নির্বাচনের আগেই জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র দিতে হবে: হাসনাত আব্দুল্লাহ
Published: 9th, June 2025 GMT
নির্বাচনের আগেই জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের ঘোষিত ‘এপ্রিলের প্রথমার্ধে’ সাধারণ নির্বাচনের দিনক্ষণকে আমরা ইতিবাচক হিসেবে দেখছি। তবে এর পূর্বে জুলাই সনদ কার্যকর ও ঘোষণাপত্র দেওয়ার কথা, সেটা অবশ্যই দিতে হবে। এছাড়াও নির্বাচন হওয়ার পূর্বে অবশ্যই ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত করতে হবে।
রোববার রাতে সাংবাদিকদের সাথে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে তিনি দেবিদ্বার সরকারি রেয়াজ উদ্দিন মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ২০১৪ ব্যাচের আয়োজনে সামাজিক সংগঠন ‘ইনসাফ’র আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে মেজবান অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
এনসিপি নেতা বলেন, আমরা সুন্দর ও ভালো একটি বাংলাদেশ দেখার অপেক্ষায় আছি। এটা করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। যারা পলিটিক্স করেন তাদের সকলের দায়িত্ব রয়েছে। ফ্যাসিবাদ বিরোধী প্রতিটি রাজনৈতিক দলেরও দায়িত্ব রয়েছে।
দলীয় কার্যক্রম সম্পর্কে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, এনসিপি বর্তমানে সাংগঠনিক বিস্তারের মনোযোগ দিচ্ছে। আমরা সারা দেশে বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে আমরা যাচ্ছি। আমাদের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে সাংগঠনিক বিস্তার সৃষ্টি করা। আমাদের সংগঠনের রেজিস্ট্রেশনের কিছু বিষয় রয়েছে, আমরা এ মাসের মধ্যেই এসব সম্পন্ন করতে চাই। এনসিপি বাংলাদেশের গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাবে।
হাসনাত আব্দুল্লাহ আরও বলেন, সারা বাংলাদেশে মানুষের মধ্যে একটি স্বচ্ছ রাজনৈতিক চর্চার প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। সারা বাংলাদেশের গ্রাম-গঞ্জে আমরা যেখানেই যাই অভূতপূর্ব সাড়া পাচ্ছি। আমাদের বাংলাদেশের দায়িত্ব যে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে পালন করতে হবে যেন একটি সঠিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন হয় এবং সেটির জন্য সকল ফ্যাসিবাদ বিরোধী রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যেতে হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এনস প জ ত য় ন গর ক প র ট আম দ র এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
৫ ঘণ্টা ২৯ মিনিটের রূপকথা লিখলেন আলকারাজ
মিউনিখে না হয় ট্রফি স্পর্শ করতে পারেননি ইয়ামালরা, স্পেন হারাতে পারেনি পতুর্গালকে। তবে কাছাকাছি সময়েই এক স্প্যানিশ রূপকথা লিখেছেন প্যারিসের টেনিস কোর্টে। ফ্রেঞ্চ ওপেনের ফাইনালে ইতালির ইয়ানিক সিনারকে ৪–৬, ৬–৭ (৪–৭), ৬–৪, ৭–৬ (৭–৩), ৭–৬ ( ১০–২) ব্যবধানে হারিয়ে যেন স্পেনেরই জয়োধ্বনি তুলে শিরোপা জিতে নিলেন কার্লোস আলকারাজ।
রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে ৫ ঘণ্টা ২৯ মিনিট ধরে দুজনে লড়লেন শরীরের শেষ শক্তিটুকু দিয়ে। কোর্টের পাশ বদলের বাড়তি সময় আর বিরতি যোগ করলে এই সময়টিতে ক্রিকেটে অন্তত দু-দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ শেষ হয়ে যায়, সেই সময়টুকুতেই টেনিস কোর্টে যেন যুদ্ধে লড়লেন দু’জন।
ইতিহাস বলছে, টেনিসের উন্মুক্ত যুগে এত দীর্ঘতম সময় ধরে কোন ফাইনাল দেখেনি কেউ। তাই রোববারে সিনার আর আলকারাজের ম্যাচটি অনেকেই ‘ব্যাটেল অব ইয়াং জেনারেশন’ বলেও আখ্যায়িত করলেন। আলকারাজ যেন বারবার মনে করিয়ে দিলেন তার স্বদেশী লাল দুর্গের রাজা নাদালকে। যেখানে প্রায় একটি যুগ শাসন করে গেছেন নাদাল। কালতালিয় হলেও একটা অদ্ভুত মিল ছিল এদিন নাদাল আর আলকারাজের মধ্যে। নাদাল তার ক্যারিয়ারের পঞ্চমতম গ্রান্ড স্ল্যাম জিতেছিলেন ২২ বছর ১ মাস ৩ দিনে। ঠিক একই বয়সে একই সময়ে আলকারাজও জিতলেন তার পঞ্চম গ্রান্ড স্ল্যামটি। পার্থক্য শুধু নাদাল জিতেছিলেন উম্বলন্ডন, আলকারাজ ফ্রেঞ্চ ওপেন।
আসলে টেনিসের ‘বিগ থ্রি’ রজার ফেদেরার, রাফায়েল নাদাল আর নোভাক জকোভিচের সময় শেষের পথে। প্রথম দু’জন অবসর নিয়েছেন, জকোভিচ এখনো র্যাকেট নিয়ে ছুটছেন কোর্টে। তবে তারই মধ্যে নতুন প্রজন্মের আগমন হয়েছে সিনার, আলকারাজদের হাত ধরে।
এদিন রোঁলা গারোয় তারুণ্যের সেই দীপ্ততায় মুগ্ধ হয়েছে টেনিসপ্রেমীরা। তেইশের সিনার কিম্বা বাইশের আলকারাজের ফাইনালটি ছিল ‘বিনা যুদ্ধে নাহি দেব সূচ্যগ্র মেদিনী’র মতোই। প্রথম দুই সেট হেরে যাওয়ার পর ভেঙে না পড়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন আলকারাজ। ফিলিপে শঁতিয়ে কোর্টে ইতিহাসের অন্যতম সেরা ফাইনাল উপহার দিলেন।
চতুর্থ সেটে তিনটি চ্যাম্পিয়নশিপ পয়েন্টের সামনে ছিলেন সিনার। একটি পয়েন্ট কাজে লাগাতে পারলেই চ্যাম্পিয়ন। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ওই সেটটি জিতে নেন আলকারাজ। পঞ্চম সেটে আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন সিনার, সুপার টাইব্রেকারেও নিয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু নূন্যতম রক্ষণ দেখাতে পারেননি তিনি।
টেনিসের ইতিহাসে এখনো পর্যন্ত দীর্ঘতম ম্যাচ ১১ ঘণ্টা ৫ মিনিটের। ২০১০ সালের উম্বলন্ডনে যুক্তরাষ্ট্রের জন ইসনার আর ফ্রান্সের নিকোলাস মাহুতের ওই ম্যাচটি শেষ করতে তিন দিন সময় লেগেছিল। কিন্তু ফাইনালে সিনার আর আলকারাজ নতুন রেকর্ড গড়লেন প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার লড়াইয়ের মাধ্যমে।
‘জানি না ম্যাচটি ঐতিহাসিক হয়ে থাকল কিনা, তবে এটা যদি ইতিহাস গড়ে থাকে তাহলে ভীষণ খুশি আমি।’ টানা দ্বিতীয়বার ফ্রেঞ্চ ওপেন জেতার পর এটুকুতেই তৃপ্তি আলকারাজের।