Prothomalo:
2025-07-30@10:40:34 GMT

সীমিত অভিলাষের বাজেট যেন হয়

Published: 1st, June 2025 GMT

আগামী বাজেটে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জকে গুরুত্ব দিতে হবে। মূল্যস্ফীতির কারণে যেন বাজেটে চাপ না পড়ে। কর্মসংস্থানের গুরুত্ব যেন পিছিয়ে না পড়ে। কাঠামোগত দুর্বলতা কাটাতে যেন উদ্যোগ থাকে। এ ছাড়া বৈদেশিক বাণিজ্যে এখন যে স্থিতিশীল অবস্থা আছে, তা যেন বজায় থাকে।

আগামী বাজেট সীমিত অভিলাষের বাজেট যেন হয়। অতীতে অর্থমন্ত্রীদের মধ্যে বাজেটের আকার বড় দেখানোর প্রবণতা ছিল।

বাজেটের দুটি দিক আছে। অর্থায়ন কীভাবে হবে, কীভাবে খরচ হবে।

বাজেটের অর্থায়নে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পাশাপাশি এনবিআর–বহির্ভূত খাত থেকে কর আদায় করা হয়। আগামী অর্থবছরে এই দুটি খাত থেকে ৫ লাখ কোটি টাকার বেশি আদায় করা মুশকিল। অতীতে কখনোই এত রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হয়নি। বাজেট–ঘাটতি দুই লাখ কোটি টাকার বেশি যেন না হয়। এই ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব। সব মিলিয়ে বাজেটের আয়ের পরিমাণ ৭ লাখ ২০ হাজার টাকার মতো হতে পারে। এর বেশি খরচের পরিকল্পনা করা হলে অভিলাষ বেশি হয়ে যাবে। এটা তখন ‘স্টেডিয়ামের’ বাইরে চলে যাবে, ‘স্টেডিয়ামের’ মধ্যে থাকতে হবে।

রাজস্ব আদায়ের কৌশল কী হবে, সেটা মূল বিষয়। আমার মতে, প্রত্যক্ষ করের ওপর নির্ভরশীলতা বাড়াতে হবে এবং পরোক্ষ করের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে। তবে আয়করের হার বাড়ানো যাবে না। করজাল বাড়ানোর তত্ত্বকথা বলা সহজ। কিন্তু বাস্তবে করজাল বাড়ানো অনেক কঠিন। এমন বাস্তবতার ওপর নির্ভর আয়কর বাড়ানো কঠিন হবে। তাই কর ফাঁকি বন্ধ করতে হবে। অর্থ উপদেষ্টার এক সাক্ষাৎকারে উনি বলেছেন, এক করদাতার ১০০ কোটি টাকার কর ফাঁকি ধরা পড়েছে। কমিশনারকে ৬০ কোটি টাকা ঘুষ দিয়ে মাত্র ১০ কোটি টাকা কর দিয়ে পার পান। করদাতার সাশ্রয় ৩০ কোটি টাকা। এভাবে ফাঁকি কমাতে হলে দুর্নীতি কমাতে হবে। করনীতির ফাঁকফোকর বন্ধ করতে হবে। কারণ, করনীতির ফাঁকফোকর দিয়ে কর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যোগসাজশ করেন। বলা যায়, করহার ও করজাল না বাড়িয়েও কর আদায় বাড়ানো যায়। করনীতি সরল করতে হবে। তাই কর দেওয়ার ব্যবস্থা অনলাইন করতে হবে।

এদিকে কর অব্যাহতি তুলে দেওয়া হচ্ছে। এত দিন ব্যবসায়ীরা রাস্তায় নামেননি। বাজেটের পর কী হয়, তাই দেখার বিষয়।

এবার দেখা যাক, ব্যয়ের কী অবস্থা। বাজেটে উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া অনেক খরচ কমানো যাবে না। যেমন সুদ খরচ ও সরকারি কর্মচারীদের বেতন–ভাতা। এদিকে মহার্ঘ ভাতার আগামী বাজেটে সাত হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। যেখানে ব্যয় সাশ্রয়ী হতে হবে, তখন এই জাতীয় খরচ বৃদ্ধি পোষায় না। ব্যয় বাজেটের ৮০ শতাংশ কমানোর সুযোগ নেই। ২০ শতাংশ খরচ পুনর্বিন্যাস করা যেতে পারে। বিশেষ করে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ও ভর্তুকি খরচ পুনর্বিন্যাস করার সুযোগ আছে। হয়তো এসব খাতের মোট ব্যয় কমানো যাবে না। তবে খাতের বরাদ্দ পরিবর্তন করা যেতে পারে। যেমন কৃষি যন্ত্রপাতিতে ভর্তুকি দেওয়ার উদ্দেশ্য মহৎ, কিন্তু কার্যকারিতা নেই। মধ্যস্বত্বভোগীরা সব সুবিধা নিয়ে যায়। এডিপিতে অনেক ছোট ছোট অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প আছে। সব মিলিয়ে ব্যয়ের উৎকর্ষ বাড়াতে হবে।

আবার বাজেটের ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক খাত থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হচ্ছে। এত অর্থ সরকার ঋণ নিলে বেসরকারি খাত কি ঋণ পাবে? এ ছাড়া ট্রেজারি বিলের সুদের হার ১১-১২ শতাংশ। ব্যাংকগুলো যদি সরকারি খাতে টাকা রেখে এত সুদ পায়, তবে ঝুঁকি নিয়ে কেন বেসরকারি খাতকে ঋণ দেবে।

জাহিদ হোসেন

সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

লোহাগড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র কারাগারে

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় নড়াইলের লোহাগড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আশরাফুল আলমের জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (৩০ জুলাই) লোহাগড়া আমলী আদালতের বিচারক রত্না সাহা এই আদেশ দেন। নড়াইল আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট আজিজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলা চালায় আওয়ামী লীগ (কার্যক্রম নিষিদ্ধ), যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

আরো পড়ুন:

সমন্বয়ক পরিচয়ে তদবির-হুমকি: যুবককে ২ মাসের কারাদণ্ড

চট্টগ্রাম কারাগার পরিদর্শন: ছবি তোলা নিয়ে যা বললেন ধর্ম উপদেষ্টা

এ সময় ছাত্র-জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে তারা গুলি ছুঁড়ে ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। ১৩ শিক্ষার্থীকে রামদা, বাঁশের লাঠি, লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করা হয়।

এ ঘটনায় ওই বছরের ৯ ডিসেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নড়াইল জেলা শাখার মুখ্য সংগঠক কাজি ইয়াজুর রহমান বাবু বাদী হয়ে ২৯৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো সাড়ে ৩০০ থেকে ৩৫০ জনকে আসামি করে লোহাগড়া থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১৯ নম্বর আসামি করা হয় আশরাফুল আলমকে।

ঢাকা/শরিফুল/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ