ব্রাজিলে পা রেখেই তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন– ‘মেক ব্রাজিল চ্যাম্পিয়ন অ্যাগেইন’। ব্রাজিল ফুটবলের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়েছেন কার্লো আনচেলত্তি। ব্রাজিলের এই ইতালিয়ান কোচের সেই মিশনের প্রথম ম্যাচ ইকুয়েডরের বিপক্ষে।

শুক্রবার বাংলাদেশ সময়  সকাল ৫টায় শুরু হবে ইকুয়েডরের বিপক্ষে আনচেলত্তির নতুন ব্রাজিলের ম্যাচ। ইউরোপিয়ান কোচের অধীনে ব্রাজিলের ফুটবলশৈলী দেখার অপেক্ষায় সেলেসাও সমর্থকরা। বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের এই ম্যাচটি ব্রাজিলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

এ মুহূর্তে চার নম্বরে রয়েছে ব্রাজিল। তবে যাদের সঙ্গে শুক্রবার মুখোমুখি হবেন ভিনিরা, সেই ইকুয়েডর রয়েছে তাদের চেয়েও ভালো পজিশনে– দুই নম্বরে। যদিও রেকর্ড বলছে, লাতিন এই প্রতিপক্ষ সেভাবে কখনোই দাপট দেখাতে পারেনি ব্রাজিলের সামনে।

একুশ বছর আগে তারা ব্রাজিলকে হারাতে পেরেছিল। তবে রেকর্ড এটাও বলছে যে ঘরের মাঠে ইকুয়েডর শেষ সাত ম্যাচ অপরাজিত। তাই গোয়াকুইলের মাঠটিতে অন্য রকম এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে আনচেলত্তির ব্রাজিল।

ম্যাচ শুরুর আগে সমর্থকদের কৌতূহলের জায়গায় থাকছে আনচেলত্তির শুরুর একাদশ নিয়ে। আনচেলত্তির ফরমেশন নিয়েও আগ্রহ রয়েছে অনেকের। ও গ্লোবোর খবর, ইকুয়েডরের বিপক্ষে ৪-২-৩-১ ফরমেশনে মাঠ সাজাতে পারেন আনচেলত্তি। যেখানে রক্ষণে অভিজ্ঞ মার্কুইনহোস ও অ্যালেক্স সান্দ্রোর সঙ্গে থাকতে পারেন ভ্যান্ডারসন ও প্রথমবার ডাক পাওয়া লিলির অ্যালেক্সসান্দ্রো।

মাঝমাঠে নতুন কোচ ভরসা রাখতে চাচ্ছেন অভিজ্ঞ ক্যাসিমিরোর ওপর। ব্রুনো গিমারেজের সঙ্গে ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে সক্ষম জেরসনকে নিয়ে হতে পারে মিডফিল্ড ত্রয়ী। আক্রমণভাগে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র থাকছেন। তার সঙ্গে রাফিনিয়া হবেন কোচের প্রথম পছন্দ। তবে ইকুয়েডরের বিপক্ষে কার্ড জটিলতায় নিষেধাজ্ঞা থাকায় খেলতে পারবেন না রাফিনিয়া। ১৮ বছর বয়সী এস্তেভাও উইলিয়াম নিতে পারেন রাইট উইঙ্গারের দায়িত্ব।

এ পর্যন্ত ব্রাজিলের শুরুর একাদশ নিয়ে খুব একটা সমস্যা থাকার কথা নয়। তবে গ্লোবো দাবি করেছে, অনুশীলনে আনচেলত্তি যে শুরুর একাদশ পরোখ করেছেন সেখানে স্ট্রাইকার পজিশনে ছিলেন সাবেক ক্লাব শিষ্য রিচার্লিসন। টটেনহ্যাম স্ট্রাইকার ছন্দে নেই অনেকদিন। তার জায়গায় আর্জেন্টিনার বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচে গোল করা ম্যাথিউস কুনিয়াকে দেখতেই পছন্দ করবেন ভক্তরা। কুনিয়া প্রিমিয়ার লিগে ১৫ গোল করা স্ট্রাইকার।

তবে রিচার্লিসনের আত্মবিশ্বাস ফেরানোর চেষ্টাকে অবহেলার সুযোগ নেই। হেডে দক্ষ হওয়ায় দলে গুরুত্বপূর্ণ তিনি। ইউরোপে খেলা ব্রাজিলের বেশির ভাগ অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের ওপর তিনি বাজি রাখতে চান। এ মুহূর্তে ম্যাচ খেলার ফিটনেস না থাকায় নেইমারকে দলে রাখেননি ডন কার্লো। তবে বিশ্বকাপ দলে অবশ্যই তাকে চান ইতালিয়ান কোচ।

ব্রাজিলের সম্ভাব্য শুরুর একাদশ: অ্যালিসন (লিভারপুল), অ্যালেক্স সান্দ্রো (ফ্লামেঙ্গো), মার্কুইনহোস (পিএসজি), অ্যালেক্সসান্দ্রো (লিলি), ভ্যান্ডরসন (মোনাকো), ক্যাসেমিরো (ম্যানইউ), ব্রুনো গিমারেজ (নিউক্যাসল), জেরসন (ফ্লামেঙ্গো), ভিনিসিয়াস (রিয়াল মাদ্রিদ), রিচার্লিসন (টটেনহ্যাম), এস্তেভাও উইলিয়াম (পালমেইরাস)। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব র জ ল ফ টবল ব শ বক প ব ছ ই

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদ সামনে রেখে মিষ্টির চেয়ে দইয়ের বিক্রি বেশি

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে মিষ্টি ও মিষ্টিজাতীয় পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। তবে এবার বাজারে মৌসুমি ফল আম, জাম ও লিচুর আধিক্য থাকায় মিষ্টির বিক্রি কিছুটা কম বলে জানিয়েছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা। তাঁরা জানান, মিষ্টির চাহিদা কম থাকলেও দইয়ের বিক্রি বেড়েছে।

বিক্রেতারা বলছেন, কোরবানির ঈদে মিষ্টির চেয়ে দইয়ের চাহিদা বেশি থাকে। এ বিষয়ে আমলের সহকারী এরিয়া ম্যানেজার রেজাউল হাসান বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে আমাদের প্রতিষ্ঠানে মিষ্টির চেয়ে দই বেশি বিক্রি হচ্ছে। সাধারণ সময়ে আমাদের প্রতিটি শাখায় ২০ থেকে ২৫ হাঁড়ি (১ কেজি) দই বিক্রি হয়। ঈদকে সামনে রেখে এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ হাঁড়ি দই। তবে সব মিলিয়ে এবারের মিষ্টি বিক্রি আগের বারের তুলনায় প্রায় অর্ধেক।’

মিষ্টির দোকানিরা বলছেন, ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুকে ঘিরে সবার ব্যস্ততা থাকে। এ কারণে ঈদে অতিথিও কম থাকে। মিষ্টি প্রস্তুতকারক ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান বিক্রমপুর মিষ্টান্ন ভান্ডারের কলাবাগান শাখার ব্যবস্থাপক অনিক ঘোষ বলেন, ‘আমরা ঈদ মৌসুমে যে রকম মিষ্টি উৎপাদন করে থাকি, এবারও সে রকম প্রস্তুতি নিয়েছি। তবে সেই তুলনায় বিক্রি অনেক কম। কয়েক মাস ধরে মিষ্টির বিক্রি কমেছে। সব মিলিয়ে মিষ্টি বিক্রি অতীতের যেকোনো ঈদের সময়ের তুলনায় অর্ধেক।’

মিষ্টি তৈরি ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান প্রিমিয়াম সুইটসের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক খলীলুর রহমান ১৯ বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটিতে কাজ করছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘এ বছর বিগত যেকোনো বছরের তুলনায় বিক্রি কম। আমাদের বেশির ভাগ ক্রেতা উচ্চবিত্ত শ্রেণির। সরকারি লম্বা ছুটির সুযোগে তাঁদের বেশির ভাগই দেশের বাইরে ঈদের ছুটি কাটাতে গেছেন। তাই প্রত্যাশার মাত্র ১০ শতাংশ বিক্রি হয়েছে।’

এ ছাড়া এবার বাজারে গ্রীষ্মের মৌসুমি ফলের সরবরাহও প্রচুর। বাজারে আম, জাম, লিচুসহ সব ধরনের ফলের সরবরাহ বেশি থাকায় দামও তুলনামূলক অন্যান্য বারের চেয়ে কম। এ সময়ে তাই অনেকে মিষ্টির বদলে অতিথি আপ্যায়নে মৌসুমি ফল বেছে নিয়েছেন। এটিও মিষ্টির চাহিদা কমে যাওয়ার কারণ বলে মনে করছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা।

রাজধানীর শ্যামলীর বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী তানিয়া রহমান। ঈদের আগের দিন বাবার বাসায় বেড়াতে যাবেন বলে মিষ্টি কিনতে যান বিক্রমপুর মিষ্টান্ন ভান্ডারে। এক কেজি মিষ্টির পাশাপাশি কিনলেন দুই হাঁড়ি (১ কেজি) টক দই। তিনি জানান, বাসায় মা–বাবা দুজনেরই ডায়াবেটিস। তাই আগে হয়তো মিষ্টি বেশি খাওয়া হতো। তবে এখন টক–মিষ্টি দইকে বেশি প্রাধান্য দেন।

বাংলাদেশ সুইট ম্যানুফ্যাকচার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, বর্তমানে ডায়াবেটিসসহ নানা ধরনের অসুস্থতার কারণে মানুষ অনেক বেশি স্বাস্থ্য সচেতন। তাই মিষ্টি বিক্রি গত কয়েক বছর থেকেই ধীরে ধীরে কমছে। এ ছাড়া বিগত কয়েক বছরের তুলনায় মানুষের অর্থনৈতিক সক্ষমতাও কিছুটা কমেছে। এবার মৌসুমি ফলের উৎপাদন ভালো হয়েছে। এক কেজি ভালো মিষ্টি কিনতে গেলে ৬০০ টাকা খরচ হয়। সেই তুলনায় দেশীয় ফলের দাম কম। তাই মিষ্টির বদলে অনেকে ফল কিনছেন। তবে ঈদের দিনে বিক্রি কিছুটা বাড়তে পারে বলে আশা করছেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ