অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন নিপ্পন ফাউন্ডেশনের প্রধান ইয়োহেই সাসাকাওয়ার। 

দুই নেতা রোহিঙ্গা সংকট, মিয়ানমারে চলমান পরিস্থিতি এবং সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বৈশ্বিক মানবিক সহায়তায় তহবিল হ্রাসের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

বুধবার (২৮ মে) টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে অধ্যাপক ড.

মুহাম্মদ ইউনূসের সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন করেন নিপ্পন ফাউন্ডেশনের প্রধান। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এই তথ্য জানিয়েছে।

আরো পড়ুন:

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই ডাকাত দলের গোলাগুলি, গুলিবিদ্ধ ১

বান্দরবানে ৮ রোহিঙ্গা আটক

অধ্যাপক ইউনূস মিয়ানমারে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও যুদ্ধবিরতি অর্জনে ইয়োহেই সাসাকাওয়ার অবদানের প্রশংসা করেন। 

মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে আঞ্চলিক বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সংঘর্ষ চলমান। ইয়োহেই সাসাকাওয়া নিপ্পন ফাউন্ডেশন ও সাসাকাওয়া পিস ফাউন্ডেশনের প্রধান হিসেবে ইতোমধ্যে মিয়ানমার ভ্রমণ করেছেন ১৫০ বারেরও বেশি। দেশটির সরকার ও ১০০ টির বেশি জাতিগোষ্ঠীর নিকট তিনি অত্যন্ত সম্মানিত।

রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে ও বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিককে নিজ দেশে ফেরাতে সাসাকাওয়ার সহায়তা চান অধ্যাপক ইউনূস। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের অবসান ঘটানো এখন সময়ের দাবি। আমরা একসাথে কাজ করতে পারি।

তিনি বলেন, আমরা জানি, আপনি মিয়ানমারে সব পক্ষের নিকট গভীর শ্রদ্ধার পাত্র।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রতিবছর রোহিঙ্গা শিবিরে প্রায় ৩৫ হাজার শিশু জন্ম নিচ্ছে, যারা কোনো ভবিষ্যতের স্বপ্ন ছাড়াই বড় হচ্ছে। এটি বিস্ফোরক ও বিপজ্জনক রূপ ধারণ করার আগেই আমাদের সহায়তা করুন।

ড. ইউনূস আরো বলেন, মাদক চোরাচালান বৃদ্ধি পাওয়ায় শিবিরগুলোর নিরাপত্তা পরিস্থিতিও অবনতির দিকে।

এছাড়াও ড. ইউনূস আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর.বি)-এর জীবনরক্ষাকারী স্বাস্থ্য গবেষণার জন্য নিপ্পন ফাউন্ডেশনের সহায়তা কামনা করেন, যেটি সম্প্রতি ইউএসএইড-এর অনুদান স্থগিত হওয়ায় চরম আর্থিক সংকটে পড়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ইয়োহেই সাসাকাওয়াকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।

নৈশভোজে আরো উপস্থিত ছিলেন- পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মুর্শেদ।

ঢাকা/হাসান/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সহ য ত ইউন স

এছাড়াও পড়ুন:

ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবে না যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প

ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিকোলাস মাদুরোর দিন ফুরিয়ে এসেছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। খবর বিবিসির। 

ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ করতে যাচ্ছে কিনা জানতে চাইলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সিবিএস নিউজের ৬০ মিনিটসকে বলেন, “আমার সন্দেহ রয়েছে। আমার মনে হয় না। কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করছে।”

আরো পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

ক্যারিবীয় অঞ্চলে মাদক চোরাচালানের অভিযোগে নৌযানগুলোতে মার্কিন হামলা অব্যাহত থাকার মধ্যে ট্রাম্পের এই মন্তব্য এলো। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রে মাদকের প্রবাহ বন্ধ করার জন্য এই হামলা প্রয়োজনীয়।

ট্রাম্প এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন যে, ক্যারিবীয় সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান মাদক বন্ধ করার লক্ষ্যে নয়, বরং ট্রাম্প বিরোধী মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, এটি ‘অনেক কিছু’ সম্পর্কে।

বিবিসির মার্কিন নিউজ পার্টনার সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে ক্যারিবীয় ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিন হামলায় কমপক্ষে ৬৪ জন নিহত হয়েছে।

সম্প্রতি ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে এক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, “মার্কিন হামলায় আপনি যেসব নৌযানে বিস্ফোরণ হতে দেখেন, তার প্রতিটিতে অন্তত ২৫ হাজার মাদকদ্রব্য ধ্বংস হয়। এগুলো যুক্তরাষ্ট্রে মাদক সরবরাহের জন্য দায়ী।”

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্থলপথে ভেনেজুয়েলায় হামলার পরিকল্পনা করছে কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প তা উড়িয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, “আমি এটা বলতে চাই না যে আমি এটা করব...আমি ভেনেজুয়েলার সাথে কী করব, আমি তা করব কিনা, তা আমি বলব না।”

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরো ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করার অভিযোগ তুলেছেন। অন্যদিকে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রোর অভিযোগ, নৌযানগুলোতে হামলা চালানোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র লাতিন আমেরিকায় ‘আধিপত্য বিস্তার’ করার চেষ্টা করছে।

ট্রাম্প জানান, তার সরকার ‘সারা বিশ্ব থেকে’ সন্ত্রাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে ‘আসতে’ দেবে না।

তিনি বলেন, “তারা কঙ্গো থেকে আসে, তারা সারা বিশ্ব থেকে আসে, তারা আসছে, কেবল দক্ষিণ আমেরিকা থেকে নয়। তবে বিশেষ করে ভেনেজুয়েলা- খারাপ। তাদের গ্যাং আছে।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্দিষ্ট করে ভেনেজুয়েলার ‘ট্রেন দে আরাগুয়ার’ নাম উল্লেখ করেন। তিনি এটিকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ গ্যাং’ হিসেবে অভিহিত করেন।

জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউজে ফিরে আসার পর থেকে, ট্রাম্প প্রশাসন মেক্সিকো এবং ল্যাটিন আমেরিকার বেশ কয়েকটি মাদক পাচারকারী সংগঠন ও অপরাধী গোষ্ঠীকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ভেনেজুয়েলার ট্রেন দে আরাগুয়া এবং কার্টেল অব দ্য সানস, যেটি যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট মাদুরো ও তার ঘনিষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তারা পরিচালনা করে। তবে কারাকাস সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ