আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত পল্লী বিদ্যুতের কর্মীদের, ফিরছেন কাজে
Published: 5th, June 2025 GMT
দাবি আদায়ে টানা ১৬ দিন শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালনের পর সরকারের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করেছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) কর্মীরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক প্রজ্ঞাপনের পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন তাঁরা।
মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে আন্দোলনরতদের দাবি ‘সংবেদনশীলতা এবং সহানুভূতির সাথে বিবেচনা’ এবং এ নিয়ে কমিটি গঠনের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশন ব্যানারে আন্দোলন করছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা। তাঁদের সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) চেয়ারম্যানের পদত্যাগ; এক ও অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আরইবি ও পবিস একীভূত করে অন্য বিতরণ সংস্থার মতো পুনর্গঠন; মিটার রিডার, লাইন শ্রমিক এবং পোষ্য কর্মীদের চাকরি নিয়মিত করা।
এ আন্দোলনের নেতৃস্থানীয় একজন জামালপুর সদরের লাইনম্যান মো.
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ন্যায় অভিন্ন চাকরিবিধি প্রণয়নসহ আরইবি ও পবিসের একীভূতকরণ অথবা অন্যান্য বিদ্যুৎ বিতরণী সংস্থার ন্যায় কোম্পানি গঠনের বিষয়ে উত্থাপিত দাবি পর্যালোচনার লক্ষ্যে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করা হবে। এই কমিটি বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ বিবেচনাসহ অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনাক্রমে প্রতিবেদন দাখিল করবে। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সরকার সম্ভাব্য স্বল্পতম সময়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, সকল চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিতদের চাকরি নিয়মিত করার বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে। এই কমিটির প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সম্ভাব্য স্বল্পতম সময়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
এ ছাড়া সকল মামলা প্রত্যাহারপূর্বক চাকরিচ্যুতদের স্বপদে পুনর্বহাল এবং সংযুক্ত ও সাময়িক বরখাস্তকৃত এবং অন্যায়ভাবে বদলিকৃত কর্মীদের পদায়নের বিষয়টি সংবেদনশীলতা ও সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করা হবে বলেও মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
এরপর আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনদাবি না মানলে ‘গণছুটি’তে যাওয়ার হুঁশিয়ারি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীদের৫ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর ম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
পল্লী বিদ্যুতের সরবরাহ ব্যবস্থা বিপর্যয়ের মুখে
বিপর্যয়ের মুখে পল্লী বিদ্যুতের সরবরাহ ব্যবস্থা। আজ থেকে শুরু হচ্ছে ঈদের ছুটি। এর আগেই গতকাল মঙ্গলবার থেকে সারাদেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গণছুটিতে যান। ফলে দেশের অনেক স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা না থাকায় সরবরাহ ব্যবস্থা মেরামত কাজও করা যাচ্ছে না। সারাদেশে প্রায় ৪৮টি সমিতিতে বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। অনেক এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন দেড় কোটি গ্রাহক। কয়েকটি স্থানে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে হামলা চালিয়েছেন গ্রাহকরা।
দেশের বেশির ভাগ অঞ্চলে ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিতরণ করছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। দেশের ৪ কোটি ৮২ লাখ বিদ্যুৎ গ্রাহকের মধ্যে আরইবির গ্রাহক ৩ কোটি ৬৮ লাখ। দেশজুড়ে সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ৪৫ হাজার। আরইবি ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি একীভূতকরণ এবং অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন, চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মচারীদের স্থায়ী নিয়োগসহ নানা দাবিতে গত জানুয়ারি থেকে আন্দোলন করছেন সমিতির কর্মীরা। এর ধারাবাহিকতায় গত ২১ মে থেকে শহীদ মিনারে অবস্থান করছেন কয়েক হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী। আন্দোলনে গত কয়েক দিনে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন সংহতি জানিয়েছে। আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, এখন আর পেছনে ফেরার উপায় নেই। আমরা দাবি আদায় করেই ঘরে ফিরব। কাজে ফিরব।
এ বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, তারা যেসব দাবি তুলে ধরেছেন, সেগুলো পূরণ করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। যেমন– পল্লী বিদ্যুৎ ও সমিতি একীভূত করা। এখানে আইনি নানা বিষয় রয়েছে। শহীদ মিনারে বসে থাকলে তো চলবে না। আবার তারা আরইবির চেয়ারম্যানের অপসারণ চেয়েছে। সরকার তো সমাবেশ দেখে কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না।
বিদ্যুৎ নেই অনেক এলাকায়
সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ ও ২, গাইবান্ধা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে গণছুটির কারণে লাইনম্যানরা কাজ করছেন না। ফলে ঝড়বৃষ্টিতে যে সব স্থানে লাইন বন্ধ হয়েছে, তা আর চালু করা সম্ভব হবে না। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম-২ সমিতির লাইনম্যানরা কাজ বন্ধ রাখেন। এতে কয়েকটি উপকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া লক্ষ্মীপুরে পবিসের সব লাইনম্যান কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।