ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল নোবোয়া দেশটির সাতটি প্রদেশ এবং রাজধানী কুইটোতে ‘গুরুতর অভ্যন্তরীণ অস্থিরতার’ কারণে ‘জরুরি অবস্থা’ আরো ৩০ দিনের জন্য বাড়িয়েছেন।

ইকুয়েডর কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে আজ বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়া। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার (১০ জুন) প্রেসিডেন্ট নোবোয়া একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে নিরাপত্তা বাহিনী সংগঠিত অপরাধের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করার পর থেকে চলমান ‘অভ্যন্তরীণ সশস্ত্র সংঘাতের’ মধ্যে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

গুয়াইয়াস, লস রিওস, মানাবি, এল ওরো এবং সান্তা এলেনার উপকূলীয় প্রদেশগুলোর পাশাপাশি আমাজনীয় প্রদেশ ওরেলানা এবং সুকুম্বিওস এবং কুইটোর মেট্রোপলিটন জেলায় এপ্রিল থেকে জরুরি অবস্থা কার্যকর রয়েছে।

‘জরুরি অবস্থার চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো জনশৃঙ্খলা, সামাজিক শান্তি এবং নাগরিকদের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করা’, নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছে।

নোবোয়া জাতীয় প্রতিরক্ষা এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সেইসাথে কৌশলগত গোয়েন্দা সংস্থাকে, সব প্রাসঙ্গিক সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় করে এই ডিক্রি বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট বলেন, “সরকার নাগরিকদের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য স্বাভাবিক সব পদক্ষেপ নিয়েছে, কিন্তু ‘সহিংসতার বৃদ্ধি’ বিবেচনা করে জরুরি অবস্থার মতো অস্বাভাবিক ও অস্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।”

সশস্ত্র বাহিনীর যৌথ কমান্ডের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে নোবোয়া বলেন, “অভ্যন্তরীণ সশস্ত্র সংঘাতে জড়িত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো ‘সহিংসতার তীব্রতা অর্জন করেছে যা জনশৃঙ্খলাকে গুরুতরভাবে ব্যাহত করছে’ এবং উদ্বেগ সৃষ্টি করছে।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, “সহিংসতা ও অপরাধের হার উচ্চ রয়ে গেছে, অপরাধী গোষ্ঠীগুলো নতুন জোট তৈরি করেছে, অনেক অপরাধী গোষ্ঠী তাদের ক্ষমতা বজায় রেখেছে এবং হুমকি তৈরি করছে এবং কিছু গুরুতর অপরাধের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে।” 

প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, “যদিও সামরিক অভিযানের মাধ্যমে এই হুমকিগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখা হচ্ছে এবং এর বিরুদ্ধে লড়াই করা হচ্ছে, তবুও বিভিন্ন নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরিচালিত সংগঠিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর হাতে প্রচুর পরিমাণে মাদক, অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং উচ্চ-ক্ষমতার বিস্ফোরক পাওয়া যাচ্ছে।”

ইকুয়েডরের ৩৬ বছর বয়সি প্রেসিডেন্ট গত বছরের নভেম্বরে দায়িত্বে এসেছেন। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই তিনি অপরাধী গোষ্ঠীগুলোকে ‘নিষ্ক্রিয়’ করার আদেশ দিয়েছেন। তবে বিপুল সামরিক সদস্য মোতায়েন করার পরও সরকারকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হচ্ছে।  

প্রেসিডেন্ট নোবোয়ার মতে, দেশটি এখন যুদ্ধাবস্থায় রয়েছে। তিনি গ্যাংদের কাছে নতি স্বীকার না করার অঙ্গীকার করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সশস ত র অপর ধ অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

সোনারগাঁয়ে টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

পরিবেশ সুরক্ষা ও টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দাবিতে এক জোরালো আহ্বান জানিয়েছে পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটি। বুধবার (১৮ জুন) সকালে উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তার পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, সোনারগাঁ উপজেলা একটি ঐতিহাসিক ও শিল্পসমৃদ্ধ এলাকা।

এখানে রয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় বহু শিল্পপ্রতিষ্ঠান, মিল-ফ্যাক্টরি, হাসপাতাল, শপিংমল, হাটবাজার ও ঘনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকা। অথচ এত কিছুর পরেও নেই একটি নির্দিষ্ট বর্জ্য ফেলার স্থান বা ডাম্পিং জোন।

তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে গৃহস্থালি, বাণিজ্যিক ও হাসপাতালের বর্জ্য যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে, যা সরাসরি প্রভাব ফেলছে আমাদের পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ওপর। ড্রেন ও খালগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে সর্বত্র, বাড়ছে রোগজীবাণুর বিস্তার। এভাবে চলতে থাকলে আগামী প্রজন্মের জন্য আমরা রেখে যাব এক বিষাক্ত সোনারগাঁ।

সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, সোনারগাঁয়ের ১টি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়নের জন্য অবিলম্বে একটি বা একাধিক নির্দিষ্ট স্থান ডাম্পিং জোন হিসেবে নির্ধারণ করতে হবে। পাশাপাশি বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আধুনিক প্রযুক্তি ও জনসচেতনতা বৃদ্ধি কার্যক্রম চালু করার আহ্বান জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সুধীজন, পরিবেশবাদী কর্মী এবং গণমাধ্যমকর্মীরা। বক্তারা বলেন, উন্নয়নের জন্য শিল্প প্রয়োজন, তবে সে উন্নয়ন হতে হবে পরিবেশবান্ধব। প্রয়োজন হলে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে আইনের আওতায় এনে পরিবেশ রক্ষায় বাধ্য করতে হবে।

পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটি তাদের পক্ষ থেকে স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানায়, যেন অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে সোনারগাঁয়ের পরিবেশ রক্ষা ও জনস্বাস্থ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ