নাটোরের বড়াইগ্রাম ও সদর উপজেলায় আলাদা তিনটি সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত এবং অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এসব দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে বেপরোয়া গতি, নিয়ন্ত্রণ হারানো ও দুর্বল সড়ক ব্যবস্থাপনার কথা বলছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার ভোররাত সাড়ে চারটার দিকে বড়াইগ্রামের গুনাইহাটি এলাকায় নাটোর–পাবনা মহাসড়কে চিনিবাহী একটি ট্রাক ও বিপরীত দিক থেকে আসা কাভার্ড ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে কাভার্ড ভ্যানের চালক বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলার জুয়েল মণ্ডল ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। তাঁর সহকারী গুরুতর আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ জানায়, রাস্তা ভেজা থাকায় উভয় চালকই গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারান। এর ফলে সংঘর্ষ এড়ানো সম্ভব হয়নি।
একই সময়ে সদর উপজেলার বারুরহাট এলাকায় মংলা থেকে ছেড়ে আসা নীলফামারীগামী বিআরটিসির একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায়। এতে বাসের যাত্রী আক্তারুজ্জামান (৪২) ঘটনাস্থলেই মারা যান। আহত কমপক্ষে ১০ জনকে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাঁক ঘোরার সময় বাসটির অতিরিক্ত গতির কারনেই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
এর আগে বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নাটোর সদরের দত্তপাড়া মোড়ে একটি পিকআপভ্যানকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় দ্রুতগামী একটি যাত্রীবাহী বাস। এতে পিকআপের সহকারী পাবনার রবিউল ইসলাম (৩০) গুরুতর আহত হন এবং হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়।
বনপাড়া হাইওয়ে থানা পুলিশের পরিদর্শক মাহাবুব রহমান জানান, ‘চালকদের ক্লান্তি, অতিরিক্ত গতি ও ফিটনেসবিহীন যানবাহন সড়ক দুর্ঘটনার পেছনে মূল ভূমিকা রাখছে। নিয়মিত অভিযান ও কঠোর আইন প্রয়োগের মাধ্যমেই দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব।’ এ ছাড়াও, মহাসড়কের সংযোগ সড়কগুলোতে গর্ত ও পর্যাপ্ত সংকেত না থাকায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরও বেড়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: দ র ঘটন ন হত ত ন দ র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
ইউনিয়ন পরিষদে তালা দেওয়ায় মহিলা দলের নেত্রীকে মারধর, অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে
চাহিদামতো ভিজিএফের স্লিপ না পাওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদে তালা দিয়েছিলেন ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়ন মহিলা দলের সভাপতি মালেকা বেগম। ওই ঘটনার জেরে মারধরের শিকার হন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের লোকজন তাঁর ওপর হামলা করেন।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে চাঁচড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম খলিল হাওলাদার বলেন, ভিজিএফের চাল নিতে আসা নারীদের হামলায় মালেকা বেগম আহত হয়েছেন।
এদিকে মালেকা বেগমের ওই অভিযোগের প্রতিবাদে আজ শুক্রবার বিকেলে বিক্ষোভ করেছেন এলাকার লোকজন। বিকেল চারটা থেকে ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মসূচি পালিত হয়।
গত মঙ্গলবার সকালে চাঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদে মালেকা বেগমকে মারধর করা হয়। পরে তিনি তজুমদ্দিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। তিনি ইউপির সাবেক সদস্য। ওই ঘটনা সম্পর্কে মালেকা বেগম বলেন, ‘গত সোমবার ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ইয়াজউদ্দিনের কাছে ঈদে বরাদ্দ ভিজিএফের ১০০টি স্লিপ চেয়েছিলাম। তিনি ৪০ জনের তালিকা দিতে বলেছিলেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। পরদিন মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে তিনি ইউনিয়ন পরিষদে তালা ঝুলিয়ে দেন। তখন ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. ইব্রাহীম হাওলাদারের ভাই কালিমুল্লাহ ও ইউপির দফাদার মো. আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে একদল নারী তাঁকে পিটিয়ে জখম করেন। তাঁরা তাঁর ছবি ফেসবুকেও ছড়িয়ে দিয়েছেন।
এ সম্পর্কে বিএনপি নেতা ইব্রাহীম খলিল হাওলাদার বলেন, ‘ওই দিন (মঙ্গলবার) নারীদের মধ্যে চাল বিতরণের কথা ছিল। তাঁরা এসে পরিষদে তালা মারা দেখেন এবং মালেকা বেগমকে তালা খুলে দিতে বলেন। এ সময় কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে মালেকা বেগম হতদরিদ্র নারীদের কামড়ে ক্ষতবিক্ষত করেন। তখন তাঁরা তাঁকে পিটিয়ে জখম করেন। এ ঘটনায় আমার পরিবারের বা বিএনপির কেউ জড়িত নন।’
চাঁচড়া ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ইয়াজউদ্দিন বলেন, ‘তাঁদের ইউনিয়নে ১ হাজার ৬৭৪ জন হতদরিদ্রের নামে ঈদ উপলক্ষে ভিজিএফের চাল এসেছে। মহিলা সভাপতি (মালেক বেগম) একাই ১০০টি স্লিপ দাবি করেন। তাঁকে বলেছিলাম, আইডি কার্ড জমা দেন, চেষ্টা করব। ঘটনার দিন (মঙ্গলবার) সাড়ে ১০টার সময় পরিষদে গিয়ে জানতে পেরেছি তাঁর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।’
তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহব্বত খান বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে শুনেছি। তবে কেউ অভিযোগ দেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’