লক্ষ্য ছিল ২০টি যুদ্ধবিমান, ভূপাতিত করা হয় ৬টি
Published: 11th, June 2025 GMT
গত মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতের পর চলমান উত্তেজনার মধ্যে দুই দেশের মধ্যকার মূল সমস্যাগুলো সমাধানে বিশ্বশক্তিগুলোর হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তান। দেশটির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি সম্প্রতি তাঁর লন্ডন সফরের সময় এ আহ্বান জানান। সেখানে তিনি বেশ কয়েকটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছেন।
বিলাওয়াল একটি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যার উদ্দেশ্য হলো ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাত নিয়ে পাকিস্তানের দৃষ্টিভঙ্গি বিশ্বের সামনে তুলে ধরা এবং নয়াদিল্লির অভিযোগগুলোর মোকাবিলা করা। তাদের এই বৈশ্বিক প্রচারণার অংশ হিসেবে দলটি লন্ডন সফর করছে। প্রতিনিধিদলে আছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি, হিনা রাব্বানি খার এবং খুররম দস্তগীর; সিনেটর শেরি রেহমান, মুসাদিক মালিক, ফয়সাল সুবজুয়ারি এবং বুশরা আঞ্জুম বাট; এ ছাড়া আছেন জ্যেষ্ঠ দূত জলিল আব্বাস জিলানি ও তেহমিনা জানজুয়া।
লন্ডনে পাকিস্তানি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বিলাওয়াল ভুট্টো বলেন, ‘সংঘাতের সময় আমাদেরই পাল্লা ভারী ছিল। এই সুবিধা থাকা সত্ত্বেও আমরা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিলাম এই শর্তে যে, ভবিষ্যতে একটি নিরপেক্ষ স্থানে সব উত্তেজনাপূর্ণ বিষয় নিয়ে আরও আলোচনা হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি হওয়ায় জম্মু ও কাশ্মীর বিরোধ দ্রুত সমাধান হবে কি না, বিলাওয়ালের কাছে সাংবাদিকেরা জানতে চান। বিলাওয়াল বলেন, তিনি আশা করছেন ট্রাম্প বা তাঁর সরকার তাঁদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে। কারণ, সংঘাতের সময় পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা অবস্থান ভারতের চেয়ে ভালো ছিল।
বিলাওয়াল দাবি করেন, পাকিস্তান ভারতের ২০টি জেটকে চিহ্নিত (লক) করেছিল; কিন্তু মাত্র ছয়টি ভূপাতিত করেছে এবং বিশ্বশান্তির জন্য সংযম দেখিয়েছে। তিনি বলেন, পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়লাভ করেছে এবং বিশ্বকে তাদের প্রতিরোধক্ষমতা দেখিয়েছে।
বিলাওয়াল আরও বলেন, ‘আমরা আশা করি যে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে, তা যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যই হোক না কেন, তারা সবাই তাদের ভূমিকা পালন করবে এবং ভারতকে আলোচনার মাধ্যমে আমাদের সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য রাজি করাবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা কাশ্মীরসহ সব বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা চাই। সব সমস্যার সমাধান কাশ্মীর থেকেই শুরু হবে।’
বিলাওয়াল বলেন, ছয়টি ভারতীয় জেট ভূপাতিত করে পাকিস্তান তার শক্তি প্রদর্শন করেছে, এবং এখন শান্তি প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া প্রশ্নে রুল
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ রুল দেন। একই সঙ্গে যেকোনো অপারেটরকে এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব (নিযুক্ত) দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট আইন ও নীতি অনুসারে ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক পাবলিক বিডিং (দরপত্র আহ্বান) নিশ্চিত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
আরও পড়ুননতুন ব্যবস্থাপনায় নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনা শুরু০৭ জুলাই ২০২৫নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ যুব অর্থনীতিবিদ ফোরামের পক্ষে সংগঠনটির সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন রিটটি করেন। রিটে নৌসচিব, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়।
‘নিউমুরিং টার্মিনালে সবই আছে, তবু কেন বিদেশির হাতে যাচ্ছে’ শিরোনামে গত ২৬ এপ্রিল প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এ প্রতিবেদনসহ এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে এনসিটি পরিচালনায় ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহ্বান করার নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।
আগের ধারাবাহিকতায় ৯ জুলাই রিটের ওপর শুনানি শেষ হয়। সেদিন আদালত ২৩ জুলাই আদেশের জন্য দিন রাখেন। ধার্য তারিখে আদালত আদেশের জন্য ৩০ জুলাই দিন রাখেন। এ অনুসারে আজ বিষয়টি আদেশের জন্য আদালতের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
আজ মধ্যাহ্নবিরতির পর আদালত আদেশ দেন। আদালত বলেন, শুধু রুল দেওয়া হলো।
আদেশের সময় রিটের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও আহসানুল করিম এবং আইনজীবী কায়সার কামাল ও আনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মহাদ্দেস-উল-ইসলাম।
পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার নতুন দায়িত্ব নিয়েছে নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেড। টার্মিনালটি পরিচালনার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাইফ পাওয়ারটেকের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ৬ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে এ দায়িত্ব নেয় জাহাজ মেরামতের এ প্রতিষ্ঠান। প্রথমবারের মতো বন্দরে টার্মিনাল পরিচালনায় যুক্ত হলো চিটাগং ড্রাইডক।
চট্টগ্রাম বন্দরের বৃহৎ এই টার্মিনাল নির্মিত হয় ২০০৭ সালে। টার্মিনালটি নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি সংযোজনে বন্দর কর্তৃপক্ষ ধাপে ধাপে মোট ২ হাজার ৭১২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কনটেইনারের সিংহভাগ এই টার্মিনাল দিয়ে পরিবহন হয়।