বাসের এসি বন্ধ থাকায় গরমে যাত্রীর মৃত্যুর অভিযোগ
Published: 10th, June 2025 GMT
ঢাকা থেকে দর্শনাগামী একটি এসি বাসে যাত্রাপথেই ওমেদুল ইসলাম মাসুদ (৬০) নামে এক যাত্রীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। যাত্রীদের অভিযোগ বাস সার্ভিসের অব্যবস্থাপনা, এসি নষ্ট ও কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে গরমে এ ঘটনা ঘটেছে।
ঈদের পরদিন রোববার এ ঘটনাটি ঘটেছে। মাসুদের বাড়ি ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের রাঙ্গিয়ারপোতা গ্রামে। নিহতের পরিবারের দাবি দীর্ঘপথ বাসে এসি না চলায় তীব্র গরমে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, ওমেদুল ইসলাম মাসুদ ঢাকার উত্তরা ১১নং সেক্টরের একটি বাসায় স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে বসবাস করতেন। পারিবারিক একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঈদের পরদিন মাজার রোড থেকে ঢাকা-দর্শনাগামী একটি এসি বাসে ওঠেন তিনি। বাসটি যাত্রা শুরু করে সকাল ১০টায়।
পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করে জানান, যাত্রার পর থেকেই মুহূর্তের জন্যও কাজ করেনি বাসের এসি (শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা)। ফলে সৃষ্টি হয় দম বন্ধ হওয়া পরিস্থিতি। পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় পদ্মা নদী পার হওয়ার সময় ফেরিতে ওঠার পর বাসের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গেলে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা তীব্র রোদে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় যাত্রীদের। এই সময়ে বাসের ভেতরে আবদ্ধ অবস্থায় ছিলেন সবাই, যেখানে বাতাস প্রবেশের কোনো সুযোগ ছিল না। ফেরি থেকে নামার পর আবার বাসে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়।
যাত্রীরা জানান, মৃত্যুর আগে বারবার সহায়তা চেয়েছিলেন তিনি, অনুরোধ করেছিলেন এসি চালানোর। কিন্তু বাসটির এসি নষ্ট থাকায় এবং যথাযথ সহায়তা না পাওয়ায় তিনি ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। আনুমানিক বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ঝিনাইদহ-কালীগঞ্জ সড়কের কোনো একটি স্থানে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের ছোট ভাই আসাদুজ্জামান বলেন, গোটা রাস্তায় তীব্র কষ্ট পেয়েছে বাসের যাত্রীরা। আমার বড় ভাই এই গরমে কষ্ট পেয়ে মারা গেল। সবশেষ ঝিনাইদহ শহর পার হওয়ার পর মোবাইলে কথা হয়েছিল ভাইয়ের সঙ্গে। কথা বলতে বলতে তার ফোনের লাইন কেটে যায়। এর কিছুক্ষণ পরেই শুনি ভাই মারা গেছে। পরদিন সোমবার সকালে ভাইয়ের মৃতদেহ দাফন করি। আমি থানায় কোনো অভিযোগ করবো না। শুধু সৃষ্টি কর্তার কাছে ভাইয়ের মৃত্যুর বিচার চাই।
ওই বাসের যাত্রী কাজী মিনহা ইসলাম ফেসবুকে লিখেছেন, ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা, একটি যাত্রা, যার মূল্য ছিল একটি প্রাণ। ঢাকা থেকে ঝিনাইদহ, কালীগঞ্জ পর্যন্ত এসি বাসের টিকিট কেটেছিলাম জনপ্রতি ১৪০০ টাকা দিয়ে-নিরাপদ ও স্বস্তি দায়ক যাত্রার আশায়। কিন্তু যা পেলাম তা ছিল নিছক প্রতারণা, চরম অব্যবস্থাপনা আর এক মর্মান্তিক ট্রাজেডি।
পোস্টের শেষাংশে তিনি লিখেন, এটা শুধু একটা ব্যর্থ যাত্রা নয়-এটা ছিল এক ভয়াবহ বিপর্যয়, যা তৈরি হয়েছে লোভ, অব্যবস্থাপনা আর মানুষের জীবনের প্রতি সম্পূর্ণ উদাসীনতার ফলাফল হিসেবে।
এ বিষয়ে ওই পরিবহনের ম্যানেজার রানা বলেন, শুরুতে বাসের এসিতে কোনো সমস্যা ছিল না। বাসে উঠার পর বা কিছু দূর এগোনোর পর যাত্রীরা অভিযোগ দিলে গাড়ি পরিবর্তন করা যেত। কিন্তু ফেরি পার হওয়ার পরেই গাড়ির পাওয়ার সেকশনে সমস্যার কারণে এসি কাজ করেনি। তখন যাত্রীরা অভিযোগ করেছে। কিন্তু ঈদের পরদিন মিস্ত্রী না পাওয়ার কারণে সেটা ঠিক করা যায়নি। যারা বাসের লোক ছিল তারাও পাওয়ার সেকশন ঠিক করতে পারেনি। আর সময় মেইনটেন করার জন্য ওভাবেই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে বাস রান করে। একজন মারা গেছে এটা দুঃখজনক। অন্যদের কোনো সমস্যা হল না, কিন্তু ওই ব্যক্তিটাই মারা গেল।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঝ ন ইদহ ব যবস থ র পর ব পরদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় গুলিতে ৩ পুলিশ নিহত
যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে গুলিতে অন্তত তিনজন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও দুজন পুলিশ সদস্য।
অঙ্গরাজ্যটির পুলিশ কমিশনার ক্রিস্টোফার প্যারিস বুধবার সংবাদমাধ্যমকে হতাহতের এ তথ্য জানান।
ক্রিস্টোফার প্যারিসের বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বুধবার দুপুরের এ ঘটনায় সন্দেহভাজন বন্দুকধারীও পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। আহত দুই পুলিশ সদস্যের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জশ শাপিরো ফিলাডেলফিয়া থেকে প্রায় ১৮৫ কিলোমিটার বা প্রায় ১১৫ মাইল পশ্চিমে নর্থ কোডোরাস টাউনশিপে ঘটনাস্থলে গেছেন।
কে বা কারা এ গুলিবর্ষণের পেছনে জড়িত, সে সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে পুলিশ কোনো তথ্য দেয়নি।
অ্যাটর্নি জেনারেল পামেলা বন্ডি পুলিশের বিরুদ্ধে সহিংসতাকে ‘আমাদের সমাজের জন্য একটি অভিশাপ’ বলে অভিহিত করেছেন।
পামেলা বন্ডি আরও বলেন, স্থানীয় কর্মকর্তাদের সহায়তার জন্য ফেডারেল এজেন্টরা ঘটনাস্থলে গিয়েছেন।