কালুরঘাট সেতুতে একাধিক যানবাহনকে ট্রেনের ধাক্কা, নিহত ৩
Published: 6th, June 2025 GMT
কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা ঢাকামুখী পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেন ধাক্কা দিয়েছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও কয়েকটি মোটরসাইকেলকে। এ ঘটনায় শিশুসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ছয়জন। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রামের কালুরঘাট রেল সেতুর ওপর ঘটনাটি ঘটে। চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ওসি শহীদুল ইসলাম দুর্ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ট্রেন চালক সিগনাল অমান্য করে দ্রুত গতিতে সেতুতে উঠে যাওয়ায় এই দুর্ঘটনা বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের একাধিক কর্মকর্তা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা।
আরো পড়ুন:
রাশিয়ায় সেতু ধসে পড়ে লাইনচ্যুত ট্রেন, নিহত ৭
ময়মনসিংহে ধসে পড়েছে গহুর মোল্লার ব্রিজ, যোগাযোগ বন্ধ
নিহতরা হলেন- সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক তুষার (৩২) ও যাত্রী মেহেরিমা নুর আয়শা (২)। অপর নিহতের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কক্সবাজার থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছেড়ে আসে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে কালুরঘাট সেতুর অদূরে পৌঁছায় ট্রেনটি। এ সময় রেলের সিগন্যালম্যান সব যানবাহন থামিয়ে দেন। তবে, একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নষ্ট হওয়ায় কয়েকটি যানবাহন সেতুর ওপর আটকে থাকে। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় সেতুতে উঠার আগেই ট্রেন থামাতে লাইনম্যানসহ অনেকেই সংকেত দেন। ট্রেন চালক সংকেত অমান্য করেন।
ট্রেনটি সেতুতে উঠে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও কয়েকটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই অটোরিকশার চালক তুষার ও যাত্রী মেহেরিমা নুর আয়শাসহ তিনজন মারা যান। অন্তত ৬ জন আহত হন। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জালানিহাট স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত গার্ড মো.
কালুরঘাট ফায়ার স্টেশনের ফায়ার ফাইটার আমিনুল ইসলাম বলেন, “রাত পৌনে ১১টার দিকে আমরা খবর পেয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু করি।”
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরুল আলম আশেক বলেন, “কালুরঘাট সেতুতে একটি ট্রেন বিভিন্ন যানবাহনকে ধাক্কা দেয়। পাঁচজনকে ক্যাজুয়ালটি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।”
রেলওয়ে জালানিহাট স্টেশন মাস্টার মো. নেজাম উদ্দিন বলেন, “পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি কক্সবাজার থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ছেড়ে আসে। রাত ১০টা ১০ মিনিটে এটি কালুরঘাট রেলসেতুর অদূরে পৌঁছায়। ওই সময় সেতুর ওপরে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নষ্ট হয়ে গেলে যানজট তৈরি হয়। আমরা তখনই লাল সিগন্যাল দেই। গার্ডও হাতে লাল পতাকা নিয়ে সিগন্যাল দেন। ট্রেন চালক সিগন্যাল মানেননি।”
তিনি আরো বলেন, ‘কালুরঘাট ব্রিজটি ডেড স্টেপেজ হিসেবে চিহ্নিত। এখানে ট্রেন থামিয়ে ধীরে ব্রিজে ওঠার নিয়ম। চালক তা মানেননি।”
শত বছরের পুরনো কালুরঘাট রেল সেতুটি সংকীর্ণ হওয়ায় উভয় দিক থেকে একইসঙ্গে যানবাহন চলাচল করতে পারে না। ট্রেন আসার পূর্বে উভয় দিক থেকে যানবাহন পারাপার বন্ধ করে দেওয়া হয়। ট্রেন না আসলেও স্বাভাবিক সময়ে একদিক বন্ধ রেখে অপর একদিক থেকে যানবাহন চলাচল করাতে হয়।
ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন হত দ র ঘটন আহত ট র ন চ লক স ট র নট র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে অংশ নেবেন খালেদা জিয়া: আবদুল আউয়াল মিন্টু
এ বছরের ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে তাতে অংশ নেবেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আজ বুধবার ফেনীতে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু।
আজ দুপুরে ফেনী শহরের একটি মিলনায়তনে ‘বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পের পুনর্বাসন’ শীর্ষক প্রকল্পের অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথাগুলো বলেন মিন্টু। তিনি বলেন, ‘বিশ্বাস করতে চাই, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হবে। দেশে এখন যে অবস্থা ফেব্রুয়ারি আগেই নির্বাচন হতে পারে। হয়তো জানুয়ারিতেও হয়ে যেতে পারে। কেয়ারটেকার সরকার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটা ডেট পেন্ডিং আছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রবর্তন হলে তার অধীনে ৯০ দিনে নির্বাচন হবে। সে ক্ষেত্রে ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন।’
আবদুল আউয়াল মিন্টু আরও বলেন, দেশে যদি এক যুগ, দুই যুগ ধরে নির্বাচিত সরকার না থাকে, তবে মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জানমালের উন্নয়ন হবে না। একটি দেশের সরকার যদি জনগণের কাছে দায়বদ্ধ না থাকে তাহলে তারা কখনো ভালো কাজ করবে না।
আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘২০০৬ সাল থেকে আমরা নির্বাচন চেয়ে আসছি। ১৯ বছর ধরে আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আন্দোলন–সংগ্রাম করে যাচ্ছি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন লন্ডনে যোগাযোগ করেছেন। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যৌথ বিবৃতি দিয়েছিল। প্রধান উপদেষ্টা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা সেটিতে আস্থা রাখতে চাই। আমরা চাচ্ছি, দ্রুত নির্বাচনটি হোক।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘নির্বাচনে ফেনীর অতীত ইতিহাস সবাই জানে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এখানে বিএনপি জয়লাভ করবে। আমাদের দলের নেত্রীও (খালেদা জিয়া) নির্বাচন করবেন। তিনি এখন সুস্থ আছেন।’
পরে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু ফেনীর মুহুরী-কহুয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পের পুনর্বাসন (১ম পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পের অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন।
ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ওরফে ভিপি জয়নাল, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ রেহানা আক্তার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম, পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান প্রমুখ।