কুষ্টিয়ার সাবেক এসপি তানভীর আরেক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার
Published: 28th, July 2025 GMT
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় বিএনপি কর্মী কুদরত আলীকে গুলি করে হত্যা মামলার আসামি কুষ্টিয়ার সাবেক পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাতকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে কড়া নিরাপত্তায় কারাগার থেকে এস এম তানভীর আরাফাতকে কুষ্টিয়া আদালতে আনা হয়। এরপর দৌলতপুর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তফা পারভেজের আদালতে হাজিরা করা হয়। এরপর তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে ১টা ৫১ মিনিটে আদালত থেকে তাকে আবার কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ২৬ ডিসেম্বর বিএনপির আরেক কর্মী সুজন মালিথাকে গুলি করে হত্যা মামলার প্রধান আসামি এই পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকে তিনি কুষ্টিয়া কারাগারে আছেন।
আরো পড়ুন:
মেহেরপুরে হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
গজারিয়ায় প্রতিপক্ষের গুলিতে ‘শুটার’ মান্নান নিহত
উপপুলিশ কমিশনার এস এম তানভীর আরাফাত সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে সংযুক্ত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি খুলনার খালিশপুর উপজেলায়। কুষ্টিয়ায় চাকরিকালে বিতর্কিত ছিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। কুষ্টিয়া জেলায় আসার পর থেকে নানা কর্মকান্ডে সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। এমনকি, তখন এ সব কর্মকাণ্ডের জন্য তাকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়। বিভাগীয় শাস্তিও পেতে হয়।
নিহত বিএনপি কর্মী কুদরত আলীর ছেলে বাদী হয়ে ২০২৪ সালের ২ অক্টোবর দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, কুদরত আলী বিএনপির সক্রিয় সমর্থক ছিলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তিনি দলের সঙ্গে আছেন। এ কারণে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ও কিছু সুবিধাভোগী পুলিশ সদস্য কুদরত আলীকে মিথ্যা মামলায় আটক ও হত্যার পরিকল্পনা করে। এই ষড়যন্ত্রের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ পরিদর্শক নিশিকান্ত সরকার, এসআই রোকনুজ্জামান, এসআই মেহেদী হাসান, এসআই শাহজাহান, এএসআই আনিচুর রহমান, পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আহমেদসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা কুদরত আলীকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। ২০২০ সালের ২৩ জুলাই রাত ২টার দিকে ১০-১২ জন পুলিশ কুদরত আলীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। ২৫ জুলাই তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তার বুকের ডান দিকে ও বাম দিকে দুটি গুলির চিহ্ন, দুই হাতে, পিঠে, মুখে ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল।
বাদী মামলায় দাবি করেন, কুদরত আলীকে গুম করে নির্যাতন ও গুলি করে হত্যা করে লাশ হাসপাতালের মর্গে রেখে চলে যায়।
দৌলতপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ জানান, দৌলতপুর থানার একটি মামলায় এস এম তানভীর আরাফাতকে গ্রেপ্তারের আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদন আদালত মঞ্জুর করেছেন।
২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির কর্মী সুজন মালিথাকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে কুষ্টিয়া সাবেক এসপি এস এম তানভীর আরাফাতের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। গত ২৯ সেপ্টেম্বর নিহত সুজনের রাজনৈতিক বড় ভাই সুজন হোসেন (৪২) বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় মোট ১৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
নিহত সুজন মালিথা কুষ্টিয়া সদর উপজেলার টাকিমারা গ্রামের ইসমাইল মালিথার ছেলে।
ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ লতপ র ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
নতুন উপাচার্যের যোগদানে কুয়েটে অচলাবস্থা নিরসনের প্রত্যাশা
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) প্রায় ৫ মাস ধরে ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকায় চলছে অচলাবস্থা। এ অবস্থায় যোগ দিয়েছেন নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাকসুদ হেলালী।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাষ্ট্রপতি ও আচার্যের অনুমোদনক্রমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বৃত্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় শাখার এক প্রজ্ঞাপনে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
এর পরদিনই খুলনায় এসে দায়িত্ব গ্রহণ করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) জ্যেষ্ঠ এই অধ্যাপক বিভিন্ন অনুষদের ডিনদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তার মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে সংকট নিরসনের প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।
আরো পড়ুন:
হুমকি দেওয়া নিয়ে ইবিতে সহ-সমন্বয়ক ও শিক্ষার্থীর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
ডিপিপির দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি রবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের
শিক্ষার্থীরা বলছেন, গত ৫ মাসে কুয়েট লেখাপড়ায় দেশের সব প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিছিয়ে পড়েছে। গত মার্চে ১৯ ব্যাচের শিক্ষাজীবন শেষ হওয়ার কথা ছিল। তারা এখন হতাশ। তাদের অভিভাবকরা আক্ষেপে দিন কাটাচ্ছেন।
নতুন উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, “দায়িত্ব নিয়েই সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলা শুরু করেছি। আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান অচলাবস্থা নিরসনের বিষয়ে সবার বক্তব্য শুনছি, পরামর্শ নিচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শৃঙ্খলা, একাডেমিক পরিবেশ ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় সবার মধ্যে সমন্বয় প্রয়োজন।”
তিনি বলেন, “ডিনদের মধ্যে বৈঠকের পর পার্শ্ববর্তী তিন থানার ওসির সঙ্গে বৈঠক করেছি। এরপর শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গেও কথা বলব। দ্রুত ক্লাস শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্রদল ও বহিরাগতদের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এতে শতাধিক আহত হন। ওই রাতেই হামলাকারীদের পক্ষ নেওয়ার অভিযোগ তুলে তৎকালীন উপাচার্যসহ কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গত ২৫ এপ্রিল উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদকে অব্যাহতি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে ৪ মে থেকে একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করে শিক্ষক সমিতি। এরপর শিক্ষকরা আর ক্লাসে ফেরেননি।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/মেহেদী