‘৯৯৯’-এ ফোনের পর ঢাকা থেকে অপহৃত নারী নরসিংদীতে উদ্ধার
Published: 30th, May 2025 GMT
জাতীয় জরুরি সেবা ‘৯৯৯’ নম্বরে ফোন পেয়ে ঢাকা থেকে অপহরণের সাত ঘণ্টা পর বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নরসিংদীর ঘোড়াশাল এলাকা থেকে এক নারীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি ঢাকার একটি বিউটি পারলারের কর্মী।
বৃহস্পতিবার জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এর গণমাধ্যম ও জনসংযোগ কর্মকর্তা (পুলিশ পরিদর্শক) আনোয়ার সাত্তারের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, বুধবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থেকে এক ব্যক্তি ‘জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯’ নম্বরে ফোন করে জানান তার ভাগনিকে ঢাকার শ্যামলী এলাকা থেকে অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণকারীরা মুক্তিপণ হিসেবে তার কাছে টাকা চাচ্ছেন। ইতিমধ্যে তিনি মোবাইল ব্যাংকিংয়ে তাদের কাছে ২ হাজার ৫০০ টাকা পাঠিয়েছেন। ওই ব্যক্তি তার ভাগনিকে দ্রুত উদ্ধারের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৯৯৯–এ কর্তব্যরত পুলিশ সদস্য তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকার আদাবর থানায় বিষয়টি অবহিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেন। এরপর আদাবর থানা তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে নরসিংদীর ঘোড়াশালে অপহৃত নারীর অবস্থান জানতে পারে। এরপর তাঁরা নরসিংদীর পলাশ থানায় বিষয়টি জানায়। পরে পলাশ থানার পুলিশ ঘোড়াশাল এলাকার একটি কারখানার সামনে থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করে পলাশ থানায় নিয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে যোগাযোগ করা হলে পলাশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কুতুবুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারী বলেছেন, তিনি মিরপুর ১২ নম্বরে একটি বিউটি পারলারের কর্মী। বুধবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মিরপুর ১২ নম্বর থেকে রাইডশেয়ারিংয়ের একটি মোটরসাইকেলে শ্যামলীতে বাসার উদ্দেশে রওনা দেন। তিনি মিরপুর ১০ নম্বর পর্যন্ত যাওয়ার পর তাঁর আর কিছু মনে নেই। একসময় তিনি দেখেন, ওই চালক তাঁকে মোটরসাইকেলে ঘোড়াশালে নিয়ে এসেছেন। মোটরসাইকেলচালক জোর করে তাঁর কাছ থেকে ৫০০ টাকা নিয়েছেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে আরও দুজন যোগ দেন। এরপর চালক তাঁকে একা রাস্তায় রেখে মোটরসাইকেল নিয়ে চলে যান।
পুলিশ কর্মকর্তা কুতুবুল আলম জানান, চালককে শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁর সঙ্গে ঘোড়াশালের দুই বাসিন্দা ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। উদ্ধার হওয়া নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়েছে। তাঁর জবানবন্দিও নেওয়া হয়েছে। তাঁকে বাদী করে মামলা নেওয়ার পর তাকে স্বজনদের জিম্মায় দেওয়া হবে। স্বজনেরা ওই নারীকে নিতে রাজি না হলে আদালতের নিরাপত্তা হেফাজতে পাঠানো হবে। ঢাকায় তাঁর একটি সন্তান রয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে বাসদ কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান, আটক ২২
ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকদের আন্দোলন কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সিলেট কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ২২ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে নগরের আম্বরখানাস্থ বাসদ কার্যালয় থেকে তাদের আটক করে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
বাসদ নেতারা অভিযোগ করেছেন, সকালে নিয়মিত পাঠচক্র চলাকালে হঠাৎ পুলিশ কার্যালয় ঘেরাও করে নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে যায়।
আরো পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের অর্থ সহায়তা দিল শিবির
বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানে এগিয়ে নিতে সিকৃবি উপাচার্যের অঙ্গীকার
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘‘নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আজ (শনিবার) ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকরা নগরে কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করেছিল। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে অভিযোগের সত্যতা মিললে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে। গ্রেপ্তারদের নাম পরবর্তীতে জানানো হবে।’’
বাসদের সিলেট জেলা সভাপতি আবু জাফর বলেন, ‘‘ব্যাটারিচালিত রিকশার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে আজ (শনিবার) চৌহাট্টা থেকে আমাদের পূর্বঘোষিত ‘ভুখা মিছিল’ কর্মসূচি ছিল। কিন্তু শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) রাতে পুলিশ নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপর আমরা কর্মসূচি স্থগিত করি। তবে সব শ্রমিককে তা জানানো সম্ভব হয়নি। সকালে শহীদ মিনার এলাকায় কয়েকজন শ্রমিক জড়ো হন। কিন্তু কার্যালয়ে শুধু পাঠচক্র চলছিল। সেখানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ২২ নেতাকর্মীকে ধরে নিয়ে গেছে।’’
এর আগে একই ইস্যুতে শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) মধ্যরাতে নগরের আখালিয়া কালীবাড়ী এলাকার বাসা থেকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সিলেটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সুমনকেও আটক করে পুলিশ।
গত মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চৌহাট্টা-জিন্দাবাজার সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা শ্রমিকরা। ওই সময় আনোয়ার হোসেন সুমনসহ কয়েকজন বামঘরানার রাজনীতিকও আন্দোলনে অংশ নেন। আন্দোলনকারীরা ব্যাটারি রিকশা চলাচলের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ ১১ দফা দাবি তুলে ধরে তা মেনে নিতে রবিবার (২ নভেম্বর) পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন। সেই আলটিমেটাম শেষ হওয়ার একদিন আগে সিপিবির সুমন ও বাসদের ২২ নেতাকর্মীকে আটক করা হলো।
শনিবার (১ নভেম্বর) বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরী বলেন, ‘‘ব্যাটারি রিকশা শ্রমিকদের আন্দোলনে তৃতীয় পক্ষ ইন্ধন দিচ্ছে। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে সংঘাতের আশঙ্কায় রবিবারের কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।’’
গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে সিলেট মহানগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধে অভিযান শুরু করে পুলিশ। পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরীর উদ্যোগে পরিচালিত এই অভিযানে শতাধিক রিকশা জব্দ ও একাধিক চার্জিং পয়েন্টের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এরপর থেকে নগরে ব্যাটারি রিকশা চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ঢাকা/নুর/বকুল