পাওনা টাকা চাওয়ার জেরে প্রবাসীর ভাইকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ
Published: 7th, June 2025 GMT
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী পৌর এলাকায় পাওনা টাকা ফেরত চাওয়ায় মো. জিদনী মিয়া (১৭) নামে প্রবাসীর এক ছোটভাইকে কুপিয়ে জখম করে প্রতিপক্ষ। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সে মারা যায়।
নিহত যুবক পৌর এলাকার ভরারদিয়া গ্রামের মৃত ধলু মিয়ার ছেলে। সে কটিয়াদী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভরারদিয়া গ্রামের ছালামিন ও চড়িয়াকোনা গ্রামের অভিযুক্ত ফয়সালের আত্মীয়তার সম্পর্ক আছে। ধলু মিয়ার চার ছেলের মধ্যে তিন জন প্রবাসে থাকেন। চড়িয়াকোনা গ্রামের রতন মিয়ার ছেলে ফয়সাল আত্মীয়তার সুযোগে বিশেষ প্রয়োজনে প্রবাসী ছালামিনের কাছ থেকে বেশ কিছুদিন আগে ৫০ হাজার টাকা ধার নেয়। কিন্তু দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও টাকা ফেরত দেয় না। টাকা চাইলে নানা টালবাহানা করে। সম্প্রতি ছালামিন বাড়িতে আসার পর ফয়সালের কাছে পাওনা টাকা ফেরত চায়। এ নিয়ে উভয়ের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়। এতে ফয়সাল টাকা না দিয়ে উল্টো প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দেয়। ইতোমধ্যে ছালামিনের ছুটি শেষ হয়ে গেলে সে তার কর্মে প্রবাসে ফিরে যায়।
গত বুধবার দিবাগত রাতে জিদনী তার বাড়ির পাশে আল্লাদু পাগলার আস্তানার পাশে চায়ের দোকানে বসে চা পান করার সময় ফয়সালের সঙ্গী তাকে চায়ের দোকান থেকে ডেকে বাড়ির অদূরে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ফয়সাল কয়েকজন সঙ্গী নিয়ে অপেক্ষা করে। জিদনী সেখানে যাওয়ার সাথে সাথে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর জখম করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। জিদনীকে উদ্ধার করে প্রথমে বাজিতপুর বেসরকারি হাসপাতালে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। সেখানে চিকিৎসার এক পর্যায়ে পুনরায় বাজিতপুর বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসার সময় অবস্থার অবনতি ঘটে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
শুক্রবার সকালে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে বিকালে জানাজার পর পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
নিহতের বোন ময়না আক্তার বলেন, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ভাই হত্যার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
কটিয়াদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রব স ক প য় হত য প রব স ফয়স ল
এছাড়াও পড়ুন:
ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩
ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ।
রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
আরো পড়ুন:
নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের
কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের
শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”
তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।”
শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।
মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।
তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি। ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।
ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।
যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।
ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ