প্রশ্ন: আমি কিশোরী, বয়স ১৮ বছর হতে চলেছে। কিন্তু দিন দিন আমার কথা বলার জটিলতা বেড়েই চলেছে। অষ্টম শ্রেণি থেকে সমস্যাটা শুরু হয়। সমস্যা বলতে আমি যা বলতে চাই, সেটা ঠিকভাবে প্রকাশ করতে পারি না। অনিচ্ছাকৃতভাবে অন্য কিছু বলে ফেলি। কখনো মাঝপথে কথা আটকে যায়, আবার কখনো হঠাৎ মুখ থেকে এমন কিছু বেরিয়ে যায়, যা আমি বলতে চাইনি। এতে অনেক সময় অন্যরা কষ্ট পায় বা রাগ করে। সব সময় ঠিকভাবে কথা বলা হয়ে ওঠে না। ব্যাপারটা নিয়ে সত্যিই আমি চিন্তিত। আপনারা যদি একটু পরামর্শ দিতেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, ঢাকা

আরও পড়ুনশিশুর কি খেতে, কথা বলতে অসুবিধা হয়? কখন যাবেন ডাক্তারের কাছে১৫ মার্চ ২০২৪

পরামর্শ: ছোটবেলা থেকে এ ধরনের কোনো সমস্যা না থাকলে ধারণা করছি, আপনি বর্তমানে মানসিক চাপ বা স্ট্রেস ডিসঅর্ডারে ভুগছেন। যার কারণে এখন আপনার এই সমস্যা হচ্ছে। তীব্র মানসিক আঘাত পেলে এ ধরনের সমস্যা হতে পারে। আবার স্নায়বিক কোনো রোগ, যেমন: পারকিনসনস ডিজিজ, মস্তিষ্কে নির্দিষ্ট নিউরোট্রান্সমিটার (সেরোটোনিন, ডোপামিন বা হরমোন) ভারসাম্যহীনতা প্রভৃতি কারণেও কথা বলার ক্ষেত্রে এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে আপনার উচিত হবে যত দ্রুত সম্ভব একজন স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া। চিকিৎসকের পরামর্শে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সমস্যাটির প্রকৃত কারণ নির্ণয় করতে হবে। এরপর সে অনুযায়ী যথাযথ চিকিৎসা গ্রহণ করুন। চিকিৎসকের নির্দেশনায় নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ সেবন করলেও এ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।

আরও পড়ুনকথা বলার সময় মুখ থেকে থুতু বেরিয়ে আসে, কী করব?০৯ নভেম্বর ২০২৩.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ