বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত দর্শকনন্দিত সিনেমা ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ মুক্তি পায় ১৯৯৮ সালে। টিভি প্রিমিয়ারের পর দর্শকের আগ্রহে প্রেক্ষাগৃহেও মুক্তি পায় সিনেমাটি। এটি পরিচালনা করেছিলেন কলকাতার বরেণ্য নির্মাতা বাসু চ্যাটার্জি। মুক্তির দুই যুগেরও বেশি সময় পর এটি রিমেক হচ্ছে। ‘আবার হঠাৎ বৃষ্টি’ নামে সিনেমাটি প্রযোজনার দায়িত্বে আছে আশীর্বাদ চলচ্চিত্র।

সোমবার রাজধানীর উত্তরার আনন্দবাড়িতে মহরতের মাধ্যমে এর শুটিং শুরু হয়েছে। পরে শ্রীমঙ্গলসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় দৃশ্য ধারণ হবে বলে নির্মাতা জানিয়েছেন। এবার সিনেমাটি যৌথভাবে প্রযোজনা করছে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড ও আশীর্বাদ চলচ্চিত্র।

পরিচালনার দায়িত্বে আছেন কামরুজ্জামান। সিনেমাটি উপদেষ্টা পরিচালক হিসেবে আছেন নন্দিত নির্মাতা ছটকু আহমেদ। এতে অজিত চরিত্রে অভিনয় করবেন সাদী খান ও দীপা নন্দীর চরিত্রে দেখা যাবে রাফিদাকে। দু’জনই সিনেমায় নতুন মুখ। এ ছাড়া সিনেমার আরও গুরুপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করবেন আজাদ আবুল কালাম, ফারজানা ছবি, কায়েস আরজুসহ অনেকেই। 

নির্মাতা কামরুজ্জামান বলেন, ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ আমাদের কাছে এক নস্টালজিয়া। সিনেমাটি ভারত বাংলাদেশসহ অনেক দেশের দর্শকরা পছন্দ করেছেন। সেই সিনেমা রিমেক হচ্ছে ভাবতেই ভালো লাগছে। সিনেমাটি দর্শকনন্দিত, তাই কাজটি অনেক চ্যালেঞ্জিং। শুটিং শুরু করেছি। আশা করছি, সবার সহযোগিতায় কাজটি ভালোভাবেই শেষ করতে পারব। সিনেমাটি নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে চাই না। তবে এটি নিয়ে সবার বেশ আগ্রহ লক্ষ্য করছি। শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাব।’

বলা দরকার, ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ দিয়ে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করেছিলেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ। প্রথম সিনেমাতেই আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা পান তিনি। পাশাপাশি ঘরে তোলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও। তাঁর বিপরীতে ছিলেন ওপার বাংলার অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা ত্রিবেদী। তিনিও অভিনয় দিয়ে দর্শক প্রশংসা কুড়িয়েছেন।

সিনেমাটি যৌথভাবে প্রযোজনা করে বাংলাদেশের আশীর্বাদ চলচ্চিত্র ও ভারতের গ্রামকো ফিল্মস। আর সংগীতশিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তী এই ছবির গান দিয়ে দুই বাংলার শ্রোতাদের মন জয় করেছিলেন। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চলচ চ ত র

এছাড়াও পড়ুন:

ফরিদপুরে সংগঠককে বিএনপি নেতার মারধর, পুলিশের উপরও হামলা

ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ভবুকদিয়া গ্রামে বোনের উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা যুগ্ম-সদস্য সচিব বৈশাখী ইসলামের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি নেতা বদিউজ্জামান তারা মোল্যা ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে। 

শুক্রবার (৩০ মে) বিকেলে ঘটে যাওয়া এ ঘটনার প্রতিবাদে রাত ৮টার দিকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী ও শিক্ষার্থীরা ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধ করে। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৈশাখী ইসলামের বোনকে কিছুদিন ধরে স্থানীয় যুবক জালাল বেপারীর ছেলে শরীফ বেপারী উত্ত্যক্ত করে আসছিল। এ বিষয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানানো হলে শুক্রবার সকাল ১১টায় শালিস বৈঠকের কথা ছিল। কিন্তু বৈঠক না হওয়ায় বৈশাখী দুপুরে থানা পুলিশ ও ইউএনওর কাছে অভিযোগ জানান। 

পরে পুলিশের একটি দল নিয়ে বাড়ি ফিরলে বিএনপি নেতা বদিউজ্জামান তারা মোল্যা ও তার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে বৈশাখীর ওপর হামলা চালায়। এ সময় উপস্থিত পুলিশের ওপরও হামলা হয়, ফলে পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

হামলার পরপরই বৈশাখী ফেসবুক লাইভে এসে আবেগঘন কণ্ঠে বলেন, “জুলাই আন্দোলন করা কি আমাদের ভুল ছিল? বিএনপির পোলাপানরা রাস্তায় ফেলে মারছে, চুল ধরে লাথি মারছে। আমার আব্বাকে খুঁজছে মারার জন্য।” 

মাত্র ৩০ সেকেন্ডের এই লাইভ ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ছয় ঘণ্টার মধ্যে ভিডিওটি এক লাখেরও বেশি ভিউ পায়।

বৈশাখীর এই লাইভ দেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা নেতৃবৃন্দ ভবুকদিয়া গ্রামে তার বাড়িতে ছুটে যান। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাদের বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে বিএনপির লোকজন বৈশাখী ও শিক্ষার্থীদের ওপর পুনরায় হামলা চালায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বৈশাখী ইসলাম বলেন, “বোনের উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বিএনপি নেতা বদিউজ্জামান তারা মোল্যা ও তার লোকজন আমাকে রাস্তায় ফেলে মারধর করেছে, চুল ধরে লাথি মেরেছে। তারা আমার বাবাকেও মারার হুমকি দিয়েছে। আমি হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং আমার পরিবারের নিরাপত্তার জন্য জোরালো বিচার দাবি করছি।”

এ ঘটনায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি করেছে।

ফরিদপুর জেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র জেবা তাহাসিন বলেন, “আমরা ফেসবুকে ঘটনার লাইভ দেখতে পেয়েছি। লাইভ দেখার সঙ্গে সঙ্গে আমরা দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং ভুক্তভোগীর পাশে দাঁড়ানোর জন্য এগিয়ে এসেছি।”

ফরিদপুর জেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক কাজী রিয়াজুল ইসলাম বলেন, “আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। যারা এই ন্যক্কারজনক হামলা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”

বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। উত্ত্যক্তকারী শরীফ বেপারীকে পুলিশ আটক করেছে। হামলার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।

ফরিদপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল), মো. আসিফ ইকবাল বলেন, “এই মুহূর্তে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। উত্ত্যক্তকারী শরীফ বেপারীকে ইতিমধ্যে আটক করা হয়েছে। হামলার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।”

ঢাকা/তামিম/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ