বিদ্রোহীদের গুলিতে জান্তার যুদ্ধবিমান ভূপাতিত
Published: 11th, June 2025 GMT
মিয়ানমারে জান্তা সরকার ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ বেড়েই চলেছে। গতকাল মঙ্গলবার দেশটির সাগাইং অঞ্চলের পালেতে জান্তা বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)। কান ডাক পুলিশ ফাঁড়ির কাছে বোমা হামলার সময় এ ঘটনা ঘটে। পরে বিমানটি কাছাকাছি একটি গ্রামের বৌদ্ধ মঠে বিধ্বস্ত হয়। ধ্বংসস্তূপ থেকে এক পাইলটের হেলমেট ও খুলি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ইরাবতী।
এদিকে দেশটির উত্তর শান রাজ্যের নওংকিও শহর ঘিরে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। শহরটি বর্তমানে জাতিগত ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির (টিএনএলএ) নিয়ন্ত্রণে থাকলেও জান্তা সেনারা এটি দখলের জন্য সামনে এগিয়ে আসছে। ম্যান্ডালে-লাশিও-মুসে বাণিজ্যপথে অবস্থিত এই শহরটি কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গত বছরের জুলাইয়ে টিএনএলএ শহরটি দখলের পর সেনা সরকার এটি পুনর্দখলের জন্য অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। লড়াই তীব্রতর হওয়ার আশঙ্কায় শহর ও এর আশপাশের এলাকা থেকে পালিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয়রা।
চীনের চাপের মুখে সম্প্রতি দেশটির কুনমিং শহরে বৈঠক করেছে জান্তা সরকার ও টিএনএলএর বিদ্রোহীরা। আগস্টে আবার বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও এরই মধ্যে নতুন করে হামলা জোরদার করেছে জান্তা বাহিনী।
চলমান এ অস্থিরতার মধ্যেই আগামী ডিসেম্বর কিংবা জানুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে জান্তা সরকার। তারা বলছে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ২৬৭টি টাউনশিপে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। মিয়ানমারের প্রবাসী সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’ বলছে, দেশের প্রায় ১৪৪টি টাউনশিপ বর্তমানে প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং সরাসরি সংঘর্ষ চলছে ৭৯টি এলাকায়। তবে এই নির্বাচনে সেনাসমর্থিত ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি ও কয়েকটি ছোট দল ছাড়া বড় কোনো রাজনৈতিক দল অংশ নিচ্ছে না।
এশিয়ার আঞ্চলিক সংস্থা আসিয়ানের বর্তমান সভাপতি মালয়েশিয়া জান্তা সরকারকে নির্বাচন বন্ধ করে সহিংসতা থামানোর আহ্বান জানিয়েছে। তবে চীন, রাশিয়া ও অন্যান্য মিত্র দেশগুলো তার নির্বাচনকে সমর্থন দিচ্ছে বলে দাবি করেছেন মিন অং হ্লাইং।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে অংশ নেবেন খালেদা জিয়া: আবদুল আউয়াল মিন্টু
এ বছরের ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে তাতে অংশ নেবেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আজ বুধবার ফেনীতে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু।
আজ দুপুরে ফেনী শহরের একটি মিলনায়তনে ‘বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পের পুনর্বাসন’ শীর্ষক প্রকল্পের অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথাগুলো বলেন মিন্টু। তিনি বলেন, ‘বিশ্বাস করতে চাই, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হবে। দেশে এখন যে অবস্থা ফেব্রুয়ারি আগেই নির্বাচন হতে পারে। হয়তো জানুয়ারিতেও হয়ে যেতে পারে। কেয়ারটেকার সরকার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটা ডেট পেন্ডিং আছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রবর্তন হলে তার অধীনে ৯০ দিনে নির্বাচন হবে। সে ক্ষেত্রে ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন।’
আবদুল আউয়াল মিন্টু আরও বলেন, দেশে যদি এক যুগ, দুই যুগ ধরে নির্বাচিত সরকার না থাকে, তবে মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জানমালের উন্নয়ন হবে না। একটি দেশের সরকার যদি জনগণের কাছে দায়বদ্ধ না থাকে তাহলে তারা কখনো ভালো কাজ করবে না।
আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘২০০৬ সাল থেকে আমরা নির্বাচন চেয়ে আসছি। ১৯ বছর ধরে আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আন্দোলন–সংগ্রাম করে যাচ্ছি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন লন্ডনে যোগাযোগ করেছেন। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যৌথ বিবৃতি দিয়েছিল। প্রধান উপদেষ্টা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা সেটিতে আস্থা রাখতে চাই। আমরা চাচ্ছি, দ্রুত নির্বাচনটি হোক।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘নির্বাচনে ফেনীর অতীত ইতিহাস সবাই জানে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এখানে বিএনপি জয়লাভ করবে। আমাদের দলের নেত্রীও (খালেদা জিয়া) নির্বাচন করবেন। তিনি এখন সুস্থ আছেন।’
পরে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু ফেনীর মুহুরী-কহুয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পের পুনর্বাসন (১ম পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পের অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন।
ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ওরফে ভিপি জয়নাল, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ রেহানা আক্তার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম, পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান প্রমুখ।