রাজধানীর আদাবরের বাসিন্দা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী রাশিদুল ইসলাম। তাঁর বাসায় বর্তমানে ২০০ লিটারের একটি ফ্রিজ রয়েছে, কিন্তু তাতে পরিবারের প্রয়োজন মেটে না। এ জন্য নতুন একটি ফ্রিজার (ডিপ ফ্রিজ) কেনার পরিকল্পনা করেছেন রাশিদুল। আসছে কোরবানির ঈদের আগেই তিনি ফ্রিজটি কিনবেন। কারণ, এ সময় নতুন মডেলের ফ্রিজ বাজারে আসে, সঙ্গে থাকে বিভিন্ন ধরনের অফার ও মূল্যছাড়।

খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, প্রতিবছর ঈদ মৌসুম এলে ফ্রিজের ক্রেতার সংখ্যা কয়েক গুণ বাড়ে। সারা বছর যত পরিমাণে ফ্রিজ বিক্রি হয়, তার দুই–তৃতীয়াংশ বা ৭০ শতাংশের বেশি ফ্রিজ বিক্রি হয় দুই ঈদে। বিশেষ করে ঈদুল আজহার সময় ফ্রিজারের বিক্রি বাড়ে।

অন্যদিকে ফ্রিজ কেনার ক্ষেত্রে মানুষের রুচিরও পরিবর্তন হয়েছে। আগে ফ্রিজ কেনার উদ্দেশ্য ছিল শুধু খাবার সংরক্ষণ করা। এখন ফ্রিজ মানুষের জীবনযাত্রার অংশ হয়ে উঠেছে। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় এসেছে নতুনত্ব। খাবার কতটা সতেজ রাখা যায়, পরিবেশদূষণ কতটা কমানো যায় কিংবা কতটা বিদ্যুৎ–সাশ্রয়ী হওয়া যায়—এগুলো এখন প্রাধান্য পাচ্ছে। এ জন্য ইনভার্টার প্রযুক্তি, স্মার্ট ফিচার বা ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) সুবিধাযুক্ত ফ্রিজের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।

ফ্রিজ উৎপাদকেরা বলছেন, দেশে ফ্রিজের বাজার প্রতিবছর বড় হচ্ছে। এর কারণ, এক–দেড় দশক আগের তুলনায় এখন মানুষের কর্মসংস্থান ও ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। পাশাপাশি গ্রামপর্যায় পর্যন্ত ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। অনেক পরিবার প্রবাসী আয় পাচ্ছে। কেউ কেউ ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে ফ্রিজ কিনছেন। এসব কারণে দেখা যায়, শহরাঞ্চলের পাশাপাশি গ্রামেও ফ্রিজের হিস্যা বেড়েছে।

বিক্রেতারা জানান, সারা বছর মোট বিক্রি হওয়া ফ্রিজের বড় একটি অংশ যায় মফস্‌সল ও গ্রাম এলাকায়। এ জন্য সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখা গেছে, উপজেলা ও বড় বড় ইউনিয়নেও গড়ে উঠেছে ইলেকট্রনিকস পণ্যের দোকান। এখন শহর বা গ্রামের সাধারণ আয়ের পরিবারেও ফ্রিজ থাকে। আর এই পরিবর্তনে প্রধান ভূমিকা রেখেছে দেশীয় ইলেকট্রনিকস কোম্পানিগুলো।

প্রযুক্তিতে নতুনত্ব

প্রযুক্তির দ্রুত রূপান্তরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ফ্রিজেও যুক্ত হচ্ছে আধুনিক সব সুবিধা। বাজারে এসেছে এমন কিছু নতুন প্রযুক্তির ফ্রিজ, যা শুধু খাদ্য সংরক্ষণেই নয়, বিদ্যুৎ সাশ্রয়, স্মার্ট নিয়ন্ত্রণ ও স্বয়ংক্রিয় ত্রুটি শনাক্তকরণব্যবস্থার মাধ্যমে গ্রাহকদের দৈনন্দিন জীবনকে আরও সহজ করে তুলছে।

মনে করুন, আপনি ঈদের ছুটিতে কয়েক দিনের জন্য বাইরে গেছেন। এখন মোবাইল অ্যাপস ব্যবহার করেই ফ্রিজের তাপমাত্রা কমাতে-বাড়াতে পারবেন। কিংবা ভাবলেন, গান শুনতে শুনতে রান্না করবেন। স্মার্ট ফ্রিজে সেই ব্যবস্থাও রয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, স্মার্ট ফ্রিজ এখন ক্রেতাদের প্রথম পছন্দ। ইনভার্টার প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে এসব ফ্রিজ কম বিদ্যুৎ খরচ করে এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়। পাশাপাশি বিদ্যুৎ চলে গেলে ব্যাটারি ব্যাকআপের সুবিধা রয়েছে। ইন্টারনেট অব থিংস প্রযুক্তির মাধ্যমে ফ্রিজকে মোবাইল অ্যাপের সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। যেমন তাপমাত্রা বাড়ানো বা কমানো যায় আবার দরজা খোলা থাকলে মোবাইলে নোটিফিকেশন আসে। স্মার্ট কনভার্টেবল প্রযুক্তি ব্যবহারকারীকে প্রয়োজন অনুযায়ী ফ্রিজের ফ্রিজার অংশকেও রেফ্রিজারেটর বানিয়ে ব্যবহার করার সুযোগ দেয়। এটি উৎসবে বা খাবার বেশি রাখার সময় খুব কার্যকর। কিছু ফ্রিজে যুক্ত হয়েছে ‘ফ্রেশ জোন’ ও ‘ডিওডোরাইজার’ প্রযুক্তি, যা খাবারকে দীর্ঘক্ষণ টাটকা ও দুর্গন্ধমুক্ত রাখে।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল বলেন, কোম্পানিগুলো গ্রাহকের রুচি ও পছন্দ অনুসারে ফ্রিজে নিত্যনতুন প্রযুক্তি যুক্ত করে যাচ্ছে। বিশেষ করে আমাদের ভিশন ফ্রিজে পরিবেশবান্ধব ও বিদ্যুৎ–সাশ্রয়ী প্রযুক্তিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়।

বাজার কেমন বড়

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস প্রতিবেদনে (২০২৩) বলা হয়েছে, দেশে মোট পরিবার বা খানার সংখ্যা ৪ কোটি ১০ লাখ। এর মধ্যে ৫৩ দশমিক ৪০ শতাংশ পরিবারে অন্তত একটি করে ফ্রিজ রয়েছে। অর্থাৎ অর্ধেকের বেশি পরিবারে ফ্রিজ ব্যবহৃত হচ্ছে। গত দুই বছরে এই হার আরও বেড়েছে।

কোম্পানিগুলো জানিয়েছে, দেশের অভ্যন্তরে প্রতিবছর ২৫–৩০ লাখ ইউনিট ফ্রিজ বিক্রি হয়। সাধারণত এ বাজার বছরে ৫ থেকে ১০ শতাংশ হারে বাড়ে। আর স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এখন বিদেশেও ফ্রিজ রপ্তানি হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে এখন অর্ধশতাধিক দেশে ফ্রিজ রপ্তানি হয়।

ওয়ালটন ফ্রিজের চিফ বিজনেস অফিসার (সিবিও) তাহসিনুল হক বলেন, ‘বর্তমানে ওয়ালটনের ফ্রিজ বিশ্বের ৬৭টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। এর মধ্যে ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কাসহ দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশ এবং আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের বেশ কিছু দেশে আমাদের ফ্রিজ বিক্রি হচ্ছে।’

দুই দশক আগেও দেশে ফ্রিজ বলতে আমদানি করা পণ্যই বোঝাত। এদেশীয় ডিলার বা সরবরাহকারীরা নামীদামি বিদেশি ব্র্যান্ডের ফ্রিজ আমদানি করে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছাত। তবে এসব ফ্রিজের দাম ছিল অনেক বেশি; সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। পরে দেশি একাধিক কোম্পানি ফ্রিজ উৎপাদন শুরু করে। এতে সরকারও শুল্কছাড়সহ নানা ধরনের নীতিসহায়তা দেয়। এর মাধ্যমে দেশি ফ্রিজের বাজার তৈরি হয়েছে। দেশি কোম্পানির সফলতা দেখে অধিকাংশ বিদেশি কোম্পানিও বর্তমানে দেশে তাদের ফ্রিজ সংযোজন বা উৎপাদন শুরু করেছে।

দেশে রেফ্রিজারেটর উৎপাদনের প্রথম উদ্যোগ নেয় দেশীয় প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। তারপর একে একে যমুনা, মিনিস্টার, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, ট্রান্সকম ও ওরিয়ন দেশে কারখানা স্থাপন করে। বর্তমানে ফ্রিজের বাজারে ১৩টির মতো দেশীয় ব্র্যান্ড রয়েছে। এর মধ্যে শীর্ষ ব্র্যান্ডগুলো হচ্ছে ওয়ালটন, যমুনা, ট্রান্সটেক, ভিশন, ইলেকট্রা, মার্সেল, মিনিস্টার, মাই ওয়ান, র‍্যাংগ্স, ওরিয়ন, হাইকো, স্মার্ট, ইকো প্লাস প্রভৃতি।

অন্যদিকে দেশে উৎপাদিত ও সংযোজিত বিদেশি ব্র্যান্ডের ফ্রিজের মধ্যে রয়েছে সিঙ্গার, স্যামসাং, কনকা, এলজি, ওয়ার্লপুল, হায়ার, হিটাচি, হাইসেন্স প্রভৃতি। আর শার্প, প্যানাসনিক, সিমেন্স ইত্যাদি বিদেশি ব্র্যান্ডের ফ্রিজও দেশের বাজারে বিক্রি হয়। যেসব কোম্পানি এখন সংযোজন করছে, তারাও ভবিষ্যতে যন্ত্রাংশ উৎপাদনের পরিকল্পনা করছে। ফ্রিজ উৎপাদন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে বছরে যে পরিমাণ ফ্রিজ বিক্রি হয়, তার মধ্যে দেশি কোম্পানির হিস্যা ৮০–৯০ শতাংশের কাছাকাছি। তার মানে, দেশীয় প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত ফ্রিজ দিয়েই অভ্যন্তরীণ চাহিদার বড় অংশ মিটছে। আবার দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে ফ্রিজ রপ্তানিও হচ্ছে।

যমুনা ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড অটোমোবাইলসের মার্কেটিং ডিরেক্টর সেলিম উল্যা সেলিম বলেন, বর্তমানে শুধু কম্প্রেসর বাদে প্রায় সব যন্ত্রাংশই দেশে তৈরি হয়। কম্প্রেসরেরও কিছু উপকরণ দেশে তৈরি হয়।

বিক্রেতারা জানান, শহর–গ্রামনির্বিশেষে ফ্রিজের বেচাকেনার হার ভালো। তবে পণ্য বিক্রির ধরনে পার্থক্য রয়েছে। যেমন শহর এলাকার গ্রাহকেরা বড় আকারের ফ্রিজ ও ফ্রিজার বেশি কেনেন; বিপরীতে মফস্‌সলের গ্রাহকেরা বেশি কেনেন মাঝারি ও ছোট আকারের ফ্রিজ। বাণিজ্যিক ফ্রিজের বাজারও বাড়ছে। এখন সাধারণ মুদিদোকানে গেলেও এক বা একাধিক ফ্রিজ দেখা যায়।

ঈদকেন্দ্রিক প্রস্তুতি কেমন

বিক্রেতারা জানান, অন্যান্য বছরের মতো এবারের কোরবানির ঈদেও বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছেন তাঁরা। এ মৌসুমে গ্রাহকদের জন্য রাখা হয়েছে নানা অফার। যেমন যমুনার রয়েছে ‘ঈদে ডাবল খুশি অফার’। যেকোনো গ্রাহক ঈদের সময় ২০ হাজার বা এর বেশি টাকার পণ্য কিনলে এই অফার পাবেন। ওয়ালটনের রয়েছে ‘আবারও মিলিয়নেয়ার অফার’। এভাবে অন্যান্য ব্র্যান্ডেরও বিভিন্ন অফার রয়েছে।

ঈদ উপলক্ষে নতুন নতুন মডেল নিয়ে এসেছে ফ্রিজ কোম্পানিগুলো। যেমন এ বছর ওয়ালটন সাতটি নতুন মডেলের ফ্রিজ এনেছে। প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ঈদ মৌসুমে তাঁদের এখন পর্যন্ত সাড়ে ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি রয়েছে। গরম বাড়লে ফ্রিজের বিক্রিও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। এদিকে কোরবানি ঈদের মৌসুমে ডিপ ফ্রিজ তথা ফ্রিজারের চাহিদা বাড়ে। কারণ, এ সময় কোরবানির মাংস রাখার বাড়তি চাপ তৈরি হয়।

তবে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, করোনার পর থেকে ফ্রিজের ব্যবসা কিছুটা উত্থান–পতনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ডলার–সংকট, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি, সুদহার বৃদ্ধি প্রভৃতি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে; কিন্তু সে অনুপাতে ফ্রিজের দাম বাড়াতে পারেনি কোম্পানিগুলো। এসব কারণে ব্যবসায় আশানুরূপ প্রবৃদ্ধি আসছে না। অন্যদিকে মূল্যস্ফীতির কারণে গ্রাহকের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। তাঁরা এখন মানে ছাড় দিয়ে তুলনামূলক কম দামে ফ্রিজ কিনছেন। অনেকেই চাচ্ছেন কিস্তির সুবিধা।

ঈদের সময় নতুন ফ্রিজ বেশি দেখা যায় বাজারে। মডেল: আইরিন ও নীল, স্থান কৃতজ্ঞতা: ট্রান্সকম ডিজিটাল.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র হক র ব যবহ র ক রব ন পর ব র উৎপ দ ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া প্রশ্নে রুল

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ রুল দেন। একই সঙ্গে যেকোনো অপারেটরকে এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব (নিযুক্ত) দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট আইন ও নীতি অনুসারে ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক পাবলিক বিডিং (দরপত্র আহ্বান) নিশ্চিত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

আরও পড়ুননতুন ব্যবস্থাপনায় নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনা শুরু০৭ জুলাই ২০২৫

নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ যুব অর্থনীতিবিদ ফোরামের পক্ষে সংগঠনটির সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন রিটটি করেন। রিটে নৌসচিব, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়।

‘নিউমুরিং টার্মিনালে সবই আছে, তবু কেন বিদেশির হাতে যাচ্ছে’ শিরোনামে গত ২৬ এপ্রিল প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এ প্রতিবেদনসহ এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে এনসিটি পরিচালনায় ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহ্বান করার নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।

আগের ধারাবাহিকতায় ৯ জুলাই রিটের ওপর শুনানি শেষ হয়। সেদিন আদালত ২৩ জুলাই আদেশের জন্য দিন রাখেন। ধার্য তারিখে আদালত আদেশের জন্য ৩০ জুলাই দিন রাখেন। এ অনুসারে আজ বিষয়টি আদেশের জন্য আদালতের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।

আজ মধ্যাহ্নবিরতির পর আদালত আদেশ দেন। আদালত বলেন, শুধু রুল দেওয়া হলো।

আদেশের সময় রিটের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও আহসানুল করিম এবং আইনজীবী কায়সার কামাল ও আনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মহাদ্দেস-উল-ইসলাম।

পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার নতুন দায়িত্ব নিয়েছে নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেড। টার্মিনালটি পরিচালনার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাইফ পাওয়ারটেকের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ৬ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে এ দায়িত্ব নেয় জাহাজ মেরামতের এ প্রতিষ্ঠান। প্রথমবারের মতো বন্দরে টার্মিনাল পরিচালনায় যুক্ত হলো চিটাগং ড্রাইডক।

চট্টগ্রাম বন্দরের বৃহৎ এই টার্মিনাল নির্মিত হয় ২০০৭ সালে। টার্মিনালটি নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি সংযোজনে বন্দর কর্তৃপক্ষ ধাপে ধাপে মোট ২ হাজার ৭১২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কনটেইনারের সিংহভাগ এই টার্মিনাল দিয়ে পরিবহন হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ