Prothomalo:
2025-09-18@08:04:39 GMT

মকছুদারের এক টাকার পেঁয়াজু

Published: 28th, May 2025 GMT

বাজারের ব্যস্ত এক প্রান্তে ছয় হাত জায়গাজুড়ে ছোট্ট একটি দোকান। সন্ধ্যা নামার আগেই ভিড় জমে যায় দোকানটিতে। মুচমুচে পেঁয়াজি, ধনেপাতার চপ আর গরম তেল পিঠার ঘ্রাণ সেখানে। এই দোকানের সুনাম ছড়িয়েছে এক টাকার পেঁয়াজুর জন্য।

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ইকরচালী বাজারে ভেতর দিয়ে চলে যাওয়া ইকরচালী-বরাতি সড়কের ধারে সরকারপাড়া গ্রামের মকছুদার রহমানের দোকান। ২০ বছর ধরে তিনি নিজ হাতে পেঁয়াজু তৈরি করে এক টাকায় বিক্রি করছেন।

মকছুদার রহমান বলেন, মানুষ খেয়ে তৃপ্তি পেলেই তাঁর শান্তি। লাভ কম হয় ঠিকই, কিন্তু অনেকেই নিয়মিত আসেন, খান, দোয়া করেন। এক টাকার পেঁয়াজুতে লাভ না হলেও পেঁয়াজু খেতে এসে অন্য খাবারও খান মানুষ। সেগুলোর লাভের টাকায় দিন চলে যায়।

শুরুর কথা বলতে গিয়ে মকছুদার রহমান বলেন, তাঁর ব্যবসার শুরুটা হয়েছিল সাদামাটাভাবে। ২০০৫ সালে মাত্র কয়েকটি পেঁয়াজু ভেজে বিক্রি শুরু করেন তিনি। উদ্দেশ্য ছিল পেট চালানো। তখনো জানতেন না, এই ক্ষুদ্র প্রয়াস তাঁকে এলাকার মানুষের কাছে ‘পেঁয়াজু মকছুদার’ নামে পরিচিত করে তুলবে। সময় গড়িয়েছে, মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, বাজারে পেঁয়াজুর দাম বাড়ছে; কিন্তু মকছুদার তাঁর সিদ্ধান্ত বদলাননি। এখনো প্রতিটি পেঁয়াজুর দাম রাখেন এক টাকা।

মকছুদার তাঁর দোকানে পেঁয়াজুর পাশাপাশি রাখেন তেল পিঠা, বেগুনি, পাঁপড়, ধনেপাতার চপ, জিলাপিসহ নানা পদ। এগুলোর দামও দুই থেকে পাঁচ টাকার মধ্যে। প্রতিদিন তিনি চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা বিক্রি করেন। এতে খরচ বাদে তাঁর ৬০০-৮০০ টাকা থাকে। দুপুর ১২টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে তাঁর দোকান।

সরেজমিন দেখা যায়, মকছুদারের দোকানে সন্ধ্যা নামতেই ভিড় জমে যায় মানুষের। কড়াই থেকে গরম পেঁয়াজু, বেগুনি, চপ নামাতেই মুহূর্তে তা গ্রাহকদের হাতে চলে যাচ্ছে। গ্রাহকদের কেউ কেউ বসে, আবার কেউ ফুটপাতে দাঁড়িয়ে খান। চাপ সামলাতে হিমশিম অবস্থা তাঁর।

তাঁর দোকানে কথা হয় ছুট মেনানগর গ্রামের ইকরামুল হকের সঙ্গে। তিনি বলেন, তিনি যখন প্রাইমারিতে পড়েন, তখন থেকে এই দোকানে পেঁয়াজু খান। লেখাপড়া শেষে বাজারে এলে বন্ধুদের নিয়ে তাঁর দোকানের ভাজাপোড়া খান। এখনো স্বাদটা একই আছে।

দিনমজুর জাহের আলী বলেন, বাজারে একটি পরোটা ১০ টাকা, একটি পেঁয়াজু ৫ টাকা। সেখানে মকছুদারের দোকানে এক থেকে পাঁচ টাকায় ভাজাপোড়া পাওয়া যায়। নিজে খাওয়ার পাশাপাশি বাড়ি ফেরার সময় স্ত্রী–সন্তানদের জন্যও নিয়ে যান তিনি।

মকছুদারের প্রশংসা করে বাজারের বয়োজ্যেষ্ঠ সবজি ব্যবসায়ী হামিদ মিয়া বলেন, ২০ বছর ধরে তিনি মকছুদারকে দেখছেন। কাউকে ঠকানোর কথা শোনেননি।

প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে বাজার থেকে প্রয়োজনীয় উপকরণ সংগ্রহ করেন। সেগুলো প্রস্তুত করে দোকান খুলে বসেন। দোকানই তাঁর ভরসা জানিয়ে তিনি বলেন, স্বপ্ন দেখেন একদিন বড় দোকান করার।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এক ট ক

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকায় অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে শনিবার

ঢাকায় দুই দিনব্যাপী অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে আগামী শনিবার। এতে অটোমোবাইল, কৃষি যন্ত্রপাতিসহ হালকা প্রকৌশল খাতের ২৬টি স্টল থাকবে। পাশাপাশি শিল্পের সহায়ক প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকবে আরও ১২টি। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সহযোগিতায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। ঢাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকায় এডিসন প্রাইম ভবনের ছাদে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এই ভবনেই বিসিআইয়ের কার্যালয় অবস্থিত।

আজ বৃহস্পতিবার বিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দুই দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী নিয়ে বিস্তারিত জানান চেম্বারটির সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী। আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী, বিসিআইয়ের পরিচালক মো. শাহেদ আলম, এস এম শাহ আলম, জিয়া হায়দার প্রমুখ।

বিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, হালকা প্রকৌশল খাতে বাংলাদেশে বর্তমানে ছোটবড় প্রায় ৫০ হাজার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই খাতে কাজ করেন ১০ লাখ মানুষ। হালকা প্রকৌশল খাতে স্থানীয় বাজার ১২ বিলিয়ন ডলারের হলেও দেশীয় উৎপাদকেরা অর্ধেক পূরণ করতে পারছেন। তা ছাড়া হালকা প্রকৌশল খাতের বৈশ্বিক বাজারের আকার প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন ডলার। তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাক খাত আর বেশি মূল্য সংযোজন করতে পারবে না। ফলে আমাদের অর্থনীতিকে টেকসই করতে হলে আমাদের অন্য খাতে যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে হালকা প্রকৌশল খাত পারে বড় সম্ভাবনার।

অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর কৃষিজমি কমছে। কৃষকের বয়স বাড়ছে, তার কারণ তরুণেরা খুব কম কৃষিকাজে আসছেন। বিশ্বের অনেক দেশেই মোট জনগোষ্ঠীর ১০ শতাংশের কম কৃষিকাজে নিয়োজিত। ১০ শতাংশ মানুষ বাকি ৯০ শতাংশের জন্য খাদ্য জোগান দিচ্ছে। সে কারণে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। বাংলাদেশেও কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। তবে বড় অংশই আমদানি করতে হচ্ছে।

আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে ১২০০ থেকে ১৫০০ কোটি টাকার কৃষি যন্ত্রপাতির বাজার আছে। তার মধ্যে দেশীয় কোম্পানিগুলো সরবরাহ করছে মাত্র ৪০০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ। নীতিসহায়তা পেলে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ