নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. অভিজিৎ ব্যানার্জি বলেছেন, গত ৩০-৪০ বছর ধরে বাংলাদেশ ও ভারতের মতো দেশগুলোতে জিডিপির বড় অংশই ধনীদের কাছে যাচ্ছে এবং ক্রমশ তা বাড়ার কারণে এসব দেশে জিডিপি অনুযায়ী দারিদ্রতা কমছে না।

আজ সোমবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে অর্থ মন্ত্রণালয় ও নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক আয়োজিত ‘ট্রান্সফরমিং ডেভেলপমেন্ট: বিল্ডিং এ কালচার অব একাউন্টিবিলিটি থ্রু ইভ্যালুয়েশন, অডিটিং অ্যান্ড ইথিক্স’ শিরোনামে এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগদান করে এ কথা বলেন তিনি।

অভিজিৎ ব্যানার্জি বলেন, জিডিপি কতোটা দরিদ্রদের কাছে পৌঁছায় এবং কতোটা ধনীদের কাছে পৌঁছায় তার ওপর নির্ভর কর দারিদ্র্যতার হার কতোটা কমবে। গত ৩০-৪০ বছর ধরে দেখা যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ ও ভারতসহ পৃথিবীর বহুদেশে এর বৃহৎ অংশ ধনীদের কাছে যাচ্ছে এবং তা ক্রমশ বাড়ছে। আমাদের দেখতে হবে জিডিপির প্রকৃত সুফল কে ভোগ করছে।

তিনি বলেন, ১০ বছর আগেও বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি, এক্সচেঞ্জ রেট, বিভিন্ন দেশের সরকারের ঋণ নিয়ন্ত্রণের মধ্যে ছিল, টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য যা এখন বৃহত্তর পরিসরে প্রশ্নাতীত। পলিটিক্যাল অ্যান্ড ইনভায়রনমেন্টাল চ্যালেঞ্জ বৃহৎ ফার্মগুলোর টিকে থাকার ক্ষেত্রে ঝূঁকি তৈরি করছে। বাংলাদেশে মাইগ্রেশন ও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড.

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রকল্পের মূল্যায়ন ও স্বচ্ছতা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলেও বাংলাদেশে সেখানে ঘাটতি রয়েছে। প্রকল্পের ক্ষেত্রে ভ্যালু অব মানি নেই এবং বেশিরভাগ প্রকল্পই অতি মূল্যায়িত এবং সাধারণ মানুষ এসব প্রকল্পের সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। প্রকল্প মূল্যায়নের ক্ষেত্রে যেসব সংখ্যা ব্যবহার করা হয়, সেগুলো ম্যানুপুলেটেড।

তিনি বলেন, ‘অডিট রিপোর্টে বিভিন্ন সংখ্যা থাকে। কিন্তু ওই সংখ্যার পেছনে নানা গোপণে প্রক্রিয়া থাকে। অডিট ও একান্টিংয়ে অভিজ্ঞরাও সংখ্যার পেঁছনের গল্পগুলো জানেন না।’

প্রকল্পে স্বচ্ছতার জন্য সোশ্যাল অডিট প্রয়োজন উল্লেখ করে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘লোকাল পিপুল আর দ্য জজ। ১৯৮০ এর দশকে প্রজেক্টের আওতায় কোথায় কি কাজ হবে, কতো খরচ হবে- তা প্রকল্প এলাকায় সাইনবোর্ড লাগিয়ে জনগণকে জানানো হতো। তখন স্থানীয় জনতা এর যৌক্তিকতা নির্ধারণ করতে পারতো।’

তিনি বলেন, ‘অডিটরা রিপোর্ট ম্যানুপুলেট করতে পারে, তারা প্রায়শই মানহীন রিপোর্ট তৈরি করে। তাই ইভিডেন্স ও নাম্বার পলিসি গ্রহণে সব সময় পর্যাপ্ত নয়।’

দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড অভ জ ৎ ব য ন র জ প রকল প

এছাড়াও পড়ুন:

পশুর হাটে চাঁদাবাজির অভিযোগে বিএনপি ও বৈষম্যবিরোধীর দুই নেতা গ্রেপ্তার

চাঁদাবাজির অভিযোগে কুড়িগ্রামের যাত্রাপুর পশুর হাটের ‘বৈধ’ ইজারাদার মাহাবুব রহমান ও তাঁর সহযোগী মো. আলমগীর গ্রেপ্তার হয়েছেন। গত মঙ্গলবার রসিদ ছাড়া চাঁদা তোলার সময় যৌথ বাহিনীর হাতে তারা আটক হন। গতকাল বুধবার সকালে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হলে পুলিশ গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। সেখানে বৈধতার কাগজপত্র দেখালে শুনানি শেষে বিচারক জামিন মঞ্জুর করেন।

গ্রেপ্তার মাহাবুব রহমান কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও বেলগাছা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান। মো. আলমগীর কুড়িগ্রাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক। গত মঙ্গলবার তাদের বিরুদ্ধে যাত্রাপুর গরুর হাটে রসিদ ছাড়া চাঁদা তোলার অভিযোগ ওঠে। পরে ফেনী জেলার মহিষ ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন আজাদ হাটে টহলরত যৌথ বাহিনীর কাছে অভিযোগ করলে তাদের আটক করা হয়। আলমগীর পুরো ঘটনাকে ‘ষড়যন্ত্র’ বলে মন্তব্য করেছেন।

এজাহারে বলা হয়, ফেনীর ছাগলনাইয়ার মহিষ ব্যবসায়ী আনোয়ার মঙ্গলবার যাত্রাপুর হাট থেকে ১৭টি মহিষ কেনেন। পরে অভিযুক্তরা তাঁকে (আনোয়ার) গরু-মহিষ বিক্রির রসিদ শেডঘরে নিয়ে যান এবং প্রত্যেক মহিষের জন্য ৫০০ টাকা করে ৮ হাজার ৫০০ টাকা চাঁদা আদায় করেন। এ সময় আনোয়ার তাদের কাছে রসিদ চাইলে তারা তা দেখাতে পারেননি। আনোয়ার বিষয়টি যৌথ বাহিনীকে জানালে এ দু’জনকে আটক করা হয়।

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুড়িগ্রাম জেলা কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ নাহিদ বলেন, ‘মাহাবুব রহমান ওই হাটের ইজারাদার। তিনি চাঁদাবাজ নন। আমার সঙ্গে মাহাবুব রহমানের কথা হয়েছে। তারা কাগজ প্রদর্শনের সময় পাননি। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের আটক করে যৌথ বাহিনী। সকালে কাগজপত্র দেখালে তাদের জামিন হয়।’ 

কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসি মো. হাবিবুল্লাহ জানান, মাহাবুব রহমান যাত্রাপুর হাটের বৈধ ইজারা মালিক। তবে ওই সময়ে তাঁর কাছে কাগজপত্র না থাকায় চাঁদাবাজির অভিযোগে আটক করা হয়। সকালে থানায় চাঁদাবাজির মামলা করেন ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন। ওই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

অভিযুক্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা মো. আলমগীর বলেন, দুপুরে যথাযথ কাগজ আদালতে দাখিল করে জামিনে মুক্ত হয়েছি। এটি সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র ছিল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ