ডেঙ্গু রোগীর অবস্থা দ্রুত জটিল হচ্ছে
Published: 10th, July 2025 GMT
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত অনেকের শারীরিক অবস্থা দ্রুত জটিল হয়ে পড়ছে। আগের মতো সহজভাবে মোকাবিলা করার পর্যায়ে নেই এই ভাইরাস। ধরন বদলেছে এর। এতে রোগীর অবস্থা দ্রুত খারাপ হওয়ায় চাহিদা বেড়েছে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ)। গতকাল বুধবার রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সভায় এসব কথা বলেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা.
এদিকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪০৬ জন। আর জুলাই মাসের ৯ দিনে মশাবাহিত এ রোগে প্রাণ গেছে ১০ জনের, হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩ হাজার ২৯৮ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে এসব তথ্য।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে গতকালের সভায় ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনায় সহায়ক বিভিন্ন চিকিৎসাসামগ্রী অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এসব সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে– আটটি পোর্টেবল আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন, ২১টি বেডসাইড হেমাটোক্রিট মেশিন ও ১ হাজার ৬০০ পিস কিট।
ডা. আবু জাফর বলেন, পোর্টেবল আল্ট্রাসনোগ্রাম ও বেডসাইড হেমাটোক্রিট মেশিনের প্রয়োজনীয়তা এখন অনেক বেশি। এসব যন্ত্র থাকলে দ্রুত রোগ নির্ণয় ও সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয়, যা চিকিৎসা কার্যক্রমকে গতিশীল করে এবং জটিলতা কমাতে সাহায্য করে। জ্বর হলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সময়মতো চিকিৎসা নিলে জটিলতা এড়ানো সম্ভব।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা ৫২ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে। এ সময়ে ডেঙ্গুতে বরিশাল বিভাগে ১৪, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৫, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগে চারজন করে, রাজশাহী বিভাগে দু’জন এবং ময়মনসিংহ ও ঢাকা বিভাগে একজন করে মারা গেছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত এক দিনে ডেঙ্গুতে মৃত একজন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার। পাশাপাশি এই সময়ে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বরিশাল বিভাগে– ৯৮ জন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ৭৮, ঢাকা বিভাগে ৬৪, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৫৩, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৩৬, খুলনা বিভাগে ৩৫, রাজশাহী বিভাগে ৩১, রংপুর বিভাগে ৫, ময়মনসিংহ বিভাগে ৪ এবং সিলেট বিভাগে দু’জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ডেঙ্গু নিয়ে বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ১ হাজার ৩১৭ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৩৭৪ জন, ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ৯৪৩ জন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হয় ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় ২৬ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টির শিকার: জাতিসংঘ
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ২৬ হাজারের মতো শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। এর মধ্যে শুধু গাজা নগরীতে এই সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি। এসব শিশুর জন্য জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন।
গত মঙ্গলবার জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন জাতিসংঘের শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসি এলাকার মুখপাত্র টেস ইনগ্রাম। মঙ্গলবারই ইসরায়েলি সেনারা গাজা নগরীতে বড় ধরনের স্থল অভিযান শুরু করেছেন।
ইনগ্রাম বলেন, আগস্টে গাজায় প্রতি আট শিশুর একজন মারাত্মক অপুষ্টিতে আক্রান্ত ছিল, যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ হার। গাজা নগরীতে এই অনুপাত প্রতি পাঁচে একজন। তিনি বলেন, গাজা নগরী থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষকে জোরপূর্বক সরানো হচ্ছে। এতে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুদের প্রাণনাশ হতে পারে। ইসরায়েলের স্থল অভিযানের মুখে শহরের পুষ্টিকেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে গেছে।
ইসরায়েলি সেনারা বলছেন, দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসি এলাকায় আশ্রয় নেওয়া মানুষ খাদ্য, ওষুধ ও তাঁবু পাবেন। তবে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই আগ্রাসনে ঘোষিত ‘মানবিক আশ্রয়’ এলাকাগুলোতেও হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। ইনগ্রাম বলেন, ‘গাজায় সাত শতাধিক দিনের যুদ্ধ-ধ্বংসযজ্ঞে প্রায় পাঁচ লাখ শিশুকে এক নরক থেকে আরেক নরকে ঠেলে পাঠানো হয়েছে, যা অমানবিক।’
জাতিসংঘের হিসাবে, গাজা নগরী ও আশপাশের এলাকাগুলোর ১০ লাখ মানুষের প্রায় ৪০ শতাংশ ইতিমধ্যে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।