সোবহানী নিয়োগ পাওয়ায় তাকে সংবর্ধনা জানিয়েছে পেশাদার মানবসম্পদ উন্নয়নভিত্তিক সংগঠন ‘গ্রীন এইচআর প্রফেশনালস বাংলাদেশ’।
সংগঠনটির ৩০৯তম পাঠচক্র শেষে ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর প্রাঙ্গণে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ড. সোবহানীকে শুভেচ্ছা জানানো হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গ্রীন এইচআর প্রফেশনালস বাংলাদেশের সদস্য, উপদেষ্টা এবং কর্পোরেট ও শিক্ষাজগতের বিভিন্ন পেশাজীবী।
অধ্যাপক ড. ফরিদ আহমদ সোবহানী একজন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শিক্ষাবিদ ও গবেষক। বর্তমানে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার কিম্বারলেতে অবস্থিত সোল প্লাতজে ইউনিভার্সিটির ইকোনমিক্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সেস অনুষদের ভিজিটিং প্রফেসর, অস্ট্রেলিয়ার সিডনিভিত্তিক অস্ট্রেলিয়ান একাডেমি অব বিজনেস লিডারশিপের একজন রিসার্চ ফেলো এবং মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি টেকনোলজি এমএআরএ এর অ্যাকাউন্টিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটেরও ভিজিটিং প্রফেসর।তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের নিয়োগ বোর্ডে এক্সটারনাল মেম্বার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
অধ্যাপক সোবহানীর শিক্ষা জীবনের শুরু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, যেখানে তিনি অ্যাকাউন্টিংয়ে মেজরসহ বিবিএ ও এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি বেলজিয়ামের অ্যান্টওয়ার্প বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় দ্বিতীয় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি সায়েন্স মালয়েশিয়া থেকে এইচআর অ্যাকাউন্টিং বিষয়ে পিএইচডি অর্জন করেন।তিনি দেশে-বিদেশে সম্মানিত জার্নাল ও ম্যাগাজিনে প্রায় ১০০টিরও বেশি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করে একাডেমিক জগতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গ্রীন এইচআর প্রফেশনালস বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. রওশন আলী বুলবুল। তিনি বলেন, “ড. সোবহানী আমাদের সংগঠনের অ্যাডভাইজার হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে জ্ঞান ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে আসছেন। আমরা গর্বিত যে তিনি ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। এটি আমাদের সবার জন্য একটি বড় অনুপ্রেরণা।”
তিনি আরো জানান, গ্রীন এইচআর প্রফেশনালস বাংলাদেশ দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে গ্রিন এইচআর ধারণা ছড়িয়ে দিতে এবং পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে সংগঠনটি ইতোমধ্যে ৫৫টিরও বেশি বই পাঠের মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে ৩০৯টি পাঠচক্র সম্পন্ন করেছে, যেখানে সফট স্কিল, পাওয়ার বিআই, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং সমসাময়িক উদ্ভাবন নিয়ে আলোচনা ও প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৮টি ক্যাপাসিটি বিল্ডিং প্রোগ্রাম এবং তিনটি ট্রেইনার অব ট্রেইনার্স (টিওটি) প্রোগ্রাম সম্পন্ন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে “গ্রীন এইচআর ফাউন্ডেশন” গঠনের মাধ্যমে আরো সুসংগঠিত কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনাও রয়েছে।
সংবর্ধনায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির চিফ অ্যাডভাইজার ড. মোশাররফ হোসেন, মো. নুরুল ইসলাম (সাবেক হেড অব এইচআর, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ), এস এম জাহিদ হাসান (সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর, ওয়ালটন গ্রুপ), রানা চক্রবর্তী (সিওও, বাংলাদেশ স্পেশালিস্ট হসপিটাল), মোহাম্মদ ইকরাম হোসেন, সৈয়দ আকরাম হোসেন, সৈয়দ মো. আসিফ রহমান, সাইফুল আমিন হাসানাত, প্রণব চন্দ্র, এমরান হোসেন, তৌহিদ হোসেনসহ কোর মেম্বাররা।
সংবর্ধনায় অংশ নেওয়া সদস্যরা জানান, “গ্রীন এইচআর প্রফেশনালস বাংলাদেশ শুধু পেশাগত উন্নয়নের প্ল্যাটফর্ম নয়, এটি একে অপরকে শেখার ও সহমর্মিতার বন্ধনে আবদ্ধ করার একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ।”
ঢাকা/এসবি