যে খাবারগুলো ঈদের সময়ে খাওয়া হয়, কারা খাবেন না
Published: 5th, June 2025 GMT
কোরবানির ঈদ উপলক্ষে আমরা এমন কিছু খাবার খেয়ে থাকি যা অন্য সময় সাধারণত খাই না। যেমন গরু-খাসির কলিজা, পায়া, ভুঁড়ি, মগজ, ঝুরা মাংস ইত্যাদি। এসব খাবারকে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর মনে করা হয়। তবে এ খাবারগুলোর কিছু উপকারও আছে। এটা নির্ভর করে আপনি কী পরিমাণে ও কীভাবে খাচ্ছেন।
গরুর কলিজা
গরুর কলিজা আয়রনের খুব ভালো উৎস। রক্তস্বল্পতা রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন বি১২ ও রিবোফ্লাভিনেরও অন্যতম উৎস। তবে কোলেস্টেরলের পরিমাণ অনেক বেশি থাকায় হৃদ্রোগ, ফ্যাটিলিভার, রক্তে কোলেস্টেরল, গাউট ও ডায়াবেটিসের রোগীদের কলিজা এড়িয়ে চলতে হবে অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে। স্কুলগামী শিশু, গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী মায়েদের জন্য গরুর কলিজা উপকারী। তবে মাসে দুবারের বেশি না খাওয়া ভালো।
পায়া
অনেকের ধারণা, গরু বা খাসির পায়ায় অনেক ক্যালসিয়াম থাকে, যা ভুল ধারণা। পায়ার খাবার উপযোগী অংশের বেশির ভাগই ফ্যাট। তাই এটি খেতে সতর্কতা জরুরি। ফ্যাটিলিভার, হাইপার কোলেস্ট্রেমিয়া, হাইপার টেনশন, হৃদ্রোগ থাকলে পায়া না খাওয়া ভালো। একজন সুস্থ স্বাভাবিক ব্যক্তি মাসে দু-একবার গরুর পায়া খেতে পারেন।
মগজ
গরুর মগজ প্রোটিন, ভিটামিন বি১২ ও বি৬–এর ভালো উৎস। আয়রন ও পটাসিয়াম এবং কিছু ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডও পাওয়া যায়। গরুর মগজে কোলেস্টেরলের পরিমাণও বেশি। তাই হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন ও হাইপারকোলেস্টেরলের রোগীর জন্য মগজ ভালো নয়। সুস্থ স্বাভাবিক ব্যক্তি প্রতি দুই মাসে ২০ থেকে ২৫ গ্রাম মগজ খেতে পারেন।
ভুঁড়ি
অন্যান্য অর্গান মিট অপেক্ষা গরুর ভুঁড়ি খাওয়া কিন্তু বেশ নিরাপদ। ভুঁড়ি প্রোটিনের ভালো উৎস। গরুর ভুঁড়িতে প্রোটিন, ফ্যাট ও কোলেস্টেরল থাকে। এ ছাড়া গরুর ভুঁড়ি পটাশিয়ামের ভালো উৎস। ভুঁড়ির অন্যতম উপাদান কোলাজেন ত্বকের সুরক্ষা দেয়। ফ্যাটের পরিমাণ কিছুটা বেশি থাকায় একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। আবার ভুঁড়ি রান্নার সময় ভোজ্যতেলের ব্যবহার অনেক বেশি হয়। ইউরিক অ্যাসিড ও কিডনির রোগীরা ভুঁড়ি খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
ঝুরা মাংস
কোরবানির ঈদে আমাদের পছন্দের প্রথম সারিতে থাকে ঝুরা মাংস। সাধারণত রান্না মাংস জ্বালাতে জ্বালাতে ঝুরা মাংসে রূপ নেয়। চাইলে আলাদা করেও ঝুরা মাংস রান্না করা যায়। ঝুরা মাংসের পুষ্টিগুণ স্বাভাবিক মাংসের মতোই। তাই স্বাভাবিক মাংসের মতোই ঝুরা মাংস পরিমিত পরিমাণে খাওয়া যাবে। তবে বারবার গরম করার ফলে ট্রান্সফ্যাট তৈরি হওয়ার ঝুঁকি থাকে। হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস ও কোলেস্টেরল থাকলে ঝুরা মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
মো.
ইকবাল হোসেন, জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র কল জ র পর ম পর ম ণ
এছাড়াও পড়ুন:
ফাঁকা রাজধানী, ঘরমুখী মানুষের ভিড় টার্মিনালে
ঈদুল আজহার ছুটি শুরুর আগে বুধবার ছিল শেষ কর্মদিবস। ওই দিন বিকেল থেকেই রাজধানী ছাড়তে শুরু করেন ঘরমুখী মানুষ। গতকাল বৃহস্পতিবার বাস টার্মিনালে ছিল উপচে পড়া ভিড়। আর অনেকেই স্বস্তির জন্য ঢাকা ছাড়ছেন আজ শুক্রবার। এখন বাস টার্মিনালে ভিড় থাকলেও পাল্টে গেছে ব্যস্ততম রাজধানীর চিরচেনা দৃশ্য।
আজ সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সড়কে গণপরিবহন ছিল হাতে গোনা। ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যাও ছিল কম। সড়কে মানুষের উপস্থিতি কম হলেও যাঁরা ছিলেন, গণপরিবহন পেতে তাঁদের ঝক্কি পোহাতে হয়েছে। আছে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগও।
রাজধানীর মহাখালীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন জান্নাতুল ফেরদৌস। ঈদের ছুটিতে গাজীপুরের কোনাবাড়ী যাচ্ছেন তিনি। গাড়ির জন্য দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকার কথা জানালেন জান্নাতুল। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি, গাড়ি পাচ্ছি না। আবার এক-দুটি গাড়ি পেলেও সেখানে অনেক মানুষের ভিড়ে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না। ভাড়াও দ্বিগুণের মতো চাচ্ছে।’
অবশ্য বাস টার্মিনালে ছিল মানুষের ভিড়। উত্তরের পথে দীর্ঘ যানজটের কারণে যাত্রীর চাপ আরও বেড়েছে। আগে টিকিট কেটেও অনেককে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। বেশ ভোগান্তিতে পড়েছেন নারী ও শিশুরা। তবে যাত্রীদের নিরাপত্তায় পুলিশ ও র্যাবের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।
মহাখালী বাস টার্মিনালে রাজশাহী, বগুড়া ও নাটোরগামী ‘একতা’ পরিবহনের টিকিট বিক্রি করছেন সাঈদুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের হাতে বিক্রি করার মতো এখন আর কোনো টিকিট নেই। আমাদের যাত্রীরা এসে বসে আছেন, তাঁরা যেতে পারছেন না। আমাদের গাড়িগুলো যমুনা সেতুর ওপারে জ্যামে আটকে আছে।’
ঈদ সামনে রেখে বাড়ি ফিরছেন মানুষ। ফাঁকা হতে শুরু করেছে রাজধানীর রাস্তাঘাট। শুক্রবার বেলা দেড়টায় রাজধানীর কুড়িলে