দুই দিনের কলমবিরতি কর্মসূচিতে যাচ্ছে ২৫টি ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন
Published: 26th, May 2025 GMT
দাবি আদায়ে আগামীকাল মঙ্গলবার দুই দিনব্যাপী কলমবিরতি কর্মসূচি শুরু করতে যাচ্ছে প্রশাসন ক্যাডার বাদে সিভিল সার্ভিসের ২৫টি ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ। বিভিন্ন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত ও বিভাগীয় মামলার প্রতিবাদে এবং ‘কৃত্য পেশাভিত্তিক’ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা, উপসচিব পদে পদোন্নতিতে কোটা বাতিল ও সব ক্যাডারের মধ্যে সমতা আনার দাবিতে এ কর্মসূচি পালিত হবে।
আগামীকাল ও পরদিন বুধবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সারা দেশে সিভিল সার্ভিসের ২৫টি ক্যাডারের কর্মকর্তারা এ কর্মসূচি পালন করবেন। আজ সোমবার আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তবে হাসপাতালের জরুরি বিভাগসহ অন্যান্য জরুরি সেবা কার্যক্রম এই কলমবিরতি কর্মসূচির আওতাবহির্ভূত থাকবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখির জন্য ২৫ ক্যাডারের ১২ জন সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে বিষয়টি সমাধানের জন্য আশ্বস্ত করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টিকে আটকে রাখা হয়েছে। উপরন্তু সম্প্রতি কয়েকজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম চলমান। অথচ প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা সরকারি বিধিবিধান–বহির্ভূত কার্যকলাপের পরও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এ ছাড়া একটি নির্দিষ্ট ক্যাডারের গোষ্ঠীস্বার্থে উদ্দেশ্যমূলকভাবে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিসংখ্যান, ডাক, পরিবার-পরিকল্পনা, কাস্টমস ও ট্যাক্স ক্যাডারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন উপসচিব পদে কোটা নিয়ে যে সুপারিশ করেছে, তা নিয়েও আপত্তি জানিয়ে পরিষদ বলেছে, আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সঙ্গে কোনো রকম আলোচনা ছাড়াই এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
ওই সব দাবিতে এর আগে ২০ মে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে পরিষদের অন্তর্ভুক্ত ২৫ ক্যাডারের সদস্যরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এ ছাড়া গত ২ মার্চ পূর্ণদিবস কর্মবিরতি এবং গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর সারা দেশে ১ ঘণ্টার কলমবিরতি কর্মসূচি ও ২৬ ডিসেম্বরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক য ড র র কর মকর ত
এছাড়াও পড়ুন:
বৃহস্পতিবারের মধ্যে এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বিলুপ্তির অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে টানা ১২ দিন কলমবিরতি ও কর্মবিরতি পালনের পর অর্থ মন্ত্রণালয়ের আশ্বাসে গত রোববার কর্মসূচি প্রত্যাহার করে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। তবে গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ২৯ মে বৃহস্পতিবারের মধ্যে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানকে অপসারণ করতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে আন্দোলনের জন্য গঠিত ওই পরিষদ।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এনবিআর বিলুপ্তির জন্য পাস হওয়া অধ্যাদেশের বিষয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান লুকোচুরির আশ্রয় নেন এবং যথাযথ ভূমিকা পালন করতে ব্যর্থ হন। অধ্যাদেশের খসড়া প্রস্তুতি থেকে প্রতিটি ধাপে তিনি লুকোচুরির আশ্রয় নিয়েছেন এবং চরম অসহযোগিতা করেছেন। সেই সঙ্গে সরকারকে ভবিষ্যৎ রাজস্ব কাঠামো নিয়ে এনবিআরের কর্মকর্তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা জানানোর ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন। এ কারণে তারা এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যানের
পদত্যাগ চান।
গত বৃহস্পতিবার রাজস্ব সংস্কার ঐক্য পরিষদ প্রধান উপদেষ্টাকে দেওয়া স্মারকলিপিতে চারটি দাবি করে। এগুলো হলো– এনবিআর অধ্যাদেশ বাতিল, চেয়ারম্যানকে অপসারণ, রাজস্ব সংস্কারবিষয়ক পরামর্শক কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ এবং অংশীজনের মতামত নিয়ে রাজস্ব সংস্কার নিশ্চিত করা। গত সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থাকবে এবং একে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারের একটি স্বতন্ত্র ও বিশেষায়িত বিভাগে উন্নীত করা হবে। রাজস্বনীতির পৃথক কাঠামো কীভাবে হবে তা এনবিআর, রাজস্ব সংস্কারবিষয়ক পরামর্শক কমিটি এবং অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হবে।
গতকালের সংবাদ সম্মেলনে রাজস্ব বোর্ডের ডেপুটি কমিশনার শাহাদাত জামিল বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যানের প্রতি বিশ্বাস ও আস্থার চরম সংকট তৈরি হওয়ায় তাঁর সঙ্গে লাগাতার অসহযোগ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। আরও বক্তব্য দেন অতিরিক্ত কর কমিশনার মোনালিসা শাহরিন এবং উপকর কমিশনার রইসুন নেসা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করার পর দেশের সব কর, ভ্যাট ও কাস্টমস অফিসের কার্যক্রম স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে। আন্দোলনের কারণে কাজ যতটুকু কম হয়েছে, আগামী দিনগুলোতে অতিরিক্ত সময় কাজ করে তা পুষিয়ে দেবেন।
আগামী মাসে ‘কেমন এনবিআর চাই’– এই শিরোনামে সেমিনারের আয়োজনের কথাও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। এর আগে গতকাল রোববার রাতে চলমান আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয়। ফলে আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সারাদেশের সব দপ্তরে পূর্ণদিবস কর্মবিরতির কর্মসূচিও আপাতত স্থগিত রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, গত ১৪ থেকে ২৫ মে পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে কলমবিরতি ও কর্মবিরতি পালন করা হয়। তবে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা, রপ্তানি ও বাজেট কার্যক্রমকে আন্দোলনের আওতামুক্ত রাখা হয়। এখন কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত হলেও এনবিআর চেয়ারম্যান অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে অসহযোগিতা চলবে। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ আশা করে, সরকার যথাসময়ে চেয়ারম্যানকে অপসারণ করে রাজস্ব প্রশাসনে আস্থার পরিবেশ ফিরিয়ে আনবে। অন্যথায় তারা নতুন কর্মসূচির মাধ্যমে আন্দোলন আরও জোরদার করার ঘোষণা দেবে।