বাংলাদেশ এখন গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, টেকসই ও গণতান্ত্রিক পথ কেবল জন–আকাঙ্ক্ষা ও কাঠামোগত সংস্কারের ওপর ভিত্তি করেই প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। তাই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আগে ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণা গুরুত্বপূর্ণ।

ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে আলোচনায় নাহিদ ইসলাম এ কথা বলেন। চীনের দূতাবাসের আমন্ত্রণে নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে এনসিপির প্রতিনিধিদল গতকাল বুধবার দেশটির রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে। প্রতিনিধিদলে ছিলেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আলম ও যুগ্ম সদস্যসচিব তাহসীন রিয়াজ।

এনসিপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক যাত্রা ও সংস্কারপ্রক্রিয়া ঘিরে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিরাজমান আগ্রহ এবং বাংলাদেশের পরিবর্তনশীল ও চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এনসিপির নেতারা বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক রূপান্তর নিয়ে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেছেন। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করে, এমন কাঠামোগত চ্যালেঞ্জগুলোর কথাও তাঁরা তুলে ধরেছেন।

চীনে রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনায় এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, এনসিপি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, একটি টেকসই ও গণতান্ত্রিক পথ কেবল জন–আকাঙ্ক্ষা ও কাঠামোগত সংস্কারের ওপর ভিত্তি করেই প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। এই পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আগে জুলাই সনদ প্রণয়ন ও প্রকাশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেছেন, ‘এই সনদ শুধু একটি নীতিগত দলিল নয়, বরং জুলাই আন্দোলনে যাঁরা রাস্তায় নেমে পরিবর্তনের স্বপ্নে প্রাণ দিয়েছেন, তাঁদের প্রতি আমাদের নৈতিক দায়বদ্ধতাও বটে।’ নাহিদ আরও বলেন, জুলাই সনদ জুলাই আন্দোলনের নির্বাচন সংস্কার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক অংশগ্রহণের একটি সুস্পষ্ট ভিত্তি স্থাপন করবে এবং ভবিষ্যৎ রাজনীতির পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করবে।

বাংলাদেশ এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে অবস্থান করছে উল্লেখ করে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, এনসিপি সরকারের পদক্ষেপ ও অন্যান্য রাজনৈতিক পক্ষগুলোর কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। এনসিপির আশা, জুলাই সনদ প্রণয়ন ও ঘোষণার প্রক্রিয়া আর বিলম্বিত না করে যথাযথ আন্তরিকতার সঙ্গে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে; যাতে শহীদদের আত্মত্যাগ ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আকাঙ্ক্ষা পূর্ণতা পায়।

নাহিদ ইসলাম নির্বাচন কমিশনের কাঠামোগত সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, এনসিপি প্রকৃত অর্থে স্বাধীন ও দলনিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন চায়, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস ও আস্থা ফিরিয়ে আনবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচন এবং পরে গণপরিষদ ও আইনসভার নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি হলে সব পর্যায়ের জনগণের অংশগ্রহণ ও প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহি নিশ্চিত হবে।

চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এনসিপির প্রতিনিধিদলের সামগ্রিক রাষ্ট্র ভাবনাকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানান এবং তাঁদের চিন্তাশীল অংশগ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জানান বলে এনসিপির বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রদূত চীনের হস্তক্ষেপ না করার নীতি (নন-ইন্টারফেয়ারেনস) এবং বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহযোগিতার ব্যাপারে চীনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। চীনের রাষ্ট্রদূত রাজনৈতিক পক্ষগুলোর মধ্যে ধারাবাহিক ও গঠনমূলক সংলাপের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গঠনে তরুণদের ভূমিকাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন হ দ ইসল ম গণত ন ত র ক জ ল ই সনদ র জন ত ক ক ঠ ম গত এনস প র

এছাড়াও পড়ুন:

আইসিটি শ্বেতপত্র প্রণয়নে অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য আহ্বান

আইসিটি খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রণয়নের জন্য তথ্য আহ্বায়ন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় বিষয়টি জানানো হয়।

এতে বলা হয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনক্রমে ২০২৫ সালের ১৭ই এপ্রিল আইসিটি বিভাগের জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। টাস্কফোর্সের নেতৃত্বে রয়েছেন খ্যাতিমান উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. এম. নিয়াজ আসাদুল্লাহ। এই টাস্কফোর্সের মূল উদ্দেশ্য হলো ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আইসিটি খাতে অনিয়ম এবং অপব্যবস্থাপনার তদন্ত ও গবেষণাপূর্বক আইসিটি শ্বেতপত্র প্রণয়ন করা।

বার্তায় বলা হয়, টাস্কফোর্স ইতিমধ্যেই তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে এবং কয়েকটি বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ বৈঠকে শ্বেতপত্র প্রণয়নে নাগরিক ও বিভিন্ন অংশীজনদের সম্পৃক্ত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এরই প্রেক্ষাপটে, কমিটি দেশবাসীর কাছে তথ্য চেয়ে সহযোগিতা কামনা করেছে যাতে একটি তথ্যভিত্তিক ও পূর্ণাঙ্গ শ্বেতপত্র প্রকাশ করা যায়। যদি কারও নিকট আইসিটিখাত সংশ্লিষ্ট কোনো দুর্নীতি বা অনিয়ম সম্পর্কে তথ্য থাকে তাহলে নিচের চ্যানেলগুলো ব্যবহার করে তাদের তথ্য, মতামত ও প্রস্তাবনা দিতে পারবেন। পাশাপাশি সকল প্রকল্পের অনুমোদন ও বাস্তবায়নের ধাপে আইনি ব্যত্যয় বা অনিয়মের প্রমাণ যেমন টেন্ডার প্রক্রিয়ায় কারসাজি, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রকল্প স্থান নির্ধারণ ইত্যাদি সম্পর্কেও তথ্য দেয়া যাবে।

তথ্য, মতামত ও প্রস্তাবনা পাঠানো যাবে ই-মেইল: [email protected] 
ফেসবুক: www.facebook.com/ictwhitepaperbd2025
লিংকডইন:www.linkedin.com/company/ictwhitepaperbd2025 

এছাড়াও টাক্সফোর্স প্রধান, রুম ৭০৭, ৭ম তলা, আইসিটি টাওয়ার, আগারগাঁও, ঢাকা ১২০৭ এ সরাসরি তথ্য জমা দেয়া যাবে। পাশাপাশি ভবনের নিচ তলায় একটি পরামর্শ বাক্স স্থাপন করা হয়েছে।

বার্তায় বলা হয়, কমিটি প্রাপ্ত তথ্য যথাযথ গোপনীয়তা ও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।

ঢাকা/হাসান/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা খাতে বরাদ্দ যুক্তিযুক্ত হওয়া চাই
  • ক্ষমতায় গেলে পরিবেশ রক্ষায় ৫ পদক্ষেপ নেওয়ার অঙ্গীকার তারেক রহমানের
  • আইসিটি শ্বেতপত্র প্রণয়নে অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য আহ্বান
  • আইসিটি খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য আহ্বান